এনএনইউ রিপোর্ট :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে চলছে নানা রাজনৈতিক খেলা। কে হচ্ছে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ? জেলার কোন আসনে কার সাথে কে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে পারে ? মহাজোটের পার্থী হিসেবেও কে নামছেন ভোটের লড়াইয়ে ? এমন হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে ।
মহাজোট থেকে নারায়ণগঞ্জের ৫টি নির্বাচনী আসনের প্রার্থী প্রায় চ’ড়ান্ত করলেও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নিয়ে সৃস্টি হয়েছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। নারায়ণগঞ্জ থেকে অসংখ্য মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে এই রিপোর্ট লেখাকালীন সময় পর্যন্ত জানা গেছে একেক টি আসনের বিপরীতে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্র পদান করেছে ঐক্যফ্রন্ট। এরই মধ্যে জেলার ৫টি আসনের বিপরীতে ১৪ জনকে ধানের শীষের প্রতীক দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত আসলে কে পাচ্ছে চ’ড়ান্ত টিকেট তা নিয়েও রয়েছে রশি টানাটানি।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের ৫টি নির্বাচনী আসনের মধ্যে এরই মহাজোট রূপগঞ্জে হাজারো চেস্টার পর গাজী গোলাম দস্তগীরকে মনোনয়ন দিয়েছে। গাজী বিরোধী জোট ১৭টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত গাজীকেই চ’ড়ান্ত করে টিকেট দেয় আওয়ামীলীগ। নারায়ণগঞ্জ ২ (আড়াইহাজার) নজরুল ইসরাম বাবু বিরোধী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত আর টিকতে পারে নাই । ফলে বাবুই পেয়েছে নৌকার টিকেট । অনুরূপ নারায়ণগঞ্জ ৪ (সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা) আসনে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে নানাভাবে সমালোচিত কয়েকজন মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করলেও তাদেরকে আর খুজেও পাওয়া যায় নাই নির্বাচনী মাঠে।
নারায়ণগঞ্জ ৩ (সোনারগাঁ) এবং নারায়ণগঞ্জ ৫ (সদর-বন্দর) আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা ও সেলিম ওসমান এখনো রয়েছে বহাল তবিয়্যতেই। যদিও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের অনেক নেতা জেলার ৫টি আসনেই নৌকার দাবীতে সোচ্চার ছিলো দীর্ঘদিন যাবৎ তাদেরকে আর পাওয়া যায় নাই নির্বাচনের উত্তাপে। জাতীয় পার্টির এই দুটি আসনে যে কোন মূল্যে নৌকা চেয়েও অজ্ঞাত কারণে আর জোড়ালো এই দাবী টিকিয়ে রাখতে পারে নাই আওয়ামীলীগ নেতারা।
মহাজোটের বিপরীতে নারায়ণগঞ্জের এই ৫টি আসনে বিএনপিসহ ঐক্যফ্যন্টের পক্ষে অনেকেই মনোনয়ন টিকেট পেলেও এখনো নিশ্চিত নন কে হচ্ছেন ধানের শীষের মূল কৃষাণ। কোন ৫ জনের হাতে উঠবে ধানের শীষের প্রতীক।
এরই মধ্যে না.গঞ্জ ১ (রূপগঞ্জ) এঢভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, কাজী মনির ও মোস্তাফিজুর রহমান ভ’ইয়া দিপু কে ধানের শীষের মনোনয়ন দিয়েছে দল। যদিও জেলায় চাউর আছে, মোস্তাফিজুর রহমান ভ’ইয়া দিপু বিদেশে লোক পাঠিয়ে লবিং চালিয়েছে জোড়ালোভাবে। দিপু পন্থী অনেকেই বলছে শেষ পর্যন্ত দিপু ভুইয়ার লবিংই কাজে লাগবে।
আড়াইহাজারে (নাগঞ্জ.২) তিন জনকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি । এরা হচ্ছে আতাউর রহমান আঙ্গুর, মাহফুজুর রহমান সুমন ও নজরুল ইসলাম আজাদ। শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্যে জুটবে ধানের শীষের প্রতীক এ নিয়ে চলছে লবিং গ্রুপিং।
সোনারগাঁয়ে (না.গঞ্জ-৩) সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক (!) রেজাউল করিমকে মনোনয়ন না দিয়ে মান্নান ও জাফর কে টিকেট দিয়েছে দল। এই আসনে কে পাচ্ছেন মূলতঃ টিকেট তা নিয়েও দোলাচলে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
নারায়ণগঞ্জ ৪ (সিদ্ধিরগঞ্জ ফতুল্লা)’র গুরুত্বপূর্ণ এই আসনেও একই ভাবে শিল্পপতি শাহ আলম ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদকে ধানের শীষের প্রার্থী ঘোষনা দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রদান করেছে দল। এই আসনে সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিনের কোন নাম না থাকায় আলোচনা সমালোচনার সৃস্টি হয়েছে । আসলে কে পাচ্ছেন টিকে তা নিয়েও চলছে রাজনৈতিক খেলা।
জেলার সদর-বন্দর আসনে (না.গঞ্জ ৫) চারজনকে মনোনয়ন দিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। এদের মধ্যে আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য এসএম আকরাম, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট আবুল কালাম, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও আবু সাঈদ মনোনয়ন পত্র হাতে পেলেও আসলে কে হচ্ছেন মূল প্রতিদ্বন্ধী তা নিয়ে শংকায় নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষ।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মন্তব্য থেকে আরো জানা যায়, ভোটের মাঠের ঐক্যফ্রন্টের এমন হ-য-ব-র-ল অবস্থা থেকে এবং প্রার্থী নিয়ে চুড়ান্ত হিসেব পেতে আরো কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে ভোটারদের।
Discussion about this post