সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বিহারিদের সংঘর্ষের ঘটনায় ৪৯ জনের নামে এবং অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তন্ময় মন্ডল বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার আদমজী জেনেভা ক্যাম্প এলাকার মসজিদে জুমার নামাজের আগে বক্তব্য দেওয়ায় এক পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় হওয়া মামলায় রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ৩২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর প্রতিবাদে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েকশ নারী-পুরুষ। এক পর্যায়ে তারা সড়কের ওপর কাঠের টেবিল, চৌকি ফেলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-ডেমরা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। তাদের সড়ক থেকে সরে যেতে আহ্বান জানায় পুলিশ। তবে তারা সরে না গিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ ও র্যাব একসঙ্গে লাঠিপেটা করে এবং শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সংঘর্ষে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ আমির খসরু, পুলিশ সদস্য রিপন ও ইকরাম, বিহারী আব্দুল হামিদ, মো. রনিসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান বলেন, শুক্রবার পুলিশের ওপর হামলায় ঘটনায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় আসামিদের গ্রেফতারের পর সোমবার ক্যাম্পের বাসিন্দারা পুলিশের কাজে বাধা দেয় এবং হামলা করে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে আরও একটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ১০ জুন দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই সৈয়দ আজিজুল হক আদমজী বিহারী কলোনি এলাকার একটি মসজিদে হামলার শিকার হোন। এসময় তাকে রক্ষা করতে গিয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন এবং সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন রবিন আহত হোন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে ৫০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১২০/১২৫ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করে। রবিবার ১২ জুন রাতে পুলিশ আদমজী বিহারি কলোনিতে অভিযান চালিয়ে ৩২ জনকে আটক করে। পুলিশের এই গ্রেফতারের প্রতিবাদে সোমবার ১৩ জুন সকাল থেকে আদমজী-চাষারা সড়ক অবরোধ করে রাখে বিহারি কলোনির বাসিন্দারা। এ সড়কের আদমজী কদমতলী পুল এলাকায় রাস্তায় বেরিকেট দিয়ে অবস্থান নিয়ে গ্রেফতারকৃতদের ছেড়ে দিতে স্লোগান দিতে থাকে। সকাল ৯টায় এসে উপস্থিত হয় নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপরাধ মো. আমির খসরু। তিনি বিক্ষোভকারিদের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তাদের মধ্য থেকে অতর্কীতভাবে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এসময় পুলিশ বিক্ষোভকারিদের ছত্রভংগ করতে প্রায় অর্ধশতাধিক টিয়ারশেল ও কয়েকশ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষন করে। এরপরে প্রায় ঘন্টাব্যাপী পুলিশ ও বিহারিদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
Discussion about this post