তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে রাজধানীর পান্থপথে লেগুনা চালককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দুই পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর বাগদোবাড়ী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-১১ এর মিডিয়া কর্মকর্তা সনদ বড়ুয়ার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমে তথ্য জানানো হয়।
গ্রেফতাররা হলেন-নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকার মোমিন আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম পলাশ এবং হাবিব উল্লাহর ছেলে সজীব অর্ণব।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি র্যাব জানায়, ২ আগস্ট রাতে ঢাকার পান্থপথে বসুন্ধরা সিটি মার্কেটের সামনের রাস্তায় এক লেগুনাকে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার সময় একটি প্রাইভেটকারের সঙ্গে ধাক্কা লাগায় প্রাইভেটকার আরোহীরা লেগুনাচালক মো. সবুজ খানকে (৩৫) পিটিয়ে হত্যা করে।
নিহতের সহকর্মী মো. জামাল ও মিন্টু জানায়, গ্যাস শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা তিনজন লেগুনাটিকে ঠেলে বসুন্ধরা সিটির সামনে দিয়ে কাওরান বাজারের মাছের আড়ৎ হয়ে গ্যাস পাম্পের দিকে যাচ্ছিল।
পথে বসুন্ধরা সিটির সামনে রাস্তায় একটি প্রাইভেটকারের সঙ্গে সামান্য ধাক্কা লাগে। এতে প্রাইভেটকারের আরোহীরা গাড়ি থেকে নেমে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে লেগুনাচালককে অজ্ঞান করে ফেলে চলে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। প্রাইভেটকারের লোকজন সবাই মদ্যপ অবস্থায় ছিল। এ ঘটনায় তেজগাঁ থানায় একটি মামলা করা হয়। ঘটনার পর গ্রেফতাররা আত্মগোপনে ছিলেন। পরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি কার্যক্রমের জন্য তেজগাঁ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে আরো জানা যায়, গত ২ আগস্ট রাতে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খোদ রাজধানীর সড়কে এমন ঘটনা ঘটলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে সেই যাত্রীরা।
এরপর ব্যাপক খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেই টয়োটা এক্সিও মডেলের প্রাইভেটকারটি (ঢাকা মেট্রো-গ ২০-৫০৯৯) ভাড়া করে আনা হয়েছিল নারায়ণগঞ্জ থেকে। এর যাত্রী ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সহ সভাপতি ও বন্দর উপজেলার সভাপতি সাইফুল ইসলাম পলাশ। তিনিই দেন মারধরের নেতৃত্ব। তার সঙ্গে আরও দুই সহযোগী ছিলেন।
হত্যাকান্ডের পর এই ঘাতক চক্র দিব্বি নিশ্চিন্তে নারায়ণগঞ্জের বব্ধরে দলবল নিয়ে চষে বেড়ায়। দীর্ঘদিন যাবৎ সৈনিক লীগের নাম ব্যবহার করলেও মূলতঃ এরা ওসমান পরিবারের সকল সদস্যদের নাম ছবি ব্যবহার করে পুরো বন্দরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলো। এমন মন্তব্য এলাকার সকলের।
এমন ঘটনার পর পর বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ঢাকায় একজন লেগুনা চালককে পলাশ মারধর করেছে বলে শুনেছি। পরে জেনেছি চালক মারা গেছেন। পলাশ ওই চালককে মারধর করে অন্যায় করেছে। এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তার বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, এটি আমাদেরই সংগঠন। গত বছর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সংগঠনে থেকে কেউ অপরাধ করলে এর দায় ব্যক্তির। দল এর দায় নেবে না।
Discussion about this post