আওয়ামী লীগের জাতীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু বলেছেন, আজকে আমার ওই বন্ধুদের বলি, আপনারা অনেক কথা বলেন, বিপ্লবের ঘোষণা দেন, অনেক জ্বালাময়ী বক্তব্য দেন তাহলে আজকে নিরব কেন। কোন সাহসে তারা নারায়ণগঞ্জে এভাবে আমার নেত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলে। আমার সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কথা বলে। বলে কি ? আমি রাষ্ট্রপতি মানি না। আমি প্রধানমন্ত্রী মানি না। কত বড় সহস। এ সাহসের যোগান দেয় কারা। আজকে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলবেন, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির কথা বলবেন, ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির কথা বলবেন, লম্বা লম্বা বুলি আউড়াবেন আর রাতের অন্ধকারে হেফাজতকে প্রেট্রোনাইজ করবে, মৌলবাদী শক্তিকে পেট্রোনাইজ করবেন এ স্ট্যান্টবাজীর রাজনীতি নারায়ণগঞ্জের মানুষ সহ্য করবে না। নারায়ণগঞ্জের মানুষ বিবেচনা করবেন তাদের চিহ্নিত করতে হবে।
২৬ মার্চ শুক্রবার দুপুরে শহরের ২নং বাবুরাইল এলাকায় শেখ রাসেল নগর পার্কের পাশে স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মরণে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।’
‘স্টার ক্লাউড’ সামাজিক ও ক্রীড়া উন্নয়নমূলক সংগঠন এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নারায়ণগঞ্জের সহযোগিতায় ওই চিকিৎসা সেবার আয়োজন করা হয়।
দিপু বলেন, স্বাধীনতার মাসে, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শত বার্ষিকীর মাসে, শতবর্ষে আজকে যে নারায়ণগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে, ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে, স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে, ৬ দফার নেতৃত্ব দিয়েছে, সেই নারায়ণগঞ্জ থেকে আজকে উগ্রবাদী শক্তি মোদির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে চায়। আজকে মাওলানা আউয়াল, পিচ্চি হুজুর সাহস কোথায় থেকে পায়? আমরা তাদেরকে পিছন থেকে সাহস দেই। এ বিষয়টা জনগনের কাছে পরিস্কার হতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা দাবি করি নারায়ণগঞ্জের মানুষ অসাম্প্রদায়িক মানুষ। নারায়ণগঞ্জের মানুষ ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে। আজকে হেফাজত আমাদের যে ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনা, আমাদের যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা সেই চেতনায় আঘাত করতে চায়। নারায়ণগঞ্জ থেকে সে আঘাতের নেতৃত্ব দেয়। এ যে ঘটনাটি ঘটলো সেটা আমাদের জন্য লজ্জার। আজকে আওয়াল, পিচ্চি হুজুর নোয়াখালী, কুমিল্লায় পেলনা নারায়ণগঞ্জে সাহসটা পেলো কোথায় থেকে? এটার পিছনে কারা কাজ করে।
দিপু বলেন, এ স্বাধীনতা যুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের মানুষ, নারায়ণগঞ্জে বীর বাঙালী নেতৃত্ব দিয়েছে, মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। আপনারা জানেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে নারায়ণগঞ্জের একটি নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। এখানে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এখান থেকে বঙ্গবন্ধু ৬ দফা ঘোষণা করেছে এবং পশ্চিমাহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রামের ডাক দিয়েছে। বার বার বঙ্গবন্ধু নারায়ণগঞ্জে এসেছে, বার বার এ নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে। সেই দিক থেকে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী এ স্বাধীনতার গর্ব করতে পারি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এ নারায়ণগঞ্জ স্বাধীনতার নেতৃত্ব দিয়েছে কিন্তু আজকে স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীতে আমাদের পার্শ্বপ্রতিম দেশ যারা আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছি, আমাদের এক কোটি মানুষকে খাবার দিয়েছিল, চিকিৎসা সেবা দিয়েছিল। সেই বন্ধুপ্রতিম দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন বাংলাদেশে আসবে সেই ঘটনা নিয়ে ঢাকায় উগ্রসাম্প্রদায়িক শক্তি একটা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি করেছে। আর সব থেকে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, অনেকে আমরা বড় বড় কথা বলি, অনেক সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে কথা বলি, অনেকে রাজনৈতিক অপশক্তি, মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে কথা বলি কিন্তু দুঃখের বিষয় ঢাকায় যে ঘটনাটি ঘটলে তার উস্কানিদাতা নারায়ণগঞ্জে। এটার উস্কানিদাতা নারায়ণগঞ্জে এটা আমাদের সব চেয়ে দুঃখের বিষয়।
Discussion about this post