দীর্ঘদিন যাবৎ শাসক দলের সূনাম বিনষ্ট করে এবং বিভিন্ন নেতাদের নাম ব্যবহারে মাধ্যমে নানা অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে সোনারগাঁ উপজেলা পিরোজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম ও তার বিশাল বাহিনী।
এই বাহিনীর তালিকায় বিশেষ পেশার কিছিু উচ্ছিষ্ঠভোগীও রয়েছে।
মহাপটু এই মাসুম বিভিন্ন নেতাদের ম্যানেজ, আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধু কর্তাদের ম্যানেজ, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে বসে বিশেষ বিশেষ নেতাদের জন্য উপঠৌকন নিয়ে সালামী প্রদানে ম্যানেজ করে সকল ধরণের অপরাধ সাম্রাজ্য চালাচ্ছে। এই মাসুম চেয়ারম্যান ও তার বাহিনী পুরো এলাকাবাসীকে জিম্মি করে সকল ধরণের অপরাধ কর্মকান্ড সকলের নাকের ঢগায় পরিচালনা করলেও সকল আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা যেন কাঠের চশমা পরে থাকে।
ফলে ফুঁসে উঠা এলাকাবাসী এবার মানববন্ধন করে পিরোজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম ও তার বিশাল বাহিনী বিচারের দাবী তুলেছে বলে জানিয়েছে মানববন্ধনে অংশ নেয়া অনেকেই
সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের কান্দারগাঁও, ছয়হিস্যাসহ ৫ টি গ্রামের অন্তত কয়েক হাজার একর কৃষি জমি অবৈধভাবে দখল ও ভরাটের প্রতিবাদে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে জমির মালিক ও এলাকাবাসী।
জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন কৃষি জমি ও বসতবাড়ি হারানোর আশংকায় বুধবার (০৩ মে) বেলা ১২টায় ইউনিয়নের কান্দারগাও এলাকায় ফসলি জমিতে এ মানববন্ধন করে গ্রামবাসী।
মানববন্ধনের ব্যানারে উল্লেখ করা হয়, মেঘনা গ্রুপের ভাড়াটে সন্ত্রাসী ভুমিদস্যু মাসুম চেয়ারম্যান কর্তৃক ফসলী জমি ভরাটের প্রতিবাদে জমির মালিক ও এলাকাবাসীর মানববন্ধন।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভুমিদস্যুতা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম।
ইতোমধ্যেই পিরোজপুর ইউনিয়নের কান্দারগাঁও, ছয়হিস্যা, জৈনপুর, ভবনাথপুর ও ভাটিবন্দর গ্রামের কয়েক হাজার একর কৃষি জমি অবৈধভাবে দখল করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। চেয়ারম্যানের ক্যাডাররা এলাকায় পাহারা বসিয়েছে, প্রতিনিয়ত স্বসস্ত্র মহড়া দিচ্ছে। যে কারনে ভয়ে দিন কাটছে গ্রামবাসীদের। প্রতিবাদের চেষ্টা করলে ভয়ভীতি দেখানোসহ হুমকী ধামকি দিচ্ছে। এমতাবস্থায় যেকোনো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলেও আশংকা করেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে উপস্থিত এক গৃহবধু বলেন, মাসুম চেয়ারম্যান আমাদের জমি দখল করতে চায়। এই চেয়ারম্যানের কারণে আমরা গ্রামবাসী ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। তার কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে কেউ ছেলে হারায়, কেউ হারায় বাবা। আমাদের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই।
আরেক নারী বলেন, আমার ছেলের নাম মোহাম্মদ আলী। ৫ বছর আগে মাসুম চেয়ারম্যান আমাদের জমিতে বালু ফেলতে চায়, আমি বাধা দেয়ায় উনার লোকদের দিয়ে আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছেন। এ হত্যার বিষয়ে মামলা চলমান, মামলার কার্যক্রমেও তিনি নানাভাবে বাধা সৃষ্টি করছেন। আবারও এখন তিনি আমাদের জমি সন্ত্রাসী কায়দায় জোরপূর্বক দখল করতে চায়। জমি দখলে এবার বাধা দিলে আবারও আমাদের ভাই ও স্বজনদের মেরে ফেলার, জবাই করার সহ নানা হুমকি দেন তিনি।
ফসলি জমির আরেক মালিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ১ ইঞ্চি জায়গাও খালি না রাখতে। কিন্তু ৬ বছর ধরে বালু দিয়ে আমাদের ফসলি জমি ভরাট করে ফেলেছে। আমরা চাষবাস করতে পারিনা, দিন চলতে খুব কষ্ট হয় আমাদের। আমরা আমাদের জমি ফেরত চাই, জমি বিক্রি করবো না, আমরা চাষাবাদী করে খাবো।
আরেকজন বলেন, এটাই আমাদের শেষ সম্বল। এটা আমরা বিক্রি করবো না, এখানে চাষাবাদী করে আমাদের জীবন চলে। এখানে বছরে ৩ বার ফসল হয়। সন্ত্রাসী মাসুম চেয়ারম্যান আমাদের অন্য জায়গা ভরাট করে রেখেছে। এখন আবার আমাদের এই জমি ভরাট করতে চাচ্ছে, কিন্তু আমরা জীবন দিবো, তবুও জমি ভরাট করতে দিবো না।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, এলাকায় ভয় ভীতি ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে মাসুম চেয়ারম্যান। জোরপূর্বক জমি দখল করে বালু ভরাট করে একটি কোম্পানিকে দিতে চায়। আমরা স্থানীয়দের নিয়ে বাধা দিব, প্রয়োজনের জীবন দিবো তবুও জমি দিব না। আমাদের কয়েকশত বিঘা জমি না কিনেই বালু দিয়ে ভরাট করে জোরপূর্বক নিয়ে যাচ্ছে আমাদের কিছু বলার নাই। আমরা অসহায়। আমরা যেন এক মগের মুল্লুকে বাস করছি। ৭/৮ গ্রামের মানুষকে তারা মানুষই মনে করছে না। সকল গ্রামবাসীদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভূমিদস্যদের, মানুষের রক্ত চোষাদের আমরা প্রতিহত করবো।
Discussion about this post