বিভিন্ন রপ্তানীমুখী কারখানার জন্য পলিথিনের দানা আমদানী করে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে সরবরাহ করার অনুমতি থাকলেও নারায়ণগঞ্জের বাজারে এবার নতুন করে পুরোপুরি নিষিদ্ধ ভিউ পিপি নামক পলিথিনে সয়লাভ হয়ে উঠেছে ।
শিল্পাঞ্চলখ্যাত নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র নানা শিল্প কলকরখানায় পরিপূর্ণ । হাজার হাজার গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীকে পুঁজি করে নারায়ণগঞ্জে নিষিদ্ধ ব্যবসায়ীদের রমরমা কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন যাবৎ । একদিকে বন্ড লাইসেন্সের নামে ক্যাশ এলসির ব্যবসা । অপরদিকে বিভিন্নভাবে শুল্কমুক্ত পন্থায় বিদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার নানা ধরণের পন্য আমদানী করে দেশীয় বাজারে বিক্রি করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন অনেকেই । আর এই অসাধু পন্থার কারবারীদের অনেকেই নারায়ণগঞ্জে বসে চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ কর্মকান্ড ।
অতি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র চেম্বার রোড ও নয়ামাটি এলাকায় জেবিএল স্টোরে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ভিউ পিপি গুদামজাত করে আসছে । একদিকে ভিউ পিপি গোদামজাত করছে অপরদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যেই তা খোলা বাজারে বিক্রি করছে অসাধুরা ।
খোজ নিয়ে আরো জানা যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের জেবিএর ও ডিএম এন্টারপ্রাইজের নামে প্রতিদিন ২৫/৩০ টন নিষিদ্ধ ভিউ পিপি (এক ধরণের নিষিদ্ধ পলিথিন) মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর এবং গাজীপুর থেকে তৈরী করে কনটেইনার বোঝাই করে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আনার পর তা দ্রুত বিক্রি শহরের খুচরা বিক্রেতাদের কাছে তা সরবরাহ করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোন না কোন গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের নাম ও কাগজ পত্র প্রদর্শন করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে । এক্ষেত্রে কোন কোন গার্মেন্টস মালিক এমন নষিদ্ধ ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠোছে জোড়ালোভাবেই ।
এমন ভিউ পিপির বিষয়ে কঠোরভাবে কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দাদের কঠোর নজরদারী থাকার কথা থাকলেও অবৈধ বিশাল বিশাল চালান সরবরাহের পুর্বেই অসাধু মহাধূর্ত নিষিদ্ধ ভিউ পিপি ব্যবসায়ীরা গোপনে উৎকোচের বিষয়টি সম্পন্ন করে রাখেন কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দাদের সাথে ।
নিষিদ্ধ ভিউ পিপি ব্যবসায়ী ও কাস্টমস/শুল্ক গোয়েন্দাদের গভীর সখ্যতা থাকার কারণে নারায়ণগঞ্জ শহরের সনাতন পাল লেন ও নয়ামাটিতে বিশাল বিশাল গোডাউন থাকার পরও এ বিষয়ে বর্তমানে টু শব্দটিও করে না শুল্ক গোয়েন্দারা ।
অথচ গত বছর ২৩ অক্টোবর সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জে সাড়াসী অভিযান চালিয়ে প্রায় ২০/২৫ লাখ টাকার নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করে ঢাকায় নিয়ে যান কাস্টসম ও শুল্ক গোয়েন্দারা । প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও এ বিষয়ে কোন মামলা অথবা কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়ার খবর পাওয়া যায় নাই । তৎসময়ে নারায়ণগঞ্জের গণমাধ্যমকর্মীরা অভিযানকারী শুল্ক ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করলে কোন উত্তর না দিয়ে নানা ধরণের মন্তব্য করে নিষিদ্ধ পলিথিন কনটেইনার বোঝাই করে ঢাকার হেড অফিসে নিয়ে যায় ।
পরে খোজ নিয়ে জানা যায় কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দাদের অসাধু কর্মকর্তারা মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ হয়ে নিষিদ্ধ পলিথিন আবার ফিরিয়ে দেয় । সেই সাথে প্রতিমাসে নারায়ণগঞ্জের নিষিদ্ধ ভিউ পিপির কারবারীদের সাথে নিয়মিতভাবে মাসোয়ারার একটি চক্তি সম্পাদন করে । এভাবেই চলছে নিষিদ্ধ ভিউ পিপির কারবার । যা দেখার কেউ নাই । আর এই সুযোগে কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দারা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন। আর ভিউ পিপির কারবারীরা নারায়ণগঞ্জে এমন নিষিদ্ধ ব্যবসা করে সরকারী বিশাল রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে একর পর এক আলীশান বাড়ি গাড়ির মালিক বনে যাচ্ছেন । অথচ এই নিষিদ্ধ পলিথিনের কারবারীরা এক সময় নূন আনতে পান্তা ফুরাতো বলে জনশ্রুতি রয়েছে ।
Discussion about this post