নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ১০ নেতা-কর্মীকে আটক ককরে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদারতে পাঠিয়েছে সদর থানা পুলিশ । আগামী রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) ১০ আসামীর রিমান্ড শুনানী ধার্য্য করে সকল আসামীদের কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মোহাম্মদ মহসিন।
শুক্রবার ২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আদালতে আসামী পাঠানোর পর এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর মোঃ আসাদুজ্জামান।
এমন ঘটনার বিষয়ে শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু সাংবাদিকদের বলেন, ‘১০ জনকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থল ও এর আশপাশ থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়। তাদের পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। তাদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে।’
আমির খসরু বলেন, ‘এর আগে নিহতের ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। নিহতের ভাই মিলন বাদী হয়ে ওই মামলা দায়ের করেন।’
মামলার অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএনপির মিছিলে ইট-পাটকেলের আঘাতে মিলনের ভাই নিহত হয়েছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মিলনের এক আত্মীয় বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে মিলন তার ভাই শাওনের মরদেহ আনতে গেলে পুলিশ তার স্বাক্ষর নেয়। তাই মামলায় কী লেখা ছিল, সে সেটা জানে না। পুলিশ যা লিখেছে, সে তাতেই স্বাক্ষর দিয়েছে।’
নিহত শাওনের ভাই মিলন বলেন, ‘মামলা হয়েছে। এর বেশী আর কিছু বলতে চাই না ।’
বাদী মামলার বিষয়বস্তু না জানার বিষয়ে এসপি আমির খসরু বলেন, ‘এটা সঠিক না। বাদী সব জানে।’
এই বলে তিনি ফোন রেখে দেন।
আদালতের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী, আবদুস সাত্তার (২২) মজিবুর রহমান (৫২) অঞ্জন কুমার দেবনাথ (৩৬), রাজিব (৩৮), মোঃ জনি (৩৮), বাদল (৩৮), আবুল কালাম ভূইয়া ( (৪৮) , রিমন (২২), ইমন ও সোহান (১৬) পুলিশের কাছে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বিএনপির এই নাশকতার বিষয়ে কোন কোন নেতা কিভাবে এই নানাশকতা চালাতে নির্দেশনার দিয়েছেন তার বিস্তারিত বর্ণনা পুলিশের কাছে দিয়েছেন । তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে ।
বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ১ (পহেলা) সেপ্টেম্বর পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ এনে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় এই মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় দশজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এই মামলায় নারায়ণগঞ্জ চার আসনের সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, মনিরুল ইসলাম রবি, মামুন মাহমুদ, সাখাওয়াত হোসেন খান, আতাউর রহমান মুকুল, আব্দুস সবুর খান সেন্টু, অ্যাড. জাকির হোসেন, অ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, আজহারুল ইসলাম মান্নান, জাহিদ হাসান রোজেল ও মশিউর রহমান রনিসহ ৭১ জনের নাম উল্লেখসহ মোট ৫ হাজার বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
মামলায় অন্যান্যরা হলেন, মো. আ. সাত্তার, মো. মজিবুর রহমান, রঞ্জন কুমার দেবনাথ, রাজিব, মো. জনি (৩৮), মো. বাদল, মো. আবুল কালাম ভূঁইয়া, রিমন, ইমন, মো. সোহান (১৯), সায়েদ আহম্মেদ, মাসুদ রানা, আমিনুল ইসলাম মিঠু, মাকিব মোস্তাকিম শিপলু, সাইফুল ইসলাম বিপব, শরিফ হোসেন মানিক, নয়ন, রুবেল, সোহেল, মন্টু মেম্বার, জুয়েল আরমান, মুরাদ হাসান, স্বপন চৌধুরী, একরামুল কবির মামুন, আনিছ, জামাল কাজী, মো. সালু ওরফে বেল্ট সালু, ইকবাল ওরফে খোপা ইকবাল, রতন, সোহাগ, জাহাঙ্গীর, আরিফ, ওমর আলী, রাজ্জাক (৪৫), সালাহউদ্দিন, রাজু আহম্মেদ রমজান, মোস্তফা কামাল, জুয়েল রানা, আকবর, আবুল হোসেন, হাসান আহম্মেদ, মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, রফিকুল ইসলাম, রাসেল ওরফে ভাগিনা রাসেল, মাহমুদ হোসেন কাজল, কানা আক্তার, আবুল সর্দ্দার, সাজু, লিংরাজ খান, লিংকন খান, সনেট, জিয়া উদ্দিন জিয়া, রয়েল, মো. ফয়জুল্লাহ সজল, মো. রশিদ, মুছা, ফারুক, রুবেল ও শফিকুল ।
Discussion about this post