নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
চট্টগ্রামের বিমানবন্দরে কমান্ডো অভিযানে নিহত বিমান ‘ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী’ মাহাদীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তার ফিঙ্গার প্রিন্ট অনুসন্ধানে করতে গিয়ে দেখা গেছে র্যাবের ক্রিমিনাল ডাটাবেজের এক অপরাধীর তথ্যের সঙ্গে মাহাদীর মিল রয়েছে।
র্যাবের পরিচালক লিগাল অ্যান্ড (মিডিয়া) মুফতি মাহমুদ খান সোমবার একথা জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে।
ডাটাবেজের তথ্য অনুযায়ী, নাম: মো. পলাশ আহমেদ, বাবার নাম: পিয়ার জাহান সরদার, ঠিকানা: দুধঘাটা, পিরিজপুর, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ। উক্ত বিমানের যাত্রীর তালিকা অনুযায়ী সে আভ্যন্তরীণ রুটের (ঢাকা-চট্টগ্রাম) যাত্রী ছিল। তার নাম উল্লেখ ছিল, AHMED/MD POLASH. সিট নং ছিল-17A.
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দাখিল পাসের পর মাহাদী সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজে পড়ালেখা করতো। সে নাটকে অভিনয় করতো বলেও জানা গেছে। কিছুদিন মালয়েশিয়াতেও ছিল।
প্রসঙ্গত, বিজি-১৪৭ ফ্লাইট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রবিবার বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরই বিমানটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। পরে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে বিমান বাংলাদের ওই ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণ করে। এতে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রু নিয়ে বিজি-১৪৭ ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাচ্ছিল।
পরে কমান্ডো অভিযানে সন্দেহভাজন বিমান ‘ছিনতাইকারী’ মাহাদী নিহত হয়। বিমানে থাকা যাত্রীরা অভিযানের আগেই নিরাপদে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন।
সোনারগাঁও থাকার এসআই আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, রবিবার মধ্যরাতে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের নির্দেশনা পেয়ে মাহাদির পরিচয় শনাক্ত করতে তার গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। নিহতের ছবি দেখিয়ে তার পরিচয় শনাক্ত করেছে।
তিনি বলেন, মাহাদী ওরফে পলাশ ২০১১-১২ সালে স্থানীয় তাহিরপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে। পরে স্থানীয় মোগড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজে উচ্চ মাধ্যমকে ভর্তি হয়। কিন্তু পড়াশুনা শেষ করতে পারেনি। এরমধ্যে সে ঢাকায় এসে শোবিজ মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়। সে একটি শর্ট ফিল্মও বানিয়েছিল। এসব কারণে তার পরিবারের সদস্যরা তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতো। কিছুদিন আগে বাড়িতে গিয়ে একটানা ২৫ দিন ছিল। সে দুবাই যাচ্ছে বলে ২২ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে।
তার বিষয়ে সোনারগাঁও থানায় কোনও মামলার জিডি এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে এসআই জানান। পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি জানান, সিমলাকে বিয়ে করেছিল মাহাদী। এ নিয়েও তার পরিবার ক্ষুব্ধ ছিল। দুইবার সিমলাকে নিয়ে মাহাদী তার বাড়িতেও গিয়েছে। সর্বশেষ কোরবানি ঈদের আগে বাড়ি গিয়েছিল।
পলাশ ওরফে মাহাদীর বাবা পিয়ার জহান সর্দার বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই সে বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে নষ্ট করায় আমরা বাসার লোকজন তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলাম। এর মধ্যে তিন-চার মাস সে মালয়েশিয়া ছিল। কিছুদিন আগে সে একটানা ২৫ দিন বাসায় ছিল। এসময় সে নিয়মিত নামাজ পড়তো ও আজান দিত। এটা দেখে তারা মনে করছে ছেলে সুপথে ফিরে এসেছে। শুক্রবার দুবাই যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ব্যাগ নিয়ে বের হয়। যাওয়ার সময় ছেলেকে বলেছিলেন, এইবার গেলে পরে থাইকো। টাকা-পয়সা নষ্ট কইরো না।’
পিয়ার জাহান দীর্ঘদিন সৌদি আরব ও কুয়েত ছিল। পরে দেশে ফিরে এসে মুদি দোকান দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ১০-১১ মাস আগে তার ছেলেকে সিমলাকে বিয়ে করে বাসায় নিয়ে আসছিল। বয়সে বড় মেয়েকে বিয়ে করায় বাড়ির লোকজন ক্ষুব্ধ ছিল।
Discussion about this post