‘ঢাকায় সমাবেশ না করে নারায়ণগঞ্জ করেন আর একই সময়ে আমাদের ছাত্রলীগ সমাবেশ করুক। দেখেন কোনটাতে বেশী লোক হয়। আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ তো অনেক পরে আগে ছাত্রলীগের সমান লোক দেখান। অল্প লোকজন নিয়ে আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে উল্টাপাল্টা কথা বলবেন এগুলো আর মেনে নেয়া যায় না।’
বুধবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে শহরের চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ রাইফেলস ক্লাবে শ্রমিক লীগের ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
বক্তব্যের শুরুতে শামীম ওসমান নিজের মোবাইলে থাকা চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশের একটি ভিডিও প্রদর্শন করেন। এবং সেখানে কত লোক হয়েছে সেটা স্থানীয় একজন গণমাধ্যমকর্মীর কাছ থেকে জানতে চান।
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক সাহেব বলছেন ৫ থেকে ৭ হাজার আর আমি বলি ১০ হাজার লোক। চট্রগ্রাম বিভাগের ১৩টি জেলা হতে ১ হাজার করে লোক আসলেও ১৩ হাজার। এই পাঁচ হাজার দশ হাজার লোকের মিছিল করে বলেন মহাসমাবেশ। এটাতো আমাদের ছাত্রলীগই করতে পারে। আমাদের মুন্না (শ্রমিক লীগ নেতা ও নাসিক কাউন্সিলর) তো পনেরো হাজার লোকের মিছিল আনে। এটা হল বড় হাক ডাক। আমিতো ভেবেছিলাম কি জানি হয়ে যাবে আজ বাংলাদেশে। আজ চট্টগ্রামে বিএনপির মহাসমাবেশ ছিল। এত হাকডাক বিভাগীয় মহাসমাবেশ। চট্টগ্রাম তো অনেক বড় বিভাগ। এই হল তাদের অবস্থা। যারা বলেন জনগণকে দিয়ে সরকারের পরিবর্তন ঘটাবেন তারা আজ বুঝবেন সাধারণ মানুষ আপনাদের পক্ষে নেই।
শামীম ওসমান বলেন, ওরা বাংলাদেশে হায়েনার রূপ নিয়েছে। লাঠি রড নিয়ে এমন সব ভাষা ব্যাবহার করা হচ্ছে যেগুলো রাজনীতির ভাষা হতে পারে না। বৃটেনের মত দেশে বিদ্যুৎ খাতে দাম বেড়ে গেছে। সেখানে আমরা এখনও ভাল আছি। জাতির পিতার কন্যা দেশ বাঁচাতে কাজ করছেন। তিনি বলেছেন বিদ্যুৎ অপচয় করবেন না। আল্লাহ শেখ হাসিনার ওপর রহমতের চাঁদর বিছিয়ে রেখেছে। আইএমএফসহ সকলে বলেছে বাংলাদেশ চায়না ও ভারতের চেয়ে ভাল থাকবে।
শামীম ওসমান বলেন, আওয়ামী লীগের সবাই ভাল আমি বলি না, সব জায়গায় ভাল খারাপ আছে। কিন্তু যখন সারা পৃথিবীতে অর্থনৈতিক সংকট তখনতো আমাদের মিছিল করার কথা না। সকলকে একসাথে কাজ করা উচিত। আমরা এ কাজটা করছি না।
শামীম ওসমান আরো বলেছেন, নাসিম ওসমান সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমরা কেউই অনুষ্ঠানের কার্ড পাইনি। কিন্তু এটাকে অন্য রঙ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেহেতু তিন দিনের মাথায় এটা করা হয়েছে তাই অনেকেই কার্ড পায়নি।
এর আগে জাতীয় শ্রমিক লীগের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার ১২ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৩টায় শহরের ২নং রেলগেটস্থ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানাতে পুস্পার্ঘ অর্পণ করেন জেলা ও মহানগর শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীরা। জেলা শ্রমিকলীগের সদস্য সচিব কামাল হোসেন ও মহানগর শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর মো: কামরুল হাছান মুন্নার নেতৃত্বে পালিত হয় এসব কর্মসূচী। এরপর দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন জাতীয় শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন ও দর কষাকষি বিষয়ক সম্পাদক ও বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান।
এরপর রাইফেল ক্লাবে মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও কেক কাটা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি চন্দন শীল।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা শ্রমিকলীগের আহবায়ক আব্দুল কাদির, মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিএম আরমান, শ্রমিকলীগের জেলা কমিটির সাবেক সহসভাপতি ও বন্দর থানার সভাপতি মোজাম্মেল হক, সাধারণ সম্পাদক রাফিয়ান আহমেদ, আলী হোসেন, মোখলেছুর রহমান, মো: শাহআলম, জাহাঙ্গীর আলম, রকিবুল হাছান রিয়ন প্রমুখ।
Discussion about this post