কোরবানীর ঈদের আর মাত্র তিন দিন বাকী । এরই মধ্যে প্রশাসনের সকল দপ্তরে নানাভাবে ধর্ণ দিয়েও শ্রমিক কর্মচারী সহ প্রায় ৫০০ মানুষকে তাদের বেতন ভাতাসহ পাওনাদি পরিশোধ না করে বছরের পর বছর যাবৎ প্যারাডাইস ক্যাবলসের মালিক চার ভাই মোবারক হোসেন, মোশারফ হোসেন, মজিবুর হোসেন ও মনিয়ার হোসেন বারবার শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি ;দিলেও শেষ পর্যন্ত কেউ আর অসহায় এই শত শত শ্রমিকদের খোজ রাখে নাই । সবশেষ প্রধানমন্ত্রীর কঠোর আদেশের পরও গত ২৬ জুলাই শনিবার শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের পাওনা বেতন পরিশোধ করার কথা থাকলেও প্যারাডাইস ক্যাবলসের কাউকেই খুঁজে পায় নাই শ্রমিকরা ।
প্যারাডাইস ক্যাবলসের পারিবারিক একটি ঘনিষ্ট সূত্র জানায়, “অতি সম্প্রতি প্যারাডাইস ক্যাবলসের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করার লক্ষ্যে চার ভাইয়েরে মধ্যে তিন ভাই মোবারক হোসেন, মোশারফ হোসেন ও মনিয়ার হোসেন নারায়ণগঞ্জের একজন প্রভাবশাণলী নেতার প্রতিষ্টানে বৈঠকে বসেছিলেন । এতেও কোন লাভ হয় নাই । এই চার ভাই পুরোদমেই বটাপার । এরা কোন অবস্থাতেই শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করবে না । এই মোবারক, মোশারফ ও মুনিয়ার সরকারদলীয় এক ব্যবসায়ী নেতার সাথে বৈঠক করলেও শ্রমিকদের টাকা দিবে না এটা নিশ্চিত । এই বাটপাররা যদি টাকাই দিতো তবে কি নেতাদের সাথে গোপন বৈঠকে বসে ? প্রধানমন্ত্রী আদেশ দিয়েছেন এটা নিয়ে কি আব কোন শ্রমিক আবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে পারবে ? এই বাটপাররা ব্যংেকের বিশাল টাকা আত্মস্যাৎ করে ক্যানেডা, আমেরিকা, মালোয়শিয়াতে একাধিক বাড়ি করেছে । এই চার ভাইয়ের অসংখ্য বাড়ি রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে । প্যারাডাইস ক্যাবলসের এই বাটপাররা টিভি চ্যানেলের বিশেষ পেশার এক বাটপারকে সাথে নিয়ে প্রশাসনের অসাধু চক্রদের ম্যানেজ করে যাচ্ছে । ফলে কোন অবস্থাতেই শ্রমিকরা তাদের পাওনা আর পাচ্ছে না“ বলেও জানায় চার ভাইয়ের ঘনিষ্ট এই সূত্রটি ।
এমন ঘটনার বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরে প্যারাডাইস কেবলস লিমিটেড এর শ্রমিকদের পাওয়া পরিশোধের দাবীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভের ব্যাপারে বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান এমপি বলেছেন, আমি নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অনুরোধ রাখছি প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক।
গত একটি বছর ধরে তাদের ৪ ভাইয়ের নিজেদের মধ্যে বিরোধের কারনে শ্রমিক কর্মচারী সহ প্রায় ৫০০ মানুষকে হয়রানী হচ্ছে। শ্রম মন্ত্রনালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর কাছে ২ জুলাই তারা লিখিত আকারে পাওনা পরিশোধের বিষয়টি অঙ্গিকার করেছিলো। কিন্তু আজকে তারা পাওনা পরিশোধ করেনি। এতে করে নারায়ণগঞ্জে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। আজকে শ্রমিকেরা আশায় বুক বেধে ছিলো। রাস্ট্রকে কথা দেওয়ার পরও তারা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করেনি।
অথচ গুঞ্জন রয়েছে তাদের কোন ভাইয়েরা শুধু দেশেই নয় বিদেশেও বিশাল সম্পদের পাহার গড়েছে। আবার ব্যাংক থেকে বিশাল অংকের লোন নিয়ে তারা কারখানা বন্ধ রেখে ব্যাংকের টাকা আত্মসাত করছে বলেও জানা গেছে। লিখিতভাবে শ্রম প্রতিমন্ত্রীকে অঙ্গিকার করেও তারা তা রক্ষা করেনি। এতে করে তারা রাষ্ট্রকেও অসম্মান করেছে বলে আমি মনে করি এবং বিষয়টি ব্যবসায়ী সমাজ কখনোই মেনে নিবেন না।
সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ প্রশসানের পক্ষ থেকে নেওয়া আবশ্যক বলে আমি মনে করি। পাশাপাশি শ্রমিকদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে আমরা আপনাদের ন্যায পাওনা পরিশোধের বিষয়ে আপনাদের পাশে আছি থাকবো। কিন্তু আপনার রাস্তায় নেমে বিশৃঙ্খলা করবেননা ।
চারিদিকে করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব আপনারা নিজেদের নিরাপদ রাখুন। এ বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আমি ডিসি এসপি এবং নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী মহল ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ সকলের সহযোগীতা চাই।
(২৬ জুলাই সেলিম ওসমানের ই মেইল থেকে পাঠানোর বার্তায় গণমাধ্যমকে জানানো হয় ।)
তথ্য সূত্রে আরো জানা যায় ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর কোরবানীর ঈদের আগে শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে প্যারাডাইস ক্যাবলসের মোশারফ হোসেন শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আজও পরিশোধ করে নাই । এমন প্রতারকদের বিরুদ্ধে যে কোন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নিতে চাইলে নানা লবিং তদ্বির করে ঘটনা দীর্ঘদিন যাবৎ ধামাচাপা দিয়ে যাচ্ছে ।
Discussion about this post