দীর্ঘদিন পর আবার নারায়ণগঞ্জে ভিন্নবেশধারী মাদক বিক্রেতা মোল্লা মামুন কে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিভিন্ন পাড়া মহল্লাতে ভিন্ন ভিন্ন বেশ ধরে তারা মাদক বিক্রি করে যাচ্ছিলো দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী সময় যাবৎ । নিজেকে আওয়ামীলীগ নেতা আবার অঙ্গ সংগঠনের নেতাসহ কখনো সাংবাদিক, কখনো র্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে নির্বিঘ্নে সকল ধরণের পাইকারী ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবা ও গাজার ব্যবসা চালিয়ে আসছিলো এই মোল্রা মামুন।
পুলিশী তেমন সাড়াসী অভিযান না থাকায় এবং আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধু সদস্যদের নিয়মিত মাসোয়ারা প্রদান করায় মোল্লা মামুন দীর্ঘ দিন ছিলো ধরা ছোয়ার বাইরে।
২০১৩ সালের ২০ জানুয়ারী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে ট্রাক ভর্তি ৫শ বোতল ফেনসিডিলসহ মোল্লা মামুন ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে তৎকালীন জেলা ডিবি’র এসআই মিজানুর রহমান। ওই সময় শুধু মাত্র সাংবাদিকরা যাতে ছবি তুলতে না পারে সেই জন্য ডিবি পুলিশের তৎকালীন ওসিকে ৫ লাখ টাকা দিয়েছেলো মোল্রা মামুনের স্ত্রী। শেষ রক্ষা হয় নাই মোল্রা মামুনের। সাংবাদিকেদের চাপের মুখে ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে মাদক সম্রাট মোল্লা মামুনের বিরুদ্ধে মাদক মামলা দিয়ে ছবি তোলার ব্যবস্থা করে তৎকালীন পুলিশের এসপি ।
সেই মোল্লা মামুন অসংখ্যবার গ্রেফতার হলেও ধামাচাপাই থেকে যায় তার অপকর্ম।
এবার ফতুল্লার তথা পুরো নগরীর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী কথিত শ্রমিক লীগ নেতা মাহাবুবুর রহমান মামুন ওরফে মোল্লা মামুন কে এক সহযোগি সহ গ্রেফতার করেছে নারায়নগঞ্জ জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
গ্রেফতারকৃতরা হলো মাহাবুবুর রহমান মামুন ওরফে মোল্লা মামুন(৩৫) ফতুল্লা থানার সস্তাপুরের আব্দুল মতিনের পুত্র ও একই থানার তল্লা এলাকার তৈমুছের পুত্র মোঃ শিমুল (২৫)।
রোববার(১৪ আগস্ট) রাত ৮ টায় তাদের কে ফতুল্লার তল্লা চেয়ারম্যান বাড়ী রোডস্থ শরাফত আলীর চা চায়ের দোকানের সামনে রাস্তা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের নিকট থেকে দুই বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
নারায়নগঞ্জ জেলা “খ”অঞ্চলের মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোহাম্মদ ফজলুল হক জানান, ক্রেতা বেশে তারা প্রথমে দুই বোতল ফেনসিডিল ক্রয় করার জন্য তাদের কে অর্ডার দিলে তারা চাহিদানুযায়ী ফেনসিডিল নিয়ে আসে। তখন তারা মোল্লা মামুন ও শিমুল কে গ্রেফতার করে। তাদের নিকট সংবাদ ছিলো এই দুই বিক্রেতার নিকট মাদকের বড় ধরনের চালান মজুদ রয়েছে। সেই মজুদ করা মাদকের সন্ধান দিতে তারা কালক্ষেপন করায় এবং গ্রেফতার করার সংবাদ জানাজানি হয়ে গেলে সহোযোগিরা দ্রুত রক্ষিত মাদকের চালান অনত্র সরিয়ে ফেলে। গ্রেফতারকৃত মোল্লা মামুন একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী এবং মাদকের বড় পাইকার বলে তিনি জানান।
সস্তাপুর এলাকাবাসী জানান, মোল্লা মামুন আলীগঞ্জের শ্রমিকলীগ নেতা পলাশের ছত্রছায়ায় থেকে ফেনসিডিল, ইয়াবা ও গাজার পাইকারী ব্যবসা করে আসছে। মূলত চানমারী বস্তির গাজার বিশাল চালান এই মোল্রা মামুনের নিয়ন্ত্রণে ছিলো । চানমারী এলাকা ছাড়াও মোল্লা মামুন সস্তাপুর, কুত্আুইল, কোতালেরবাগ, লামাপাড়া, রামারবাগ, নয়ামাটি, ইসদাইর, মাসদাইর, তল্লা, খানপুর, হাজীগঞ্জ এলাকায় প্রকাশ্যে ইয়াবা ব্যবসার জন্য শতাধিক সেলসম্যান কাজ করে যাচ্ছে । তাদের মাদকের ছোবলে প্রতিটি এলাকার উঠতি বয়সের ছেলে থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের ছেলে মেয়েরা ইয়াবা ও ফেনসিডিলে আশক্ত হয়েছে পড়েছে। সস্তাপুর কুতুবআইলে মোল্লা মামুনের অন্তত ২০ থেকে ২৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। যারা প্রত্যেকেই মোল্লা মামুনের মাধ্যমে ইয়াবা ব্যবসায় উৎসাহীত হয়ে আসক্ত হয়ে পড়েছে ।
ফতুল্লার অনেকেই জানান, মোল্লা মামুন আলীগঞ্জের শ্রমিকলীগ নেতা পলাশের ছত্রছায়ায় থেকে ফেনসিডিল ও ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে। মোল্লা মামুন সস্তাপুর, কুত্আইল, কোতালেরবাগ, লামাপাড়া, রামারবাগ, নয়ামাটি, ইসদাইর, মাসদাইর, তল্লা, খানপুর, হাজীগঞ্জ এলাকায় প্রকাশ্যে ইয়াবা ব্যবসা করছে। তাদের মাদকের ছোবলে প্রতিটি এলাকার উঠতি বয়সের ছেলে থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের ছেলে মেয়েরা ইয়াবা ও ফেনসিডিলে আশক্ত হয়েছে পড়েছে।
Discussion about this post