বিএনপির সরকার ক্ষমতাসীন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান, তার বন্ধু গিয়াস উদ্দন আল মামুন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতা ও মন্ত্রী রেজাউল করিম, সংসদ সদস্য এডভোকেট আবুল কালাম, গিয়াস উদ্দিন, শিল্পপতি ও সাবেক এমপি একই সাথে কিং মেকার হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ আলী, শ্রমিক নেতা এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইলসহ অনেক নেতাদের নানা কারণে মারধর অপমান অপদস্থ করাসহ পুরো জেলাবাসীকে অতিষ্ট করার পর র্যাবের সাথে ক্রসফায়ারে রাজধানীর মালিবাগ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে ২০০৪ সালের ২৪ নভেম্বর মারা যায় নারায়ণগঞ্জের সেই যুবদল নেতা মমিন উল্লাহ ডেবিড ।
১৬ বছর পর আবার ক্রসফায়ারে নিহত ডেবিডের ভাগিনা এবং সেই রিজিয়া হেলেনা দিদিপুত্র নারায়ণগঞ্জ শহরের নানা অপকর্মের হোতা সাখাওয়াত হোসেন রানা গুলি করে হত্যার হুমকি ও চাঁদা দাবীর বিষয়ে সংবাদ প্রচার হলে সকাল থেকেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে ডেবিড পরিবারের বিরুদ্ধে ।
শহরের অনেকেই বলেন, বিএনপি সরকারের শাসনামলে রিজিয়া হেলেনা দিদির কারণে শহরবাসী থাকতো অতিষ্ট । ক্রসফায়ারে নিহত ডেবিড ছাড়াও দিদির আরেক ছোট ভাই (বোমা হামলা মামলার আসামী কারাগারে আটক) যুবদল নেতা শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল পুরো জেলায় তান্ডব চালিয়ে অতিষ্ট করে রাখতো । সেই বিএনপি ক্ষমতায় না থাকলেও ডেবিড ও জুয়েলের রেখে যাওয়া অবৈধ অস্ত্র ( সার্টগাণ, টু টু বোর রাইফেল, কাটা রাইফেল দুই টা, সেভেন পয়েন্ট ৫৬ পিস্তল, নাইন এমএম পিস্তল এবং থ্রি পয়েন্ট টু পিস্তল ) এখন কার কাছে ? তবে কি সেই অস্ত্র দিয়ে দিদি পুত্র রানা নানা নানা অপরাধ সাম্রাজ্য পরিচালনা সহ প্রতিপক্ষকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিচ্ছে ? দিদিপুত্র রানার বিরুদ্ধে মাদক মালার অভিযোগও রয়েছে । তবে কি এই রানা প্রশাসন ও নগরবাসীকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এখনো মা ও মামাদের মতো অপরাধ সাম্রাজ্য চালিয়েই যাবে ? রাজনীতির অন্তরালে দিদিপুত্র রানার ভয়ংকর মাদক ব্যবসা ঠেকাবে কে ? এমন অসংখ্য প্রশ্ন তুলেছে নগরবাসী
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সেক্রেটারী এটিএম কামালের সঙ্গে চরম অশোভণ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগ উঠেছে ক্রসফায়ারে নিহত দুর্ধর্ষ সেই সন্ত্রাসী মমিনউল্লাহ ডেভিডের ভাগ্নে সাখাওয়াত হোসেন রানার বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে তিনি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগর কমিটির সেক্রেটারী। ওই আচরণের সময়ে কামালকে মারতে তেড়ে যান রানা। অকথ্য ভাষায় গালাগালও করেন। এ ঘটনায় সেখানে থাকা লোকজন হতবিহবল হয়ে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গালাগাল ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের সময়ে রানা অস্বাভাবিক আচরণ করেছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিশনপাড়া এলাকাতে সড়ক নিয়ে কয়েক বছর ধরেই সাত্তার ও জব্বার মিয়া প্রয়াত মিলু চেয়ারম্যানের সঙ্গে ছেলে রাতুল সহ অন্যদের সঙ্গে বিবাদে জড়ানোর চেষ্টা করেন। মিলু চেয়ারম্যান হলেন এটিএম কামালের চাচা। ৩ ফেব্রুয়ারী সোমবার রাতে সাত্তার ও জব্বারের পক্ষে এসে ঘটনাস্থলে হৈ চৈ করেন ক্রসফায়ারে নিহত যুবদল নেতা মমিনউল্লাহ ডেভিডের ছোট ভাই মাহাবুবউল্লাহ তপন। খবর পেয়ে রাত ১১টার পরে ভাগ্নে রানা ১০-১২ জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজন এনে মিশনপাড়ায় এটিএম কামালের সোনারগাঁও ভবনের সামনে অবস্থান করে। সেখানে থেকেই তিনি দলবল নিয়ে এটিএম কামালকে উদ্দেশ্য করে অশালীন ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। এটিএম কামালকে দিতে থাকে একের পর এক হুমকি। তখন কামাল সংযত হয়ে কথা বলার অনুরোধ জানালে তাকে মারতে তেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আশেপাশের লোকজন এসে নিবৃত্ত করে।
