“কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কাকঢাকা ভোর থেকে স্বর্ণ পট্টিতে চোরাই ও ডাকাতি করা স্বর্ণালংকার স্বল্পমূল্যে ক্রয় করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছে অসাধু চোরাইকারবারী চক্র । আর এমন স্বর্ণ চোরাইকারবারীদের জন্যই সকল সাধারণ ব্যবসাযীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এই অসাধু ব্যবসায়ীরা সদর থানার ওসির নাম ব্যবহার করে প্রতি মাসে প্রতিটি দোকান থেকে চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে । আর এই চাঁদা বন্টনের কারণে ডিবি পুলিশ লুন্ঠনকৃত স্বর্ণ উদ্ধার করতে এসে হামলার শিকার ও অবরুদ্ধ করার সাহস করে চোরাই কারবারী বিপ্লব পোদ্দার। অসংখ্য অপরাধের ঘটনা স্বর্ণপট্টিতে ঘটলেও কোন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এমন অপরাধীদের খোজও রাখেন না নানান কারণে। গত রমজান মাসেও এই স্বর্ণপট্টি থেকে বিশাল চাঁদাবাজির অর্থ নানাভাবে বন্টন ও করে চোরাইকারবারীদের কেউ কেউ ।”
ফলে পুলিশের উপর হামলা ও অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা বারবারই ঘটানো হচ্ছে ।
শহরের স্বর্ণ ব্যবসার প্রসিদ্ধ স্থান কালিরবাজারের চোরাই স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিপ্লব পোদ্ধারকে গ্রেফতার করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়ে হামলার শিকার হয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি টিমকে। এ সময় সাদা পোষাকে থাকা ডিবি পুলিশকে মারধর করেছে বলে জনিয়েছে পুলিশ ও স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ । প্রায় ঘন্টা খানেক অবরুদ্ধ রাখা হয় ডিবি পুলিশকে।
ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোঃ তরিকুল ইসলাম, সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আনিচুর রহমান অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে স্বর্ণপট্টিতে অবরুদ্ধ থাকা ডিবি পুলিশের সদস্যদের উদ্ধার করেন।
রোববার (৭ মে) রাত আটটায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত ৩ মে শহরের পাইকপাড়া বড় কবরস্থান এলাকায় নিজ ঘর থেকে হাত-পায়ের রগ কাটা অবস্থায় নুরজাহান নামের এক বৃদ্ধার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। বৃদ্ধাকে খুন করে দুর্বৃত্তরা স্বর্ণ ও টাকা পয়সা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনা তদন্তে নামে ডিবি পুলিশ। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে নারয়ণগঞ্জ ক্লাব মাকেটের সামেনর মাটা বিক্রেতা সঞ্জয় নামের একজনকে আটকও করা হয়।
আটককৃত সঞ্জয়ের স্বীকারোক্তি মোতাবেক লুটকরা স্বর্ণ উদ্ধারে গতকাল সন্ধ্যা সাতটায় কালিরবাজারের নওয়াব প্লাজার দোতলায় বিপ্লব পোদ্ধারের স্বর্ণের দোকানে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ।
এদিকে কালীর বাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের দাবী, আমরা কোন চোরকে তো চিনি না । কেউ বিপদে পরে স্বর্ণ বিক্রি করতে আসে । এই স্বর্ণ ক্রয় করে আমার বিপদে পরবো কেন ? আর আজ রোববার সন্ধ্যার পর ডিবি পুলিশ এসেই বিপ্লব পোদ্ধারকে মারধর করতে থাকে । এ ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে সকল ব্যবসায়ীরা।
এর আগেও রমজান মাসে সুভাস পোদ্ধারকে চোরাই স্বর্ণ ক্রয় করার অপরাধে মারধর করে আটকের পর সোয়া তিন ভরি স্বর্ণ এবংসুবাস পোদ্দারকে ছেড়ে দেয়ার কারণে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় পুলিশ । এভাবেই প্রতিনিয়তঃ পুলিশ নানানভাবে হয়রানী করেই যাচ্ছে ।
এমন ঘটনার পর কালীরবাজার স্বর্ণপট্টির কয়েকজন স্বচ্ছ স্বর্ণ ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কাকঢাকা ভোর থেকে স্বর্ণ পট্টিতে চোরাই ও ডাকাতি করা স্বর্ণস্বল্পমূল্যে ক্রয় করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছে । আর এমন স্বর্ণ চোরাইকারবারীদের জন্যই সকল সাধারণ ব্যবসাযীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এই অসাধু ব্যবসায়ীরা সদর থানার ওসির নাম ব্যবহার করে প্রতি মাসে প্রতিটি দোকান থেকে চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে । গত মাসেও এই বিশাল চাঁদাবাজির অর্থ নানাভাবে বন্টন ও করে চোরাইকারবারীদের কেউ কেউ । ফলে পুলিশের উপর হামলা ও অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা বারবারই ঘটানো হচ্ছে ।“
সে সময় ওই মার্কেটের অন্যান্য স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা ডিবি পুলিশকে বাধা প্রদান করে অবরুদ্ধ করে রাখে। ডিবি পুলিশের সদস্যদের মারতেও উদ্যত্ত হয়েছিলেন কেউ কেউ। এক পর্যায়ে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আনিচুর রহমান।
সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে কালিরবাজারে গিয়ে ব্যবসায়ীদের শান্ত করে ডিবি পুলিশের সদস্যদের উদ্ধার করে বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কালিরবাজারের অধিকাংশ স্বর্ণ ব্যবসায়ী চোরাই স্বর্ণ কেনা-বেঁচার সাথে জড়িত। তারা প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই তাদের অবৈধ ব্যবসাকে বৈধ করেছে। এর আগেও কালিরবাজারে অভিযান চালাতে গিয়ে বেশ কয়েকবার চোরাই স্বর্ণ কারবারিদের হাতে একাধিকবার নাজেহাল হয়েছিল পুলিশ। সদর মডেল থানার একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা এসব অবৈধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে মোটা অংকের মাসোহারা নিয়ে থাকে। সে কারনেই তারা ডিবি পুলিশকে আটক করার দু:সাহস দেখিয়েছে।
ঘটনার সত্যতা জানতে সদর মডেল থানার ওসি আনিচুর রহমানকে ফোন দিলেও তিনি রিং হওয়ার সাথে সাথেই কেটে দেন।
Discussion about this post