“অনেকে ভাবছে এখানে নৌকা কেন দেয়া হয়নি। এটা কষ্ট পাওয়ারই কথা। কিন্তু এই কষ্টে ভুল ছিল কীনা সেটাও ভেবে দেখতে হবে। আমার সাথে একবার বসা উচিত ছিল, কে নমিনেশন নেবে। আমার ভাইয়ের মৃত্যুর পর থেকে আমি এই আসনে দায়িত্ব পালন করছি। আমার ছোট বোন আইভীও বলেছে সেলিম ভাইকেই কেন নৌকা দিয়ে দেয়া হয় না। আমিতো রাজাকারের সন্তান না। আমার গায়ের শিরায় শিরায় আওয়ামী লীগ। প্রতিটি মিটিংয়ে গিয়েছি, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে নিয়ে এসেছি।”
এভাবেই লাঙ্গল প্রতীক ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান স্বরণকালের এই প্রথম নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের ২ নং রেলগেট এলাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, এখানে অত বড় কোন প্রার্থী নেই যে জোর দিয়ে নির্বাচন করতে হবে। বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে হবে বাংলাদেশের মানুষও ভোট দিতে পারে। চল্লিশ, পঞ্চাশ পার্সেন্ট দিয়ে হবে না, শতভাগ ভোট কাস্ট করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মৃত্যুর পর থেকে আমি সংসদ সদস্য। আমি সবসময় জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়েছি। বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা, প্রধানমন্ত্রীর নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা নির্মাণ করেছি। আমি তো রাজাকারপুত্র না, আমি তো আওয়ামী লীগের সন্তান। মানুষকে আল্লাহ একটা সুযোগ দেন। আমি আপনাদের সেবা করার আরেকটা সুযোগ পেয়েছি। যার কারণে প্রধানমন্ত্রী এই আসনে আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী দেননি। আমাকেই পছন্দ করেছেন।’
সেলিম ওসমান বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক গুরু আনোয়ার ভাইকে (মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি) বলি। এবার নির্বাচন করার কোন প্রশ্নই আমার ছিল না। আমি হতবাক হয়ে গেছি, যখন নারায়ণগঞ্জের সিটটা খালি রাখা হলো। আমাকে জানানো হলো, ঘরের ছেলে ঘরেই থাকুক।’
‘আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের কাছে হাতজোড় করে বলবো, আত্মসমালোচনা করার সময় এসেছে। আওয়ামী লীগের অফিস রেললাইনের উপর কেন হবে ? বিশাল অফিস যেন হয় সেইটা ভবিষ্যতে দেখতে হবে। আর আওয়ামী লীগের ঘাঁটি নারায়ণগঞ্জে ৫টি আসনেই যেন নৌকা হয় সেইটা আগামীবার আমি দেখবো।’
জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, ‘আমার বিপরীতে কোন প্রার্থী নাই যাতে জোর দিয়ে ইলেকশন করতে হবে। কিন্তু ভোট দিতে মানুষ জানে এইটা সারা বিশ্বকে দেখাতে হবে। চল্লিশ, পঞ্চাশ পার্সেন্ট না, হান্ড্রেড পার্সেন্ট ভোট কাস্ট হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আলোচনায় সব সমস্যার সমাধান হয়। দলের হাল ধরে রাখার জন্য আমাকে লাঙল দেয়া হয়েছে। ওনার (শেখ হাসিনা) হুকুম অনুযায়ী সেলিম ওসমান চলবে। অন্য কারও কথায় সেলিম ওসমান চলবে না।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সানাউল্লাহ সানু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এমএ রাসেল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত আলম সানিসহ অন্যান্যা ওসমান পরিবারপন্থি নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ওসমান পরিবারপন্থীদের উদ্দেশ্য করেেআরো বলেন, ‘বিএনপির ভাইদের বলতে চাই। আপনারা আমার সাথে কাজ করেছেন। আপনারা ভেবেছেন ২৯ তারিখ আপনারা ক্ষমতায় এসে পড়বেন। সেটা হয়নি। ফিরে আসুন আমাদের সাথে। ঘরের ছেলে ঘরে থাকেন। সুখে শান্তিতে কাজ করেন।’
Discussion about this post