অসংখ্য অপরাধের হোতা ফতুল্লা থানার ক্রাইমজোন খ্যাত কাশিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা আনিসুর রহমান শ্যামল ওরফে চাচা শ্যামল ওরফে দর্জী শ্যামলকে গ্রেফতারের পর হুমরি খেয়ে থানায় অবস্থান নেয় থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম সাইফ উল্লাহ বাদলের ভাইসহ আওয়ামীলীগের কথিত নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ।
ফতুল্লা থানা যেন আওয়ামীলীগের কার্যালয় । থানায় অবস্থানের পাশাপাশি খোদ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষের সামনেই পুলিশের উপস্থিতিতে ধর্ষণ মামলার আসামী আনিসুর রহমান শ্যামলের ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের উপর হামলা করে এম সাইফ উল্লাহ বাদলের ঘনিষ্ট জনেরা । পুলিশকে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে এবং বাদীকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা করে জামাই আদারে । নানা অপরাদের হোতা শ্যমলের গ্রেফতারের ছবি তুলতে গেলে কয়েকজন অসাধু পুলিশের সাথে যুক্তি করেই এমন হামলার ঘটনা ঘটনায় বাদল – শ্যামল চক্রের হোতারা ।
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
ধর্ষণ ঘটনায় গ্রেপ্তার কাশিপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আনিসুর রহমান ওরফে চাচা শ্যামল ওরুফে দর্জি শ্যামলের মুখ চাদরে ঢেকে থানা থেকে আদালতে নিচ্ছেলেন পুলিশ। এ সময় সাংবাদিকরা ছবি উঠাতে চাইলে ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করে ফতুল্লার থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম সাইফুল্রাহ বাদলের আপন ভাইসহ শ্যামলের বিশাল গুন্ডাবাহিনী ।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানার ভিতরে এ ঘটনা ঘটে। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে থানা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে সাংবাদিকদের চাপের মুখে এক যুবককে আটক করা হয় ও আসামীর ছবি উঠাতে দেন পুলিশ।
আটককৃত যুবকের নাম লিটন। তিনি ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল্লাহ বাদলের অনুসারী।
প্রতক্ষদর্শীরা জানান, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল এর ভাই খোকন, চুন্নু, সিদ্দিক, জাহাঙ্গীর ও আক্কার নেতৃত্বে আরো ১৫-২০ জন যুবক থানার ভিতরেই সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায়। চেষ্টা করা হয় ক্যামেরার ভেঙ্গে ফেলার। পুলিশ ইন্সপেক্টর (অপারেশন) সাখাওয়াত হোসেন এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় সাইফুল্লাহ বাদলের অনুসারী লিটন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাকে আটক করা হয়। পরে ইন্সপেক্টর সাখাওয়াতের সহযোগীতায় ছবি তুলেন সাংবাদিকরা।
এদিকে, দুপুর সোয়া ১টার দিকে ফতুল্লা থানা থেকে জামাই আদরে এসি মাইক্রোবাসে করে আদালতে নেয়া হয়। মুখশ ও চাদরের আড়ালে আসামীকে আদালতের কাষ্টরীতে নেওয়া হয়। ওইখানেও তার অনুসারী নেতাকর্মীরা আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন।
ধর্ষণ ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামীকে পুলিশের সহযোগীতায় মুখ ঢেকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ফতুল্লা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, মুখটি পুলিশ ঢাকেনি, আসামীই ঢেকে রেখেছিলেন। আমি থানায় নেই। আমি শুনেছি, সাংবাদিকদের সাথে এ সময় বহিরাগত কিছু লোক জনের ধস্তাধস্তি হয়েছে। বিষয়টি ভালো ভাবে যেনে আইনী প্রদক্ষেপ নিবো।
এর আগে, ধর্ষণ ঘটনার বিচার করে ধর্ষককে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে কাশিপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আনিসুর রহমান ওরুফে দর্জি শ্যামলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
অভিযোগে অনুযায়ী, ১৪ বছর বয়সের কিশোরী বাড়ির কাছে আরেকটি বাড়িতে আরবি পড়েন। পড়তে আসা যাওয়ার পথে প্রায়ই খিলমার্কেট এলাকার মৃত মনির হোসেনের ছেলে তুর্য (১৯) পথরোধ করে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এবিষয়ে কিশোরীর বাবা মা কাশিপুর ইউনিয়ণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আনিসুর রহমান শ্যামলের কাছে বখাটে তুর্যের বিচার দাবি করেন। এতে শ্যামল উল্টো কিশোরীর বাবা-মাকে গালি গালাজ করে ভয়ভীতি দেখান ।
এঘটনার কয়েক দিন পর ১৯ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় আরবি পড়তে যাওয়ার পথে কিশোরীকে রাস্তা থেকে ধরে তুর্য তাদের ফ্ল্যাট বাসায় নিয়ে যায়। এরপর তুর্য ও কিশোরীকে ফ্ল্যাটে রেখে বাইরে থেকে দরজায় তালা দিয়ে তারা চলে যান। এরমধ্যে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ করেন তুর্য ।
এমন হামলার বিষয়ে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম সাইফ উল্লাহ বাদলের বক্তব্য নিতে তার মুঠোফোনে চেষ্টা করেও গণমাধ্যমকর্মীরা ব্যর্থ হয় । দীর্ঘক্ষণ মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নাই এম সাইফ উল্লাহ বাদলের ।
Discussion about this post