নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে শামীম ওসমানের চির বৈরী অবস্থানে থাকা নাসিক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে মেসেজ পাঠিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান রাখলে সে ডাকে সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন প্রভাবশালী সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
শামীম ওসমান দাবী করেছেন, গত ৯ আগস্ট তিনি ওই মেসেজ দেন। এরপর নারায়ণগঞ্জে দলের সেক্রেটারী ওবায়দুল কাদের ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সমাবেশেও আইভী আসেনি। এখন বিরোধের সময় না। এখন সময় ঐক্যের।
আগামী ৪ঠা নভেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন। বৃহস্পতিবার ( ১৯ অক্টোবর ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সার্কিট হাউসে এ সভার আয়োজন করা হয়। বর্ধিত সভায় শামীম ওসমান ওই মেসেজের বিষয়টি জানান এবং মুঠোফোনে পাঠানো মেসেজের অংশটুকু গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন।
জেলা প্রশাসনের সার্কিট হাউজে আগামী ৪ নভেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে এ বর্ধিত সভায় অতিথির তালিকায় আইভীর নাম থাকলেও তিনি উপস্থিত হননি।
মেসেজে ২০১১ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুইজনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। এছাড়া গত বছর মাসদাইর কবরস্থানে শামীম ওসমানের পরিবারের কবরের উপর শ্মশানের মাটি ফেলার বিষয়টিও তুলে ধরেন শামীম ওসমান।
শামীম ওসমান বলেন, আমার বাবা মা ভাইয়্যার কবরগুলো শ্মশানের মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়ার বিষয়ে, আমি প্রকাশ্যে মিডিয়ায় বলেছি। তুমি হয়ত জানো না সেখানে আমি তোমাকে দায়ী করিনি। আমি আশা করেছিলাম আমার ছোট বোন হিসেবে এ বিষয়ে তুমি তদন্ত কমিটি করে দোষীদের বিচার করবে। যাই হোক যা হওয়ার হয়ে গেছে। মহান আল্লাহ বিচার করবে। আইভী আমি শুধু তোমাকে কয়েকটা কয়েকটি বিষয়ে কিছু কথা বলব। তোমার কিন্তু মনে আছে প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমি আপার নির্দেশমত নির্বাচন করেছি। নির্বাচনের দিন আমার চোখের সামনেই যা ঘটার ঘটেছিল এবং আমার পরামর্শেই সব কিছু হয়েছিল। তখন কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু ছিল। আমাকে বলা হয়েছিল তৈমূর আলম খন্দকার বসে গেলে তোমাকেও সরে যেতে হবে, নির্বাচন ছেড়ে দিতে হবে। আমি কথা রেখেছিলাম। নির্বাচনের পরে একারণেই বলেছিলাম হেরেছি আমি, জিতেছেন শেখ হাসিনা। প্রমাণ হয়েছে সেনাবাহিনী ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। এগুলো লিখেছি ওকে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় নির্বাচন নিয়ে আর বললাম না। তারপর আমি যেটা বলেছি। আইভী তুমি জানো জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার মাতৃতুল্য। তুমিও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ভালবাস। সেটা এখন প্রমাণের সময় এসেছে। সামনে আমাদের কঠিন লড়াই। এটা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। সে কারণে ভাই হিসেবে তোমার কাছে আমার অনুরোধ। নির্বাচন পর্যন্ত বাঁচবো কি না জানি না। করবো কি না তাও জানি না। এখন একমাত্র চিন্তা দেশটাকে বাঁচানোর। তাই আসো আমরা এক সাথে মাঠে নামি। জামায়াত বিএনপি ও তথাকথিত সুশীল গ্রুপ যারা দেশটাকে ধ্বংস করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি। তাহলে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্য ফিরে আসবে। তাহলে আপা খুশী হবে।
সভায় প্রধান অতিথি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। এছাড়া ছিলেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ ২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মো: বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post