সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় নবম দফায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হককে।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তাকে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়।
তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য চারজনকে সমন দেওয়া হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান।
এদের মধ্যে মামলার বাদী কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার ছেলে আব্দুর রহমানের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।
এর পর তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হবে। তার বিরুদ্ধে সর্বশেষ ১৫ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছিল।
এদিন চার্জশিটের ২৩ নম্বর সাক্ষী সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আনিসুর রহমান, ২৪ নম্বর সাক্ষী এএসআই কর্ণকুমার হালদার ও ২৫ নম্বর সাক্ষী এএসআই শেখ ফরিদ সাক্ষী দিয়েছিলেন। এ পর্যন্ত এ মামলায় মোট ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, আজ মামুনুল হকের বিপরীতে মামলার বাদী জান্নাত আরা ঝর্ণার ছেলে আব্দুর রহমান ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের কথা আছে। তাই মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছে। আমরা সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য প্রস্তুত আছি।
২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। একই সঙ্গে ওই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।
উল্লেখ, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
এ সময় ব্যাপক তান্ডব, অঅগ্নিসংযোগ, সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটায় মামুনুল হক পন্থিরা।
ঘটনার পর থেকেই মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করে আসছিলেন। এ সময় পুলিশ তাকে নজরদারিতে রাখে। এরপর গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় মামুনুলকে। পরে এই ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক। আর তার স্বপক্ষের নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় অনুসারীরা দীর্ঘদিন জান্নাত ঝর্ণাকে দ্বিতীয় স্ত্রী দাবী করলেও মামুনুল হকের নানা কেলেংকারীর কারনে বর্তমানে নিশ্চুপ হয়ে পরলেও কাকঢাকা ভোর থেকেই আদালত প্রাংগণের আশেপাশে অবস্থান নেয় অনেকে।
Discussion about this post