নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ঘটনায় পর লাশ ময়নাতদন্ত শেষে র্যাব, ডিবি ও থানা পুলিশের একাধিক টিম অবাধে গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্য দিয়ে সয়ায়তা করেন । অপরদিকে তামীমের মতো দুর্ধর্ষ জংগী নেতার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে তামীমসহ তিনজনের লাশ উদ্ধারের পর তৎকালীন পুলিশের আইজিপি নিজে উপস্থিত থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের সকল তথ্য দিয়ে সহায়তা করেন ।
আর (১ পহেলা সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবার বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে গোলযোগের ঘটনায় ওয়ার্কশপ মিস্ত্রী মারা যাওয়ার গষমাধ্যমকর্মীদের উপর কঠোর বিধি নিষেধ জারি করে পুলিশ ।
জেনারেল হাসপাতালে সামনে পুলিশের একজন সদস্য বলেন আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেয়া হয় আমাদের সে মতেই কাজ করতে হয় । আমরা উর্ধতন কর্মকর্তা দের আদেশ পালনে বাধ্য।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শেখ ফরহাদ বলেন, লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বিকেলেই । লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। পুলিশের নির্দেশ পেলে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
কী কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এর বেশি তিনি বলতে রাজি হননি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ময়নাতদন্তে শাওনের দেহে কোনো বুলেট পাওয়া যায়নি। তবে ক্ষত পাওয়া গেছে। সেটি বুলেটেরও হতে পারে, অন্য কিছুরও হতে পারে। বুকের বাম পাশে ছোট ছিদ্র আর পিছন দিকে বড় ছিদ্র। এতে প্রতিয়মান হয় যে শাওনের বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে পিছনের পিঠ দিয়ে তা বেড়িয়ে গেছে ।
নিহত ব্যক্তির চাচা ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, লাশ নবীনগর গ্রামে দাফন করা হবে। সেই লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ছেলের শোকে শাওনের মা পাগলপ্রায়। তিনি এখন কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। স্বজনেরা তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মামলা সংক্রান্ত বিষয়টি নিহতে ব্যক্তির পরিবারসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নিহত ব্যক্তির বড় ভাই ফরহাদ বলেন, ‘ওর কপালে ছিল এইভাবে মৃত্যু হবে, হয়েছে। আমরা কাকে দোষ দেব ? আমাদের কাছে শুধু লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হলে নিয়ে দাফন করব।’
বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শাওন প্রধান। এ ঘটনায় পথচারীসহ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ২৬ জন। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটায় আহত হয়েছেন পুলিশসহ অর্ধশতাধিক মানুষ।
বৃগস্পতিবার বিকেলে শাওনের লাশের ময়নাতদন্তের পর রাত ১২ ০৫ মিনিট পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সদর থানার দারোগা রুবেলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের মর্গের সামনে এবং হাসপাতাল গেইটে অবস্থান নেয়৷
এরপর একে একে পুলিশের তিনটি গাড়িতে সাদা পোষাক, ডিবি পুলিশের পোশাক এবং পুলিশের পোষাকে একদল পুলিশ হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেয় ৷ অপর একটি পুলিশের গাড়িতে আসেন নিহতের স্বজনরা । এ সময় নিহত শাওনের কফিনের ছবি তুলতে বাধা দেয় পুলিশ। কোন অবস্থাতেই হাসপাতাল থেকে ছবি নেয়া যাবে না বলে জানান ৷
ডিবি পুলিশের দারোগা রুহুল জানান, উপরের নির্দেশনা রয়েছে আপনারা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহেবের সাথে কথা বলতে পারেন।
এমন বাধার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দেখতেছি বলে জানিয়ে মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন।
এরপর মধ্যরাত ১২ টা ১০ মিনিটে হাসপাতালের মর্গে থেকেই ভাইসহ স্বজনদের নিয়ে এম্বুলেন্সযোগে পুলিশের কড়া প্রহরায় নিহত শাওনের লাশ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য রওয়াবা দেয়।
মধ্যরাত ১২টা ২২ মিনিটের সময় নারায়ণগঞ্জ সদর মড়েল থানার বন্ধ করে রাখা গেইটে দাড়িয়ে ছাত্র নামধারী দুই-তিন যুবক দায়িত্বরত কন্সষ্টেবল মাইনউদ্দিন কে বলেন, আমাদের নেতা পাঠাইছে । ওসি সাহেব জানেন আমাদের আসার কথা ।’
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত ১ টা ২৪ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এর ফতুল্লা প্রতিনিধি জানায়, এই মাত্র শাওনের লাশ দাফন করা হয়েছে ।
Discussion about this post