তবে এ ব্যাপারে এটিএম কামালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন কথা বলতে রাজী হয়নি। বরং এও জানান, এটা নিউজ করার মত কোন বিষয় না। কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আমার নাই।
অপরদিকে সাখাওয়াত হোসেন রানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। এগুলো মিথ্যাচার। ছোট একটা বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল অন্যদের মধ্যে। আমি সেখানে গিয়ে সেটা মিটমাট করে দিয়েছি। এখানে আমার ও এটিএম কামালের মধ্যে কিছু না।’
এদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সেক্রেটারী সাখাওয়াত হোসেন রানার বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইশতিয়াক জামান নামের একজন প্রকৌশলী। এতে রানার বিরুদ্ধে গুলি করে হত্যার হুমকির অভিযোগ তোলা হয়।
৪ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার দুপুরে শহরের মিশনপাড়া এলাকার মনিরুজ্জামান মিলু ওরফে মিলু চেয়ারম্যানের ছেলে ওই অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে ইশতিয়াক জামান লিখেন, আমি পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার। শহরের মিশনপাড়ায় আমার বাসার বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের সময়ে ২৩ জানুয়ারী বিকাল ৪টায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ক্রসফায়ারে নিহত মমিনউল্লাহ ভেভিডের ভাগিনা শাখাওয়াত ইসলাম রানা ৪/৫ জন সহ আমাদের বাসার সামনে এসে। তখন তারা আমাদের কাজে বাধা দেয়। ওই সময়ে বড় ভাই শাহরিয়ার আমান তুষারকে কাজ বন্ধ করতে বলে। কাজ করতে হলে রানা ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দিলে জামান ও তুষারকে প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়। ১০ দিনের মধ্যে ৫ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে আমাদের বাউন্ডারী ওয়াল ভেঙ্গে ফেলবে এবং আমাদের দুই ভাইকে গুলি করে মারিবা ফেলিবে।
অভিযোগে আরো বলা হয়, ‘আমার বড় ভাই আমাকে এই ঘটনা জানালে, আমি আমার বড় ভাইকে কাজ চালিয়ে যেতে বলি। ইতোমধ্যে বাউন্ডারী দেয়ালের কাজ শেষ করে রং দেওয়ার সময়ে ৩ ফেব্রুয়ারী রাত অনুমান ৯টায় আসামী শাখাওয়াত ইসলাম (রানা) সহ তার দলবল আমার বাসার সামনে আসে। তখন কার পার্কিং হতে ইন্টারকমের মাধ্যমে আমাকে ও আমার বড় ভাই তুষারকে পূর্বের দাবীকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদা নিয়ে নিচে নামতে বলে। আমি ও আমার বড় ভাই, পাশের বাসার আমার চাচাতো ভাই কামাল, জামাল, রাকিব, ভাগিনাকে টেলিফোনে আমাদের বাড়ীতে আসার অনুরোধ করি। তখন আসামী শাখাওয়াত ইসলাম (রানা) ও তার অজ্ঞাতনামা সঙ্গীয় ৪ থেকে ৫ জন আমাকে ও আমার ভাইকে গেইটের বাহিরে আসার জন্য অকথ্য ভাষায় গালাগালা করতে থাকে ও ৫ লাখ টাকা চাদা দিতে বলে। আমি ও আমার ভাই ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আসামীরা তালাবন্ধ গেটের ভিতর ঢুকার চেষ্টা করে এবং গেইটের তালা ভাঙ্গার চেষ্টা ও গেটের বাহিরে লোহার রড দিয়ে বাইরাইতে থাকে। এমতাবস্থায় আমার চাচাতো ভাই কামাল, জামাল, রাকিব, ভাগিনা ঘটনাস্থল এসে আসামীদের বাধা দিলে আসামীরা তাদেরকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারধর করিতে উদ্যত্ত হয়।
এক পর্যায়ে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় আসামী রানা, আমাকে ও আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করার হুমকি প্রদান করে এবং রাস্তা ঘাটে পেলে খুন, জখমাদি করে ফেলবে হুমকি নিয়ে চলে যায়। ফলে আমরা পরিবারের লোকজন বিশেষ করে আমরা দুই ভাই চরম আতংকের মাঝে আছি।
এ ব্যাপারে সাখাওয়াত হোসেন রানা বলেন, ‘আমি কোন ধরনের হুমকি দেইনি। রাস্তার একটি বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। এর বাইরে কিছু না। হুমকির বিষয়টা সঠিক না।’ (সূত্র : নিউজ নারায়ণগঞ্জ)
Discussion about this post