নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
গাড়ি থেকে মাদক ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া মামলায় পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এমএ হাশেমের ছোট ছেলে শওকত আজিজ রাসেলকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ওই দুই মামলায় বিচারিক আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন না দেয়া পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
আদালতে আজ রাসেলের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে গত ১ নভেম্বর শওকত আজিজ রাসেলের বিলাসবহুল গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক ও গুলি উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিন গভীর রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় আটক করে গাড়িটি তল্লাশি করে মাদক ও গুলি উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
পুলিশ ওই গাড়ি (ঢাকা-মেট্টো-ঘ-১৩-৮৩৭৫) থেকে ২৮ রাউন্ড গুলি, এক হাজার ২০০ পিস ইয়াবা, ২৪ বোতল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, ৪৮ ক্যান বিয়ার এবং নগদ ২২ হাজার তিনশ টাকা উদ্ধার করে। ওই সময় গাড়িচালক মো. সুমনকে আটক করা হয়। পরে এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে পুলিশ ।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে শওকত আজিজ বলেন, চাঁদা নিয়ে হারুন অর রশীদের সঙ্গে তাঁর পুরোনো বিরোধ ছিল। সম্প্রতি তিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নতুন একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেছেন। সেখানেও হারুন বাগড়া দিচ্ছিলেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর স্ত্রী-পুত্রকে একটি পার্টিতে নামিয়ে ঢাকা ক্লাবে আসেন। ক্লাব থেকে বেরিয়ে দেখেন তাঁর গাড়িটি নেই। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন গাড়ি আছে নারায়ণগঞ্জে। পরদিন রাতে তাঁর অনুপস্থিতিতে হারুন একদল পুলিশ নিয়ে তাঁর গুলশানের বাসায় ঢুকে ভাঙচুর করেন। এরপর তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যান। এ বিষয়ে নিকটস্থ গুলশান থানাকে কিছু জানায়নি নারায়ণগঞ্জের পুলিশ। পরদিন তাঁর খোয়া যাওয়া গাড়িতে ইয়াবা, মদ ও গুলি উদ্ধারের ঘটনা সাজিয়ে তাঁর ও তাঁর গাড়িচালকের নামে মামলা করেন। গুলশানের বাসা থেকে স্ত্রী-সন্তানকে তুলে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও শওকত তাঁর ফেসবুকে শেয়ার করেন।
তবে শওকত আজিজের স্ত্রী-পুত্রকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর গত শনিবার নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ভিন্ন একটি গল্প শোনান হারুন। তিনি দাবি করেন, শওকত আজিজের গাড়ি থেকে ২৮টি গুলি, ১ হাজার ২০০ ইয়াবা বড়ি, ২৪ বোতল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ, ৪৮ ক্যান বিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সময় গাড়িতে শওকতের স্ত্রী ফারাহ রাসেল ও সন্তান আনাব আজিজ ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের আটক করা হয়েছিল। পরে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে এম এ হাসেম সহযোগিতা করবেন বলে মুচলেকা দেওয়ায় তাঁর স্ত্রী-পুত্রকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
শওকত আজিজ বলেন, হারুনের চাঁদাবাজি নিয়ে ২০১৬ সালের ৫ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছে তিনি একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। ওই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন কমিশনের আদেশে গাজীপুর থেকে প্রত্যাহারের পর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তাঁর কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। তাঁর পক্ষে উপপরিদর্শক আজহারুল ইসলাম আম্বার ডেনিমের স্টোর ম্যানেজার ইয়াহিয়া বাবুকে ফোন করে টাকা দাবি করেন। এর আগেও গুলশান ক্লাবের লামডা হলে ও গুলশানের কাবাব ফ্যাক্টরি রেস্তোরাঁয় হারুন তাঁকে ডেকে নিয়ে ৫ কোটি টাকা যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঠিকানায় পাঠাতে বলেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আম্বার ডেনিমের ৪৫ জন শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গাজীপুর থানায় ধরে নিয়ে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হয়।
( ফাইল ছবি )
Discussion about this post