নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
কোরবানীর ঈদের আর একদিন বাকী । সবাই ব্যস্ত ঈদ কেনা কাটায়। তবে বসে নেই মাদক কারবারিরা। তারা গোপনে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইন এবং দেশি-বিদেশি মদ-বিয়ার মজুদ করছে। সীমান্ত দিয়ে হরহামেশা এসকল মাদক আসছে বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলেন, ‘ঈদের সময় মাদকের সরবরাহ বাড়ার আশঙ্কায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্টে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করতে আমাদের সক্ষম অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি । আমাদের আইনশৃংখলা বাহিনীর কিছু সদস্যদের সাথে মাদক ব্যবসাযীদের সখ্যতা থাকায় আমরা মাদক পুরোপুরি নির্মূল করতে পারছি না । তবে এক্ষেত্রে জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে।
জেলা পুলিশে কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে আলোচনাকালে বলেন, আমাদের পুলিশের যেমন কিছু আসাধু লোক আছে যারা মাদক ব্যবসায়ীদেরকে শেল্টার দেয় ঠিক নারায়ণগঞ্জের কয়েকজন বিশেষ পেশার নামধারী ব্যক্তি আছে যারা নেপথ্যে থেকে কৌশলে মাদক সরবরাহসহ নানাভাবে সহায়তা দিয়ে আসেছে । এরই মধ্যে শহরের কালীরবাজার, আমলাপাড়া, পাইকপাড়া, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব এলাকা, গোয়ালপাড়া, কলেজ রোড, চাষাড়া, টানবাজার, নয়ামটি, দেওভোগ, কাশিপুর, ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকা, বন্দরের আবাসীক এলাকায় বিশাল মাদকের মজুদ করেছে মাদক ব্যবসায়ীরা । ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাজা ছাড়াও কোটি কোটি টাকার মদ ও বিয়ার মজুদ করেছে শহরের চিহ্নিত এই চক্রটি ।
এ জন্য পুলিশকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মাদক ব্যবসায়ীদের গতিবিধি নজরদারিতে রাখতে। সেভাবেই পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে কিছু মাদক উদ্ধারও হয়েছে ।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে মাদক ব্যবসায়ীরা তৎপরতা শুরু করেছে। বিশেষ করে শহরের আমলাপাড়া, কালীরবাজার, পাইকপাড়া, জামতলা ও চাষাড়ার অজ্ঞাত স্থানে কোটি কোটি টাকার মদ ও বিয়ার মজুদ রেখেছে । নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকদের এক নেতা পরিচয়দানকারী এই বিশাল মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে বেলে জোড় অভিযোগ পাওয়া গেলেও তাকে নজরদারীতে রেখেছে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, এ সময় ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদ, ম্যান্ডেলা বিয়ার, হিরো হুইস্কি, গ্রান্ড রয়েল হুইস্কি, লন্ডন রাম, টাইগার রাম, ম্যান্ডেলা রাম, আন্দামান গোল্ড বিয়ার, রয়েল ডিস্টিলারি, বস আপ, রেড হর্স ডিস্টিলারি, জিনস মদ, অরেঞ্জ মদ ও বাংলা মদ বিশেষ মজুদের তথ্য রয়েছে। আর মিয়ানমার সীমান্তে টেকনাফ ও আশপাশে ব্যাপক অভিযানের কারণে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা গা-ঢাকা দিলেও ঈদকে সামনে রেখে কিছু ব্যবসায়ী আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। । সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাকে গাঁজা ও ফেনসিডিল বাংলাদেশে ঢুকছে। হেরোইন আসছে যশোর সীমান্ত দিয়ে। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ফেনসিডিল আসছে পণ্যবাহী ট্রাকে এবং কুমিল্লা ও আখাউড়া সীমান্ত থেকে গাঁজা আসছে প্রাইভেটকার ও যাত্রীবাহী বাসে। আর নারায়ণগঞ্জে একাধিক পাইকারী মাদক কারবারীরা কালো গ্লাসযুক্ত প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও দামী হাইজ গাড়ী দিয়ে প্রতিদিন কয়েকদফা বিশাল মদ ও বিয়ারের মজুদ করেছে শহরের কয়েকটি স্থানে । যার খবর কোন সংস্থাই এখনো জানেই না ।
আবার আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অসাধু কিছু সদস্যরা এমন মাদকের চালানের খবর জানা থাকলেও তারা নিয়মিত মোটা অংকের মাসোয়ারা গ্রহণ করায় তাদের স্পর্শও করতে পারে না কেউ । যেমন আমলাপাড়ার কয়েকটি প্রভাবশালী চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, পাগলার মেরী এন্ডারসনসহ শহরের বিভিন্ন স্পটে পাইকারী এই মদ ও বিয়ার সরবরাহ করে যাচ্ছে বছরের পর বছর যাবৎ । প্রশাসনের অনেক সংস্থা ম্যানেজ থাকায় কাদের টিকিটিও কেউ ধরতে পারে না বলে জানায় শহরের অনেকেই ।
Discussion about this post