‘ধর্মীয় উস্কানীর অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ১৩ মে বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে একদল লোক মারধরের পর পরে তাকে কান ধরিয়ে উঠ-বস করান সেলিম ওসমান। ওই ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জ সদর আসনের (বন্দর-সদর) সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে ঘিরে সারাদেশে ব্যাপক তোলপাড়ের ঝড় উঠে। ওই সময় থেকে এখনো পর্যন্ত আমাদের সনাতন ধর্মালম্বী নামধারী কিছু লোক নানাভাবে ওই ওসমান পরিবারের তৈলমর্দন করেই যাচ্ছে। যারা তৈলমর্দন করেন এবং কি কারণে এই কান্ড করেন এবং তারা কারা তা এই নগরীর সকলেই জানেন। এখন কথা হচ্ছে আমাদের এই মাননীয় এমপি মহোদয় বিগত তিন বছর শারদীয় দুর্গোৎসবে তো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে মত বিনিময় ও করেন নাই আবার গেলো তিন বছর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য অনুদান ও দেন নাই !
তাইলে বুধবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শহরের কালীরবাজারস্থ জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় কেন সেলিম ওসমান ঘোষনা দিয়ে বলেছেন, “শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ১০লক্ষ টাকা দিবো। আপনারা যে যে মন্দির গুলোতে সমস্যা তাদের মাঝে বিতরণ করে দিবেন। আমি সব সময়ই আপনাদের পাশে থাকার চেষ্টা করি।” আর এই অনুষ্ঠানে কি কারণে “আমি ভোটের চিন্তা করি না” বলে এই সংখ্যালঘুদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠনে এমন মন্তব্য করলেন আমাদের এই এমপি ? তবে কি “ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাই না !”
এমন মন্তব্য করে নগরীর বোস কেবিনে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে প্রবীন এক সনাতন ধর্মলম্বী ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বৃদ্ধ এই ব্যবসায়ীর ক্ষোভ প্রকাশের ভিডিও কৌশলে ধারণ করলে তিনি বুঝতে পেরে করজোড়ে এই প্রতিবেদক কে মিনতি করে বলেন, “ভাই শ্যামল কান্তির কি হইছে তা সকলেই জানেন । আমি চাই না আমার অবস্থা শ্যামল কন্তির মতো হউক । কষ্ঠে কথা গুলি কইছি । এই কথার ভিডিও করার কি দরকার ছিলো ? প্লিজ ডিলেট করে দেন ভিডিও টি । এভাবে মিনতি জানানোর পাশাপশি তার নাম পরিচয় প্রকাশ না করতে বারবার অনুরোধ করেন।
জানা যায়, বুধবার ( ১৮ অক্টোবর ) সন্ধ্যায় শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমান।
শহরের কালীরবাজারস্থ জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে এই সভার আয়োজন করা হয়।
মতবিনিময় সভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমান বলেন, উৎসবকে নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না। মাত্র চারদিন শারদীয় দুর্গাপূজা। সবাইকে নিয়ে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করতে চাই। আর আপনারা প্রত্যেকটি মন্দিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্রার্থনা করবেন। তিনি যদি ভালো থাকেন তাহলে আপনারা ভালো থাকবো।
তিনি আরও বলেন, আমি শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ১০ লক্ষ টাকা দিবো। আপনারা যে যে মন্দির গুলোতে সমস্যা তাদের মাঝে বিতরণ করে দিবেন। আমি সব সময়ই আপনাদের পাশে থাকার চেষ্টা করি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর কুমার দে’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপনের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ -৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমান।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও বন্দর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু, বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান, মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মোদ্বাসির হোসেন দুলাল, বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, বন্দর উপজেলার মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ছালিমা হোসেন শান্তা, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার প্রধান, ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ট্রাস্টিস পরিতোষ কান্তি সাহা, সাধু নাগ মহাশয় আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক তারাপদ আচার্য, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিষ্ণুপদ সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাস, সহ- সভাপতি নেতা সাংবাদিক উত্তম কুমার সাহা, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ মন্ডল, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল, নিমাই চন্দ্র দে, ফতুল্লা থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক শিবু দাস, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শিশির ঘোষ অমর, সাধারণ সম্পাদক খোকন বর্মন, বন্দর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, পূজা পরিষদ নেতা গনেশ সাহা, হিমাদ্রী সাহা হিমু, শংকর কুমার দাস, তপন গোপ সাধু, কৃষ্ণ আচার্য, তপন দে, দুলাল দাস, রিপন রুদ্র, পংকজ রায়, বিধু হালদার, সুজন বিশ্বাস, অভিরাজ সেন, বিক্রম দাস, তিলোত্তমা দাস, চঞ্চলা বর্মনসহ বিভিন্ন পূজা মন্দিরের নেতৃবৃন্দ।
Discussion about this post