রাজধানীতে ক্যাসিনা ও যুবলীগের কর্মকান্ড নিয়ে যখন তোলপাড় চলছে এমতাবস্থায় নারায়ণগঞ্জ শহরের ভাষা সৈনিক সড়কে প্রেস ক্লাবের পাশেই প্যারাডাইস ক্যাবল ভবনের ৮ম/৯ম ও ১০ম মদের বার ও ক্যাসিনো নির্মানের কাজ চলছে জোরেশোরে । আর এই মদের বার ও ক্যাসিনো নির্মানের মূল হোতা সাবেক মন্ত্রী মায়া চৌধুরীর পুত্র দিপু চৌধুরী ও তার ঘনিষ্ট বন্ধু রাজধানীর তিনটি ক্যাসিনোর মালিক চাদপুর জেলার উত্তর মতলবের জহিরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি গাজী মুক্তার । এমন বার তৈরীর বিষয় নিয়ে আরেক কুখ্যাত অপরাধী শোভন গার্মেন্টস মালিকসহ শহরের ভাষা সৈনিক এলাকার অনেকেই নারায়ণগঞ্জ শহরের এমন মদের আস্তানা ও ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে । জেলা আইনশৃংখলা বৈঠকেও উঠে এসেছে নারাণগঞ্জে এমন মদের বার ও ক্যাসিনো তৈরীর অনুমতি দিলো কে ?
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
নারায়ণগঞ্জ শহরের কয়েকটি চিহ্নিত ক্লাবে একেবারেই ওপেন সিক্রেট মদ ও জুয়ার আসর চলমান থাকার ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার পর এবার জেলা আইনশৃংখলা কমিটির বৈঠকে প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম জোড়োলোভাবেই প্রতিবাদের সূরেই বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের পেছনে প্যারাডাইজ ভবনে তিনটি ফ্লোরে মদের বারের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে শুনেছি । কে দিয়েছে সেটা দেখতে হবে। আদৌ লাইসেন্স আছে নাকি নাই সেটা বড় কথা না। বড় কথা হলো এখনো কোন মদের বার থাকতে পারবে না। প্রশাসন যদি ব্যবস্থা না দেয় তাহলে সাংবাদিকেরাই সেটা গুড়িয়ে দিবে।’
এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দীন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বারের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস প্রদান করে ।
শহরের চাষাড়াস্থ ভাষা সৈনিক সড়কস্থ নূর মসজিদের মাত্র ৩০ গজের মধ্যেই এমন মদের বার ও ক্যসিনো নির্মান হচ্ছে – খবরটি ব্যাপকভাবে শহরবাসীর মাঝে তোলপাড়ের সৃষ্টি হলে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এর অনুসন্ধানে জানা যায় আরো চাঞ্চল্যকর খবর।
নাম প্রকাশ না কার অনুরোধে মদের বার ও ক্যাসিনো নির্মান কাজের সাথে যুক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, এই মদের বার মালিক হচ্ছেন মায়া চৌধুলীর পুত্র দিপু চৌধুরী ও তার বন্ধু মোস্তফা । এই দিপু চৌধুরী ও মোস্তফার সাথে তাদের ঘনিষ্ট পার্টনার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া । যিনি ইতিমধ্যেই অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছেন র্যাবের হাতে। রাজধানীর গুলশান এলাকায় খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার প্রতিবেশী হলেন নারায়ণগঞ্জের প্রারাডাইস ক্যাবলসের মালিক মোবারক, মোশারফ, মজিবর ও মনির । তারা বসবাস করেন পৃথক বাড়ীতে । আর এই গুলশানে বসেই নারায়ণগঞ্জে মদের বার ও ক্যাসিনো স্থাপন করতে দিপু চৌধুরী, মোস্তফা ও ক্যাসিনোসহ নানা অপরাধের গডফাদার খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া নিজেদের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করে । এরপর শুরু হয় মদের বার ও ক্যাসিনো তৈরীর নির্মান কার্যক্রম ।
সূত্রটি আরো জানায়, এই মদের বার নির্মান করতে প্রথমে বাধা দেয় নারায়ণগঞ্জের শিল্পপতি শোভন গার্মেন্টস মালিক সিদ্দিকুর রহমান সহ কয়েকজন । সিদ্দিকুর রহমানের বিগত দিনের কিছু কুকর্মসহ বিস্তর তথ্য তুলে ধরেন প্যরোডাইস ক্যাবলসের মালিক পক্ষ । এরপর সিদ্দিকুর রহমান তার কুকর্ম ফাস হয়ে যাবার আশংকায় থেমে যান । পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে সিদ্দিকুর রহমান গোপনে আলোচনা করেন ভিন্ন পন্থায় । এরই ধারাবাহিকতায় উঠে আসে নারায়ণগঞ্জে স্থাপিত হতে যাচ্ছে মদের বার ও ক্যাসিনো ।
প্যারাডাইস ক্যাবল ভবনের ঘনিষ্ট সূত্রের সাথে ২০ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডে আলোচনায় উঠে আসে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। এমন তথ্য থেকে আরো জানা যায়, সাবেক মন্ত্রী মায়া চৌধুরীর মেয়ের জামাতা নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ফাসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামী কর্ণেল তারেক সাইদকে ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জে এহেন কোন অপরাধ নাই যারা বিগত সময়ে সংগঠিত করেন নাই দিপু চৌধুরী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা । র্যাবের সিইও হওয়ার সুযোগ নিয়ে দিপু চৌধুরী নারায়ণগঞ্জে ইয়াবা তৈরীর কারখানা তৈরী করেছিলো বলে জানায় এই সূত্রটি । আর এখন চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুরের লোকজন এনে নারাযণগঞ্জের চাষাড়ায় এই মদ ও ক্যাসিনো নির্মানের চকাজ চালিয়ে যাচ্ছে । যার কোন খোজই রাখে নাই আইনশৃংখলা বাহিনী ।
Discussion about this post