নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
শহরের টানবাজারের ডাচ বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তার স্ত্রীর গৃহবধু বৃষ্টি চৌধুরীর হত্যাকান্ডের ঘটনায় দ্রুত বিচারের মাধ্যমে ঘাতক স্বামী সুদীপ রায়, শ্বশুড় সুদী ব্যবসায়ী সুভাষ রায়, শ্বাশুড়ী শিপ্রা রায় ও ননদ ডেইজী সাহার ফাসীর দাবীতে মানববন্ধন করছে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা পরিষদ ও নারায়ণগঞ্জে অবস্থানরত কুমিল্লার ছালিয়াকান্দিবাসী ।
বুধবার ২৪ এপ্রিল বিকেল ৫টা থেকে চলমান মানববন্ধনে মহিলা পরিষদ ও ছলিয়াকান্দির অনেকেই বৃষ্টি চৌধুরীর হত্যাকান্ডে স্বামী, শ্বশুড়, শ্বশুড়ী ও ননদকে গ্রেফতার করে তাদের আইনের আওতায় আনার জোড় দাবী তুলে বক্তারার । একই সাথে সদর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আল আজাদের ভুমিকার কঠোর সমালোচান করে বক্তব্য রাখেন বক্তারা ।
জানা যায়, সন্তানের সুখের কথা চিন্তা করে বিয়ের সময় ১৫ লাখ টাকা যৌতুক ও ২০ ভরি স্বর্ণলংকার দিয়ে বিয়ে দেয়ার মাত্র দুই বছরের মধ্যে হত্যাকান্ডের শিকার হয় পরিবারের একমাত্র কন্যা বৃষ্টি চৌধুরীর ।
শুক্রবার ১২ এপ্রিল দুপুর নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার সাহাপাড়ার গিয়াস উদ্দিনের বাড়ীর ৭ম তলা থেকে অচেতন অবস্থায় বৃষ্টি চৌধুরীকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আনা হলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক নূরুজ্জামান মৃত ঘোষনা করে সদর থানা পুলিশকে খবর দেয় । ডাঃ নূরুজ্জামান জানান, মৃত বৃষ্টি চৌধুরীর শরীরে আঘাতের চিহ্নসহ গলায় দাগ পাওয়া গেছে । এতেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায় তার মৃত্যু স্বাভাবিক না ।
১২ এপ্রিল রাতে নিহত গৃহবধু বৃষ্টি চৌধুরীর ভাই মিঠুন চৌধুরীসহ নিকাটাত্মীয় অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, বৃষ্টিকে হত্যা করেছে স্বামী সুদীপ, শ্বশুড় সুভাষ, ননদ ডেইজীসহ পরিবারের লোকজন । কারণ বিয়ের সময় ১৫ লাখ টাকা যৌতুক নেয়ার পর আরো যৌতুক দাবী করে আসছিলো সুদী ব্যবসায়ী সুভাষ, তার ছেলে সুদীপ ও তার বোন ডেইজী । ডেইজীর স্বামী বিশাল ব্যবসায় লিটন সাহার ক্ষমতার প্রভাবে এমনটি করতো বলেও অভিযোগ করে নিহতের স্বজনরা । এক বছর আগে বৃষ্টির সন্তান শুভদ্বীপ জন্মের মাত্র ৮ দিনের মধ্যে বৃষ্টিকে মারধর করে বাবার বাড়ী কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার ছালিয়া কান্দি পাঠিয়ে দেয় । এমন দ্বন্ধের কারণে বিয়ের মাত্র দুই বছরের মধ্যে বহুবার সালিশও হয়েছে। গত কয়েকদিন যাবৎ যৌতুকের কারণে মারধর করতো বলেও বৃষ্টির বাবা কুমিল্লার মুদি ব্যবসায়ী শ্যামল চৌধুরী জানতে পারেন । বিষয়টি কয়েকবার শ্যামল চৌধুরীর বোন জামাই নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সমালোচিত সূতা ব্যবসায়ী প্রবীর সাহাকে জানায় ।
নিহত বৃস্টি চৌধুরীর পরিবারের জোড়ালো অভিযোগের প্রেক্ষিতে সদর থানার উপ পরিদর্শক আলাউদ্দিন আল আজাদ নিহতের লাশের সুরৎহাল বিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠায় । একই সাথে প্রবীর সাহার জোড়ালো তদ্বিরে নিহতের স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তা সুদীপ রায় ও তার বাবা সুদ ব্যবসায়ী সূভাষ চন্দ্র রায়কে আটক করে ।
১২ এপ্রিল রাত ১০টায় গৃহবধু বৃষ্টির হত্যার পেছনের মুল হোতা ননদ ডেইজি সাহাকে গ্রেফতার করে দারোগা আলাউদ্দিন আল আজাদ । গ্রেফতারের পর থানার পিছনের গেইট দিয়ে মধ্যরাতে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী ডেইজির মুক্তি দিয়ে দারোগা আলাউদ্দিন নিজেই স্বামীর ব্রাক্ষণবাড়িয়ার জেলার রড় সিমেন্ট ব্যবসায়ী লিটন সাহার গাড়ীতে তুলে দিয়ে আসেন ।
এজাহারভূক্ত আসামী ডেইজি থানা থেকে ছাড়া পেয়েই স্বামীর সহায়তায় দুই সন্তানকে সাথে নিয়ে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের আগরতলায় পালিয়ে যায় ।
মানববন্ধনে উপস্থিত সকলেই বৃষ্টি চৌধুরীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছে ।
Discussion about this post