ফতুল্লার চিন্থিত মাদক ব্যবসায়ী মোল্লা মামুন একটি বিশাল সিন্ডিকেটের সকল অপকর্মের সঙ্গী । মোল্লা মামুন বিপুল পরিমান ফেনসিডিল সহ একাধিক বার প্রশাসনের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলো । প্রথমে কবরীর ক্যাডার পরে কবরীর পি এস সেন্টুর সাথে অর্থের লেনদেন কে কেন্দ্র করে দন্দ দেখা দিলে একেবারে শেষ মুহুর্তে কবরির বলয় থেকে বেরিয়ে আসে মোল্লা মামুনের শেল্টারদাতাদের কেউ কেউ । এবং একটি চাঁদাবাজী মামরায় মোল্লা মামুনের শেল্টারদাতা গ্রেফতার হলেও অপরাধ থেকে ফিরে আসে নাই এই চক্রটি ।
তাছাড়া মোল্লা মামুনের সিন্ডিকেটের হোতারা তৎকালীন সময়ে সীমান্তবর্তী সুনামগঞ্জের বাসীন্দা আন্তর্জাতিক অস্ত্র ব্যবসায়ী সিরাজের মাধ্যমে অস্ত্র কেনা বেচায় জড়িয়ে পরে । যিা এখনো অব্যাহত রয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে । একই সাথে চিন্থিত ফেনসিডিল ব্যবসায়ী শিবু মার্কেট এলাকার শুক্কুর আলীর মাধ্যমে মাদক ব্যবসায় ও জড়িয়ে পরে । যা বর্তমানে ফতুল্লার রেল লাইন বট তলা এলাকাটি সকলের কাছে মোল্লা মামুনের মাদকের পাইকারী হাট বাজার হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত ।
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
নারায়ণগঞ্জে জেলার অসংখ্য মাদক কারবারীরা বর্তমানে নানা পন্থা অবলম্বন করে চালিয়ে যাচ্ছে মাদকের রমরমা কারবার। ভিন্নবেশে মাদক বিক্রেতারা আছেন স্ব স্ব অবস্থানে । কেউ বা নিজ এলাকায় গাঁ ঢাকা দিয়ে আবার কেউ পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে বসে নারায়ণগঞ্জের মাদক সাম্রাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে দেদারছে। প্রশাসনের অনেক অসাধু কর্মকর্তাদের শেল্টারে ভিন্ন পাড়া মহল্লাতে ভিন্ন ভিন্ন বেশ ধরে তারা মাদক বিক্রি করে যাচ্ছেন।
তাদের কাউকে কাউকে আবার দেখা যাচ্ছে সরকার দলীয় লোকজন নানাভাবে প্রশ্রয় দিচ্ছে। আবার কাউকে কাউকে দেখা যাচ্ছে প্রভাবশালীদের মদদ নিতে। ফলে প্রশাসনও অনেক সময়ে এসব বিতর্কিত লোকজনদের ছাড় দিচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফতুল্লার সস্তাপুর গাবতলা এলাকার ঘর জামাই (শ্বশুড় বাড়ীতে আশ্রয় নেয়া) মতিনের ছেলে মাহবুবুর রহমান মামুন ওরফে মোল্লা মামুন ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে উত্থান ঘটে মাদকের বিশাল সাম্রাজ্যে । নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি সারাহ বেগম কবরী ও তার পিএস সেন্টুর হাত ধরে উত্থান ঘটে এই মামুনের ।
তৎকালীন সময়ে সংসদ; সদস্য সারাহ বেগম কবরীর প্রভাব খাটিয়ে মোল্লা মামুন ছাড়াও আরো কয়েকজন শুরু করে পাইকারী মাদক ব্যবসা। তবে কবরীর আমলের শেষ সময়েই অর্থাৎ ২০১৩ সালে তার স্বরূপ উন্মোচিত হয়ে পড়ে।
২০১৩ সালের ২০ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনেই ট্রাক ভর্তি ফেনসিডিলসহ মোল্লা মামুন ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে তৎকালীন জেলা ডিবি’র এসআই মিজানুর রহমান। ওই সময় বিষয়টি বেশ আলোচিত হয়েছিল। কারণ মোল্লা মামুনের সহযোগীরা ওইসময় ডিবি পুলিশের উপর হামলাও চালিয়েছিল। পরে দীর্ঘদিন জেল খেটে বেরিয়ে আসে মামুন। এরপর কবরীর আমল শেষ হলে সে শেল্টার নেয় শ্রমিক লীগ নেতা কাউসার আহাম্মেদ পলাশের। একই সাথে রাজনৈকি ছত্র ছায়ায় লেবাসদারী মোল্লা মামুন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে ।
নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের উপর হামলা ট্রাকে ট্রাকে মাদেকের পাইকারী কারবার ও প্রকাশ্যে এখনো নানা অপকর্ম করে বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে অপরাধ সাম্রাজ্য । চাঁদাবাজি. মাদকের পাইকারী ও খুচরা ব্যবসা, ভূমি দস্যূতা, দখল কর্মকান্ড সহ সকল ধরণের অপরাধ অব্যহত রেখেছে গত কয়েক বছর যাবৎ । আর এই মোল্লা মামুনের নানা অপরাধ সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখতে বিশেষ পেশার কয়েকজন ফেনসিডিল খাদক, কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা নিয়মিত মোল্লা মামুনের ফতুল্লার রেললাইন এলাকার একটি কারখানায় নিয়মিত বৈঠকে বসে । এই কারখানায় নিয়েও রয়েছে নানা গুঞ্জন । বাহিরে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করে মোল্লা মামুন ও তার শেল্টারদাতারা চালিয়ে যাচ্ছে সকল ধরণের অপরাধ ।
সস্তাপুর এলাকাবাসী জানান, মোল্লা মামুন আলীগঞ্জের শ্রমিকলীগ নেতা ছাড়াও আরো কয়েকজনের ছত্রছায়ায় থেকে ফেনসিডিল ও ইয়াবার পাইকারী ব্যবসা করে আসছে । মোল্লা মামুন সস্তাপুর, কুত্আুইল, কোতালেরবাগ, লামাপাড়া, রামারবাগ, নয়ামাটি, ইসদাইর, মাসদাইর, তল্লা, খানপুর, হাজীগঞ্জ এলাকায় প্রকাশ্যে ইয়াবা ব্যবসা করছে। তাদের মাদকের ছোবলে প্রতিটি এলাকার উঠতি বয়সের ছেলে থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের ছেলে মেয়েরা ইয়াবা ও ফেনসিডিলে আশক্ত হয়েছে পড়েছে। সস্তাপুর কুতুবআইলে মোল্লা মামুনের অন্তত ২০ থেকে ২৫জনের একটি বাহিনী রয়েছে। যারা প্রত্যেকেই মোল্লা মামুনের মাধ্যমে ইয়াবা ব্যবসায় উৎসাহীত হয়ে আসক্ত হয়ে পড়েছে।
তবে গত বছরের ১১ জানুয়ারী সে পুলিশের হাতে ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়। ফতুল্লা মডেল থানার এসআই কামরুল হাসান তাকে গ্রেফতার করে মোবাইল কোর্টে হাজির করে। এরপর ভ্রাম্যমান আদালতে দোষ স্বীকারের পর মোল্লা মামুনকে ১৫ দিনের কারাদন্ড দেয়।
মোল্লা মামুনের ফেসবুক আইডিতে দেখা যায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পলাশের সঙ্গে ঘুরছে আর মোবাইলে সেলফি তুলছে। একটি সেলফি মোল্লা মামুন ফেসবুকে পোস্টও করেছে। এছাড়া গত মার্চ মাসে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়ার সময় নৌপরিবহন মন্ত্রী ও কাউসার আহাম্মেদ পলাশের ঠিক পেছনেই দাড়ানো ছিল মামুন।
এদিকে কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জসিমউদ্দিনের বিরুদ্ধে গেল বছরের মার্চ মাসে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে। যাকে বিগত দিনে কাউসার আহাম্মেদ পলাশের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে। জসিম উদ্দিনের সাথে মাদক ব্যবসায়ী আলী মাষ্টার, মুরগী কামাল, ট্রাক জাকিরের সাথে গোপন বৈঠকের ২৯ মিনিট ২০ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এর আগেও জসিমউদ্দিনের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন ইউপি চেয়ারম্যানও । যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও মোললা মামুন ও তার শেল্টারদাতাদের গ্রেফতারের পরিবর্তে ফতুল্রা থানার অসাদু পুলিশ সদস্যরা নানাভাবে তোষামোদ করে বলেও অভিযোগ রয়েছে জোড়ারোভাবেই ।
Discussion about this post