রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি পদটি ব্যবহার করে মাত্র কয়েক বছরে ‘আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ’ বনে গেছেন মীর আব্দুল আলীম নামের এক সাংবাদিক। নিজেকে কলাম লেখক হিসেবে পরিচয়দানকারী আলীমের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তোলা ছবি ব্যবহার করে মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে অবৈধ সুবিধা আদায় এবং দুর্ণীতির করে শূণ্য থেকে শত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বিগত সময়ে নিয়ে নানা অপরাধের হোতা শিল্পপতি / সাংবাদিক / গবেষক / লায়ন / প্রাবন্ধিক / কলামিষ্ট পরিচয় দানকারী এই মীর আবদুল আলীম নিজেকে বিশাল ক্ষমতাধর প্রমাণ করতে প্রকাশ্যেই আদালতের একাধিক ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে মন্ত্রী / এমপি / ডিসি / এসপি / এএসপি / ওসিদের সাথে বসে এক টেবিলে চা নাস্তা করেন । আবার দুপুরের লাঞ্চ করে তা ফেসবুকে প্রচার চালাতো সকলকে দেখানোর জন্য। এমন সংবাদ নাারয়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট প্রকাশ করলে গা-ঢাকা দেয় মীর আবদুল আলীম। ওয়ারেন্টের বিপরীতে আদালত থেকে জামিন নিয়ে ফের প্রকাশ্যে এসে নির্লজ্জের মতো আবার তার কর্মকান্ড শুরু করে। এবার এই মীর আবদুল আলীমের আরো তথ্য তুলে এনেছে ‘দৈনিক উজ্জিীবিত বাংলাদেশ’। যার হুবহু তুলে ধরা হলো ।
রাজনীতিবিদ থেকে শুরু ব্যবসায়ী, সাংবাদিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সবাই তার ভয়ে তটস্থ।
‘পান থেকে চুন খসতেই’ রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের নামে মিথ্যে সংবাদ পরিবেশন এবং তার কথার বাহিরে গিয়ে মিথ্যে সংবাদ পরিবেশন না করলে মামলা-হামলা সইতে হয় স্থানীয় সাংবাদিকদের। তার নানা অপকর্ম নিয়ে এরইমধ্যে দূর্নীতি দমন কমিশনে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। আর সেই অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আলীম।
তিনি এসব অভিযোগকে প্রেস ক্লাব থেকে বিতারিত হওয়া কিছু সাংবাদিকের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন।
দুদকে জমা দেয়া ওই অভিযোগ থেকে জানা যায়, এক সময় কাঁচপুরের শারমিন গার্মেন্টের (বর্তমানে সিনহা) শ্রমিক ছিলেন আলীম। এরপর সে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের নাম করে আজ শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই হামলা, মামলাসহ নানারকম হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। সাংবাদিক, ইউপি সদস্য, মেয়রসহ তার হয়রানিমূলক মামলা থেকে কেউ বাদ যাচ্ছেন না। বর্তমানে তিনি একাধিক ফ্ল্যাট, হাসপাতাল, প্লট ও গাড়ির মালিক।
২০০০ সালে স্থানীয় শিল্পপতিদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেন আলীম। রূপগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের ছবি সম্বলিত পোস্টার প্রকাশের মাধ্যমে অনেকের নজরে আসেন। নিজের অপকর্ম আড়াল করতে স্থানীয় সাংবাদিকদের উপর হামলা করতেও পিছ পা হননি তিনি। ২০২০ সালে সেপ্টেম্বর মাসে রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি মকবুল হোসেন, ইমদাদুল হক দুলাল, রোবেল মাহমুদ, রাসেল মাহমুদ, সাহেল মাহমুদসহ তার কথার বাহিরে গিয়ে সত্য ও নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশ করায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে রূপগঞ্জ প্রেসক্লাব থেকে বহিষ্কার করে মীর আলীম।
একপর্যায়ে তার তথাকথিত সাংবাদিক বাহিনী পাঠিয়ে বাংলাদেশ খবরের রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ইমদাদুল হক দুলালের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ঘরে থাকা সাংবাদিক দুলালের স্ত্রী ও সন্তানরা ভীত হয়ে পড়েন।
১৯ বছর (২০০১) সালের আগেও তার রূপসী মীর বাড়িতে ছিলো টিনের দুচালা আধাপাকা ঘর। বর্তমানে রূপগঞ্জ থানাধীন রাজউক পূর্বাচল উপশহরের ৯নং সেক্টরে ৩ কাঠার প্লট, গোলাকান্দাইল এলাকায় আল-রাফি হাসপাতালের চেয়ারম্যান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের টাকায় বরপা এলাকার মূল সড়কের পাশে গড়ে তোলেছেন লাইফ এইড হাসপাতাল, চিটাগাং থেকে মালামাল আনা-নেওয়ার জন্য তার মা রাহাতুন নেছার নামে ৩০ টি কার্গো, মাটি কাটার ৪টি ভেকু, কান্দাপাড়া এলাকায় রয়েছে একটি ইটভাটা, বনশ্রী সি-ব্লকে ৯০ লাখ টাকা মুল্যের একটি ফ্ল্যাট, রূপগঞ্জ এর হাটাবো পারটেক্স সুগার মিলের সামনে এবং বানিয়াদিতে মালামাল লোড-আনলোডের জন্য অবৈধ ২টি জেটি, কাঞ্চন পৌর মার্কেটে এবং গাউছিয়ার তাঁত বাজারে রয়েছে তার ২টি দোকান, কর্ণগোপে তার ছেলে ডা. তানজীল হাসানের নামে সরকারি জমি দখল, সাগরকণ্যা নেভিগেসন, এ্যারাবিয়ান ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস, জনৈক জাকির কনট্রাক্টর এর সাথে কোটি টাকা মূল্যের একটি বাল্কহেড (বালুর ট্রলার) এর পার্টনারশীপের মালিকসহ নামে-বেনামে বহু সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন তিনি।
আলীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে দুদকের সহকারী পরিচালক প্রবীর কুমার জানান, এ বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। সেটা তদন্ত করে দেখছি। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাকে দুদকে তলব করা হয়েছে। আপাতত এর বেশী কিছু আমরা বলতে পারছি না।
অভিযোগের বিষয়ে মীর আব্দুল আলীম বলেন, যারা রূপগঞ্জে ৫০০ টাকায় সন্ত্রাসীদের হাতে সংবাদ পত্রের পরিচয় পত্র তুলে দিতো, এমন কিছু অপসাংবাদিক আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছে। যা একেবারে অমূলক, ভিত্তিহীন।
Discussion about this post