এনএনইউ রিপোর্ট :
এবার নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় একটি ববিন কারখানায় পায়ু পথে বাতাস ঢুকিয়ে আজহারুল ইসলাম সুমন (২৮) নামে এক শ্রমিক হত্যার অভিযোগে উঠেছে । এমন ঘটনায় আড়াইহাজার তানা পুলিশ ববিন ফ্যাক্টরীর ৭ জনকে আটক করেছে । পালিয়ে গেছে মালিকপক্ষ ।
পাযুপথে বাতাস দিয়ে আজহারেুল কে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে একটি চক্র মাঠে নেমেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে । রূপগঞ্জের যাত্রামূড়া এলকার জোবেদা টেক্সটাইল মিলে ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই দুপুরে শিশু শ্রমিক সাগর বর্মন (১০) কে একই কায়দায় পায়ুপথে হত্যার পর যেভাবে ধামাচাপা দেয়া হয়েছিলো ঠিক একই কায়দায় ববিন ফ্যাক্টরীর মালিক স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে জোড় তদ্বির চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা ।
আটককৃতরা হল- দড়ি সনমান্দি এলাকার ইয়াদ আলীর ছেলে মিল মালিকের বন্ধ আব্দুল হাই (৩৫), মিলের শ্রমিক গাইবান্দা জেলার তোফাজ্জলের ছেলে এনামুল হক (১৭), নিলফামারী জেলার সাইদুল ইসলামের ছেলে মমিনুল ইসলাম (১৬), জাহিদুল ইসলামের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (১৮), মজিদুল ইসলামের ছেলে লিটন মিয়া (২১), আমির আলীর ছেলে রাজিব (২৩) ও রতন মিয়ার ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (১৮) ।
এর আগে গত শনিবার (৮ ডিসেম্বর) গভীর রাতে সনমান্দি নয়াপাড়া গ্রামে অবস্থিত মুকুল হোসেনের মালিকানাধীন উদয়ন ববিন মিলের শ্রমিক আজহারুল ইসলাম সুমনকে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে দেয়। পরে গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে মিলের সামনে ফেলে রাখে। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ভূলতা আল-রাফি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করে রোববার দুপুর পর্যন্ত বিষয়টি প্রকাশ প্রকাশ করা হয়নি। পরে মিমাংসা না হওয়ায় রোববার দুপুরে নিহতের পরিবারের পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত শ্রমিক সনমান্দী ভুইয়াপাড়া এলাকার লিয়াকত আলীর ছেলে ।
আজহারুল ইসলাম সুমন এর পিতা লিয়াকত আলী জানান, শনিবার রাতে কাজ সেরে বাড়িতে আসার পথে মিলের অপর সহকর্মী সুমন ও মালিকের বন্ধ আঃ হাই আজহারুল ইসলাম সুমনকে বাড়িতে ফিরতে না দিয়ে তাকে ধরে নিয়ে কয়েকজন সহকর্মীদের নিয়ে তার পায়ুপথে কপ্রেসর মেশিনের সাহায্যে বাতাস ডুকায় । ওই সময় তার অবস্থার অবনতি হলে এবং পেট ফুলে অজ্ঞান হয়ে পড়লে ববিন ফ্যাক্টরীর মালিক আব্দুল হাইয়ের সহযোগিতায় তাকে গোপনে রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকার আলরাফী হাসপাতালে নিয়ে যায় । সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এদিকে গভীর রাতে মালিক পক্ষ প্রচার করে আজহারুল ইসলাম সুমন মিলে পড়ে গিয়ে মারা গেছে। এবং তার লাশ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
নিহতের ভাই সুজন জানান, হত্যার পর মালিক পক্ষ মিলের মালামাল সরিয়ে ফেলছেন এবং তারা মিল বন্ধ করে গা ঢাকা দেয়। তারা থানায় অভিযোগ যেন না দিতে পারে সে জন্য স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দিয়ে প্রভাব বিস্তার করে আসছে।
নিহত শ্রমিক আজহারুল ইসলাম সুমন এর স্ত্রী শিল্পি আক্তার জানান, তার শিশু ছেলে আরাফাত (৬) ও মেয়ে হাবিবা (২) কে নিয়ে তার এখন পথে বসার উপক্রম তার উপর একটি প্রভাবশালী মহল থানায় মামলা না করতে হুমকী দিচ্ছে।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ক কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে । আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রকৃত ঘটনা জানার জন্যও পুলিশ তৎপড়তা অব্যাহত রয়েছে ।
Discussion about this post