স্টাফ রিপোর্টার
আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্স পরিচয় বহন করে গায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জ্যাকেট জড়িয়ে পায়ে পুলিশের কেডস,হাতে ইলেক্ট্রিক স্টিক ও কোমরে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ফতুল্লাঞ্চল দাবড়িয়ে বেড়ানো মনির হোসেন ওরফে সোর্স মনির কে নিয়ে ফতুল্লাবাসীর মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার জালকুড়ি এলাকয় বসবাস করলে ও ফতুল্লার শিল্পাঞ্চলসহ দাপা ইদ্রাকপুর এলাকায় তার অবাধ বিচরন করছে এই মনির। সোর্স মনিরের নেই কোনো নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, নেই কোনো চাকুরী তবু ও তার কোমরে প্রায় সময় দেখা মিলে আগ্নেয়াস্ত্র এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়বাসীর।
সোর্স মনিরের আগ্নেয়াস্ত্রের উৎস ও তার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে তদন্ত স্বাপেক্ষে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা পুলিশ সুপার ও র্যাব-১১’র হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী ।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালী জেলার ধুমকি থানার মৃত ফজলুর রহমানের পুত্র মনির নিজেকে র্যাবের সোর্স পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে । মনির ওরুফে সোর্স মনির বিগত চার দলীয় জোট সরকারের সময়ে ফতুল্লায় আসে। এরপর থেকে তিনি নিজেতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর কাছের লোক পরিচয় দিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরসহ স্থানীয় মহলে প্রভাব বিস্তার করেন।
১/১১ সময়ে সোর্স মনির ক্রসফায়ারে নিহত রকমতের সেকেন্ড ইন কমান্ড ফয়েজের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। জামিনে বের হয়ে এসে বেশ কিছু দিন আত্মগোপনে থাকে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভোলপাল্টে নিজেকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা আমীর হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে আবার এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে নানা অপ তৎপরতায় লিপ্ত হয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
এই সোর্স মনিরের কোমড়ে প্রায় সময়ই একটি পিস্তল দেখা যায় এমন অভিযোগ স্থানীয়দের । অস্ত্রের ব্যপারে স্থানীয়রা জানতে চাইলে সোর্স মনির জানান, চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী তাকে এই অস্ত্রের লাইসেন্স করে দিয়েছিলেন। কারো কাছে ভিন্ন কথাও বলে থাকেন। কোমড়ে পিস্তল রেখে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে তিনি নিজেকে প্রশাসনের লোক বলেও দাবি করে থাকেন বলেও অভিযোগ স্থানীয় মহলের।
গত ২ মাস আগে একজন সাংবাদিক ফতুল্লা রেললাইন বটতলা এলাকায় কোমরে পিস্তাল ঝুলানো অবস্থায় সোর্স মনিরের ছবি তুলতে গেলে মনির দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে তার কোমরে আর পিস্তল দেখেনি স্থানীয়রা।
এখানেই শেষ নয়, সোর্স মনির র্যাব, পুলিশ কিংবা ডিবি খুব কাছের মানুষ দাবি করে স্থানীয় মহলে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। গভীর রাতে তাকে প্রায় ফতুল্লা থানা কম্পাউন্ডের ভেতরে বিভিন্ন দারোগার সাথে খোসগল্পে মেতে থাকতে। সোর্স মনিরের বিরুদ্ধে সাধারন মানুষকে হয়রানী করারও অভিযোগ রয়েছে। ডিবি পুলিশের একটি সূত্র জানায়, প্রায় ৩ বছর আগে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোর্স মনিরকে ধরে নিয়ে বেদম প্রহার করা হয়েছিলো। এরপর থেকে তাকে আর ডিবি কার্যালয়ের সামনে দেখা যায়নি। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে আবারো সোর্স মনিরকে ডিবি কার্যালয়ের আশপাশে ঘোরাফিরা করতে দেখা যায় ।
Discussion about this post