নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া রেলওয়ে স্টেশনের অর্ধ কিলোমিটার এলাকা দখলে রেখেছে মাদক কারবারিরা। চলন্ত ট্রেন থেকে যাত্রীরাও দেখে তাদের মাদক বেচাকেনা। এর প্রতিবাদ করায় হুমকি মুখে পড়েন স্টেশনের মাষ্টার নিজেও।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রেল পথে রাজধানী থেকে নারায়ণগঞ্জ দুরুত্ব ১৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ, চাষাঢ়া, ফতুল্লা, পাগলা সহ সাতটি রেল স্টেশন রয়েছে। প্রতিদিন এ পথে কয়েক হাজার যাত্রী চলাচল করে। তার মধ্যে চাষাঢ়া থেকে ঢাকা গামী যাত্রীর সংখ্যা সব চেয়ে বেশি। নিরাপত্তার জায়গা থেকে সেখানে সব চেয়ে বেশি।
বিষয়টি নিয়ে চাষাঢ়া রেল স্টেশনের মাস্টার খাজা সুজনের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, মাদকবারবারিদের ভয়ে যাত্রীরা স্টেশনে আসতে চায় না। বিশেষ করে নারীরাও নিরাপত্তা হিনতায় ভুগে। আমি এখানে প্রায় তিন বছর। শুরু থেকেই মাদককারবারিতে বিরুদ্ধে অবস্থান নেই। এখানে অইেশ বার হুমকি দেয়া হয়েছে। তাদের ভয়ে টানা তিন সপ্তাহ ট্রেনে না এসে সড়কে পথে এসেছি। কি করবো তাদের সাথে চাকু ছোড়া থাকে। এ কারণে স্টেশনে বসতেও ভয় লাগে। তবে একদিনও স্টেশনে না এসে থাকিনি।
রেল পুলিশের সহযোগিতা নেয়ার প্রসঙ্গ তোলা হলে তিনি বলেন, একবার রেলওয়ের উপপরিদর্শকসহ আরোও এজন সেখানে গিয়ে ছিলেন এগুলো বন্ধ করতে কিন্তু পারেনি। উল্টো তাদের হয়রানি করেছে। ধাক্কা দিয়েছে, শার্টের কলার চেপে ধরেছে। মাদক কারবারিরা সংখ্যা অনেক। দিন দিন তাদের অপরাধের মাত্রা বাড়ছে।
তার আগে এই স্টেশনের দ্বায়িত্বে ছিলেন নাসরিন সুলতানা। তিনি বলেন, প্রতিবাদ করেছি কিন্তু দমন করতে পারিনি। তাই বাধ্য হয়ে স্টেশন থেকে বদলি নিয়ে চলে এসেছি।
গতকাল শনিবার দুপুরে এ স্টেশনের গেলে দেখা যায়, লাইনের পাশে বসে প্রকাশ্যে মাদক সেবন চলছে। শেষ প্রান্তে নির্মানাধীন একটি ফুট ওভার ব্রিজের নীচে একদল যুবক মাদক বিক্রি করছে। পাশ দিয়ে হেঁটে মানুষগুলো মাথা নিচু করে হাটছেন। আগের দিন শুক্রবার বিকেলে দেখা মিলে আরেক চিত্র। স্টেশনে ট্রেন থামার অনেকে দল বেঁেধ যুবকরা ওই ব্রিজের দিকে যাচ্ছে। দূর থেকে মনে হচ্ছে যেন হাঁট বসেছে। কিছুটা সামনে গেলে চোখে পড়ে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রির দৃশ্য। এসময় সেখানে থেকে দ্রæত চলে যেতে বলেন এক নারী পথচারী নয়তো হামলাঢ পড়তে হবে।
স্থানীয়রা জানান, যারা সেখানে মাদক কারবারি করে তাদের সাথে চাকু, ছুড়া সহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্র থাকে। এ কারণে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করে না। প্রতিবাদ করতে গেলে হামলা শিকার হতে হয়। স্থানীয়রা আরও জানান, রেল স্টেশনের মাদক কারবার নিয়ে ইতিমধ্যে সেখানে দুটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। যারা গ্রেপ্তার হয়েছিলো তারা জামিনে বের হয়ে আবার একই কাজ করছে। প্রায় সময় পুলিশ গেলেও তেমন কোন ব্যবস্থা নেন না। এ কারণে পুরো এলাকায় জুরে মাদক বিক্রি চলে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রেল পুলিশের নারায়ণগঞ্জ ফাঁড়ির উপপরির্দশক মোকলেছুর রহমান অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, থানা পুলিশ ছাড়া তাদের দমন করা সম্ভব নয়। কারণ তারা সংখ্যায় অনেক। আমরা অনেকবার থানা পুলিশের সাহায্য নিয়েছি কিন্তু বন্ধ করতে পারিনি। কারণ চারপাশ খোলা মেলা।
সেখানকার মাদক নির্মূলে থানা পুলিশ বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) নাজমুল আলম। তিনি বলেন, আমরা অসংখ্যবার সেখানে অভিযান চালিয়েছি। এখন বিট পুলিশিংয়ের সহযোগিতায় অভিযান চালানো হবে।
Discussion about this post