জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। গত বছরের এই দিনে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি ।
করোনা বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দিনটি পালনে জাতীয় পার্টি ও এরশাদ ট্রাস্ট দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে রওশন এরশাদও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবেন।
জাতীয় পার্টি সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সকালে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে রংপুরে এরশাদের সমাধি জিয়ারত করবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। সেখান থেকে ফিরে দুপুরে তিনি কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও বনানীতে পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আলাদা আলাদা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
এদিকে, সকাল ১১টায় গুলশানে রওশন এরশাদ বাসভবনে মিলাদ মাহফিল ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এরশাদ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে দুপুর ১২টায় কাকরাইলে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এরশাদের প্রতীকী বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন, বিকেলে প্রেসিডেন্ট পার্কে স্মরণসভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া সকাল ১০টায় কাকরাইলে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত এরশাদের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ও মহানগর জাপা নেতারা। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পযর্ন্ত কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ব্যক্তিগতভাবে বাবলার পক্ষ থেকে কোরআন খতম ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাপার পক্ষ থেকে বাদ আছর মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। শ্যামপুর- কদমতলীর বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মন্দিরে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (১৩ জুলাই) থেকেই তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু করেছে এরশাদ ট্রাস্ট। এদিন দেশের জেলা ও উপজেলা শহরের মসজিদে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া সোমবার বাদ আছর রাজধানীর কদমতলীর শিল্প এলাকায় বাবলার সংসদীয় কার্যালয় চত্বরেও দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে মোনাজাত পরিচালনা করেন রাজউক জামে মসজিদের ইমাম মো. নাসির উদ্দিন শেখ।
গত বছরের ১৪ জুলাই সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এরশাদ। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। রক্তে হিমোগ্লোবিন ও লিভারে দীর্ঘদিনের সমস্যার পাশাপাশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ওই বছরের ২৬ জুন সিএমএইচে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় দেশের বাইরে নেওয়ার অবস্থাও ছিল না বলে জানানো হয় দলের পক্ষ থেকে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই অবশ্য অসুস্থ হয়ে পড়েন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় তাকে। ফলে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারে অংশ নিতে পারেননি তিনি। নির্বাচনে জয়লাভের পর দেশে ফিরে শপথ নিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হন। এরপর স্বাস্থ্যের অবনতি হলে ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি ফের চিকিৎসা নিতে সিঙ্গাপুর যান তিনি। দেশে ফেরেন ৪ ফেব্রুয়ারি। এরপর থেকে সিএমএইচেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন এরশাদ।
Discussion about this post