মৌসুমী বাহারি সব সবজিতে সয়লাব বাজার। তবে হাতের নাগালে নেই দাম। বাড়তি দরে পণ্য কিনতে কিনতে ত্রাহি দশা সাধারণ মানুষের।
এমন অবস্থায় নতুন বছরে নতুন সরকারের কাছে বাজার ব্যবস্থাপনায় কঠোর হওয়ার দাবি ভোক্তাদের।
সারাদেশের ন্যায় প্রাচ্যের ড্যান্ডিখ্যাত নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র বইছে শীতের হিমেল হাওয়া। তবে ভোগ্যপণ্যের উর্ধ্বমুখী বাজারে ঘাম ছুটছে সাধারণ ক্রেতার।
তথ্য বলছে, গেল এক বছরে লাগামহীন ছিল নিত্যপণ্যের দর। নতুন বছরের শুরুতেও নেই সুখবর। বাড়তি দামের ঘানি টানতে হচ্ছে ক্রেতাদের। নারায়ণগঞ্জের প্রায় অনেক কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতের ভরা মৌসুমেও চড়া সবজির দাম। দুয়েকটি বাদে সব সবজিই ৮০ টাকার ঘরে।
নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, শিম ৫০-৮০, ফুলকপি ৪০-৬০, বাঁধা কপি ৪০-৫০, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৫০-৭০-৮০, কাঁচা টমেটো ৩০-৪০, কচুরমুখী ১০০ এবং গাজর ৪০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০, ঢেঁড়স ১০০, পটল ৮০, বরবটি ১২০, ধুন্দুল ৮০, চিচিঙ্গা ৮০, খিরাই ৪০-৫০, শসা ৬০, পেঁপে ৪০, ধনে পাতা ১০০-১৫০, মিষ্টি কুমড়া ৪০-৫০, জালি কুমড়া ৪০, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, লেবুর হালি ২০-৪০ টাকা এবং কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা, নতুন আলু ৬০ টাকা, নতুন উঠা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে, ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা দরে , পেঁয়াজের ফুলকলি ৬০ টাকা ও কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর দিগু বাবুর কাঁচা বাজারে সবজি কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম মনির বলেন, বাজারে সব ধরণের সবজির দাম বেশি। কারণ এখানে কোনো আইন নেই। যদি এসবের জন্য আইনকানুন থাকতো তাহলে দেশের এই অবস্থা হতে পারে না।
অন্যান্য ক্রেতারা জানান, তারা যে আয় করেন তাতে মাসের ১০ দিনও যায় না। অনেক সময় কোনো কিছু কিনতে মন চাইলে তারা সেসব সবজি বা পণ্য দামের কারণে কিনতে পারছেন না। এর জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সব কিছু দেশি জিনিষ কিন্তু কেনো বেড়ে যাচ্ছে বা কেনো বাড়াবে তার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
নগরীর কালীর বাজার ও দিগু বাবুর বাজারের সবজি বিক্রেতারা বলছেন, কাঁচামাল কেউ সিন্ডিকেট করতে পারে না। চাহিদার ওপর নির্ভর করে। যেদিন সরবরাহ বেশি হবে সেদিন দাম কমে যায়।
তবে ব্যবসায়ীদের এমন বক্তব্যের পর ঘনিষ্ঠ একজন ব্যবসায়ী বলেন, পাইকারী যে দোকানী কাচামাল বিক্রি করেন তিনি ই নির্ধারণ করে দেন জেলার কোন বাজারে কত মূল্যে খুচরা পর্যায়ে কাচা শাক শবজি বিক্রি করবেন । মূলত পাইকারী ব্যবসায়ীরাই সিন্ডিকেট করে মালামালের মূল্য নির্ধারণ করে দেন।
এই সময়ে মাছ-মাংসের চাহিদা কম থাকায়, সাধারণত দামও কিছু কমে। কিন্তু এবার চাহিদা তেমন না বাড়লেও, বেড়েছে দর। পাঙাশ, চাষের কই, তেলাপিয়া মাছের দাম বাড়তি বাজার চললেও অন্য সব ধরনের মাছের দাম আরও বেশি বেড়েছে। বাজারে প্রতিকেজি পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০০ টাকায়, শিং মাছ আকার ভেদে প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫৫০ টাকায়, রুই মাছে প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা।
বাজারের এমন চিত্র দেখে এমন ক্রেতাদের অনেকে বলেন, গত এক বছরে সব কিছুর দাম বেড়েছে তিন গুণ। এখন বেতনের সাথে বাজারের কোনো মিল নেই।
বিক্রেতারা বলছেন, কেনা দাম বেশি হলে বিক্রিও বেশি দামে করতে হয়। নির্বাচনের ২/৩ দিন আগে মাছ সরবরাহ কম ছিল তাই দামটা বেড়েছিল। তবে এখন মাছের দাম কম।
এদিকে আগের বাড়তি দরেই বিক্রি হচ্ছে চাল, আটা, ময়দা, চিনিসহ অন্যান্য পণ্য।
এমন উর্ধমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাজার নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ প্রতিটি ক্ষেত্রে তদারকি করার বিধান থাকলেও সকল সংস্থার কর্মকর্তারা সম্পূর্ণ অবৈধ পন্থায় নির্লজ্জতার সাথে ক্যাশিয়ার নামক চাঁদাবাজ নিয়োগ দিয়ে মাস শেষে মাসোহারা আদায়ের মাধ্যমে নিজেদের দ্বায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে । নারায়ণগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চাঁদমারী কার্যালয়ে এমন ক্যাশিয়ার কয়েকজন নানাভাবে সরকারি এই দপ্তরে বসেই বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ডেকে এনে চাঁদা আদায় করছে বলে জোড়ালো অভিযোগ রয়েছে । অপরদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ নামের সরকারি এই কার্যালয় নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইল বৌ বাজারে । এই কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন বিশাল এই বৌ বাজারে বসে কি করেন ? অত্যান্ত কৌশলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সকল বাজারে চাঁদাবাজি করলে কেউ ব্যবসা করার স্বার্থে মুখ খুলতে চান । সকল ব্যবসায়ী ই এমন চাঁদাবাজির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ভাই আমরা ব্যবসায়ী। কুত্তা কি চায় ? ‘হাড্ডি’, আমিরা হাড্ডি দিয়াই ব্যবসা করি যাতে কোন ঝামেলায় না পড়ি ।
Discussion about this post