‘বন্দরের মানুষ রাজাকারের কাছে বিকিয়ে গেছেন। বন্দরের মানুষ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমার উপর যতই রাগ করেন না কেন, পয়সার বিনিময়ে আপনারা বিকিয়ে গেছেন। রাজাকারের কাছে বিকিয়ে গেছেন। আপনারা (ভোটার) টাকা খেয়েছেন, প্রশাসনের লোকজন টাকা খেয়েছেন। এখন রাজাকার, রাজাকারের বংশধর যদি বন্দরে বাহাদুরি করে, তাহলে বন্দরে আগে যেমন উন্নয়ন হয়েছে তা আর দেখতে পারবে না। বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ ভোটার ও প্রশাসনের লোকজন আর্থিক সুবিধা নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ হোসেনকে বিজয়ী করেছেন।’
এভাবেই বন্দর উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এমন অভিযোগ তুলেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান।
রোববার (৯ জুন) সকালে বন্দর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ অভিযোগ তোলেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ মে বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি মাকসুদ হোসেন। এই নির্বাচনে সংসদ সদস্যের পছন্দের প্রার্থী ছিলেন সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ রশিদ।
সেলিম ওসমান আরও বলেন, ‘এত সোজা হবে না, পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে। কাকে আমরা এখানে বসিয়েছি? এক সময় সংসদেও কিন্তু রাজাকাররা বসেছিল। একুশটা বছর আমাদের জ্বালিয়ে গেছে। আজকের প্রধানমন্ত্রী একটা একটা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন, আইনের মাধ্যমে। নির্বাচনের কারণে কিছু বলতে পারিনি, কিন্তু নির্বাচনের পরেও আমি কিছু বলতে পারবো না, এমন কোনো আইন নাই।
‘আমি খবর পেয়েছি, ১০ তারিখে উনি (উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন) শপথ নিবেন, তার উৎসব করার জন্য সরকারি লোকজনও ব্যস্ত হয়ে গেছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা তোলারও ব্যবস্থা হচ্ছে, যাতে এইখানে একটা জমজমাট আয়োজন করে একটা রাজাকারকে নিয়ে আসা যায়।’
গুরুতর এমন অভিযোগকালে বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাইমিন আল জিহান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মুহাম্মদ জামাল হোসাইন, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া সাজনু, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এহসানউদ্দিন আহমেদ, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালামের উপস্থিতিতে সেলিম ওসমান বলেন, ‘আমাদের ভুলের কারণে সে যদি পাস করে থাকে, আল্লাহ তাকে যতদিন ক্ষমতায় রাখার ততদিন রাখবে। বন্দরের উন্নয়ন বন্দরের মতো চলবে। কিন্তু হয়তো এই উপজেলা অফিসে আমার আসা হবে না। আমরা একজন মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়েছি। আমরা একটা বিএনপির দালালকে ভোট দিয়েছি, আমরা একটা রাজাকারকে এই বন্দরে স্থান দিয়েছি।’
Discussion about this post