ভূয়া কাগজ দাখিল করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে টন কাপড় আটকের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর এবার এই মামলা থেকে রক্ষা পেতে দৌড়ঝাপ চালাচ্ছে ফতুল্লার শিয়াচর তক্কার মাঠ এলাকার নাজমুল হোসিয়ারি কর্তৃপক্ষ। মামলা ও গ্রেফতার এড়াতে প্রভারশালীদের পেছনে ধর্ণা দিচ্ছে এই নাজমুল হোসিয়ারী । এমন মন্তব্য করেছে ফতুল্লার অনেকেই ।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের আমদানিকারক নাজমুল হোসিয়ারি প্রাইভেট লিমিটেড এসব পর্দা ও সোফার কাপড় আমদানি করেছিল বলে জানা গেছে ।
ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাসের সময় ২৮ টন কাপড় জব্দ করেছে বন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তারা।
দুই ট্রাকে এসব কাপড় জব্দ করার পাশাপাশি একজনকে আটক করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার শিয়াচর তক্কার মাঠ এলাকার আমদানিকারক নাজমুল হোসিয়ারি প্রাইভেট লিমিটেড পলিস্টার ফেব্রিকস ঘোষণায় এসব পর্দা ও সোফার কাপড় আমদানি করেছিল বলে জানা গেছে। এতে প্রতিষ্ঠানটি অন্তত ৫০ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছিল।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার এ কে এম খায়রুল বাসার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গণমাধ্যমকে।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, একই আমদানিকারকের আরও অন্তত ৫টি চালান চট্টগ্রাম ও ঢাকার কমলাপুর আইসিডি দিয়ে খালাসের অপেক্ষায় আছে।
বন্দর কর্মকর্তারা জানান, প্রতিষ্ঠানটির সব ধরনের আমদানিতে কাস্টমসের নজরদারিতে থাকায় ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে গতকাল মঙ্গলবার রাতে চালানটি খালাসের চেষ্টা করা হচ্ছিল। এ সময় বন্দর গেটের কর্মকর্তাদের সন্দেহ হলে চালানটি জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় একজন ট্রাক চালককে আটক করা হয়েছে।
চীন থেকে আসা এ চালানটি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি খালাসের জন্য নথি দাখিল করে আমদানিকারকের প্রতিনিধি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মাহমুদ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।
মাহমুদ ট্রেডের জেটি সরকার পদে কর্মরত রবিউল ইসলাম চালানটি খালাসে কাগজপত্র দাখিল করেছেন বলে কর্মকর্তারা জানান। চালানটি জব্দ করার পর রবিউল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় বন্দর থানায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান বন্দর কর্মকর্তারা।
কাস্টমস কর্মকর্তা খায়রুল বাসার বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আগেও তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল আমদানির নামে বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি করার অভিযোগে একাধিক মামলা করেছে কাস্টমস। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় প্রতিষ্ঠানটির আমদানিকৃত সব ধরণের পণ্য কায়িক পরীক্ষা নিশ্চিত করে খালাসের নির্দেশনা আছে।’
ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ মাস আগের একটি চালান নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে ওই চালানটি খালাসে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।
খায়রুল বাসার বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে খালাসের সময় জব্দ করা চালানটিও নজরদারিতে ছিল। চালানটি বৈধভাবে খালাসের সুযোগ না থাকায় ভুয়া কাগজ দাখিল করে খালাসের চেষ্টা হচ্ছিল।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ছাড়াও আর কারা জড়িত ছিল, তা খতিয়ে দেখতে কমিশনার নির্দেশনা দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।’
জানতে চাইলে মাহমুদ ট্রেডের স্বত্বাধিকারী শফিকুল আহাদ বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে এখনো আমি কিছু জানি না। এ ধরণের অনিয়মের বিষয়ে আমার জানা নাই। রবিউল ইসলাম নামে আমার কোনো কর্মচারী নাই। অন্য কেউ হয়তো আমাদের কোম্পানির নাম ব্যবহার করেছে।’
Discussion about this post