আবার এমন সংবাদের পর গণমাধ্যমেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের কথা উল্লেখ করে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে অনেকেই বলেছেন, ‘ভাই আমরা অসহায়, কাম কইরা ভাত খাই । পোলাপাইন লইয়া শান্তিতে থাকতে চাই । আমাগো লাখ লাখ টাকারও দরকার নাই, জেল খাটারও দরকার নাই । ফরদিন মরনের পর একটা ক্রসফায়ারে মরছে। লাভ কার হইছে । আর বজলু জেলে গেছে । ধরা পরার পর ডন বজলু নাকি কোটি টাকা খরচা করছে ক্রসফায়ার থেইক্কা বাচোনের লেইজ্ঞা। আর মন্ত্রী তো আছেই তদ্বিরের লেইজ্ঞা। আর এই ফারদিন মামলা নাকি পুরাপুরি শেষ করতে তিরিশ কোটি টাকা খরচা করছে। এইরকম কতা তো এখন সকলেই কয়। আর এহন জেলে থেইক্কা হাসপাতালে যাইয়া আরামে থাকতে নাইলে কয়েক লাখ টাকাই খরচা হইবো । ডন বজলুর এই টাকা কয় দিন লাগবো কামাইতে ?”
রূপগঞ্জের চনপাড়া বস্তির ডন বজলু অসুস্থতার নাটক করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছেন।
সেখানে বসেই মোবাইল ব্যবহার থেকে শুরু করে স্ত্রী সঙ্গ আর পছন্দের খাবার দাবার সবই পাচ্ছেন এই কুখ্যাত সন্ত্রাসী।
বস্তিতে মাদকের বখরা, পরিবহন, ছিনতাই আর প্লট ব্যবসার ভাগসহ প্রতিমাসে এখনও বস্তিতে পানির বিল বাবদ সাড়ে সাত লাখ টাকা উঠছে তার নামে। সেখানে মোবাইল ফোনের অবাধ ব্যবহারের কারণে যার তার সাথে যোগাযোগ করে জামিন তদবিরসহ চাঁদাবাজি করার সুযোগ পাচ্ছেন এই সন্ত্রাসী।
জানা যায়, চনপাড়া বস্তির কুখ্যাত সন্ত্রাসী বলজুর রহমান বজলু এক সময় ছিটকে পকেটমার থাকলেও ২০০৮ সালের পর স্থানীয় এমপির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে হয়ে ওঠেন বেপরোয়া। অন্তত একডজন হত্যাসহ তার নামে বিভিন্ন সময় অর্ধশতাধিক মামলা হয়। এসব মামলায় একাধিকবার গ্রেপ্তার হলেও প্রভাবশালীদের কলকাঠিতে অল্প সময়ে জামিনে বের হয়ে আসে বজলু।
র্যাবের দায়ের করা ৪টি পৃথক মামলায় এতোদিন জেলহাজতে ছিলেন বজলু। জামিন লাভের কৌশল হিসেবে বর্তমানে অসুস্থতার অভিনয় করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চার তলার ২৬ নাম্বার বেড এ রয়েছেন সন্ত্রাসী বজলু।
সেখানে তার সঙ্গে থাকছেন স্ত্রী সেলিনা। হাসপাতালের বেডে বসেই মোবাইলে জামিনের জন্য তবদির করাচ্ছেন।
সূত্র মতে, ঘনবসতিপূর্ণ এই চনপাড়া বস্তিটি ৯টি এলাকায় বিভক্ত। এই এলাকার শীর্ষ ৫-৬টি মাদক কারবারির প্রধান সমন্বয়ক ও গডফাদার ছিলেন বজলুর রহমান ওরফে বজলু। বস্তি এলাকার মাদকের প্রায় ২০০টি স্পট থেকে কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বজলু এই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। বজলু জেলে থাকায় তার দুই ভাই মিরজু ও কাশেম ব্যবসা দেখাশোনা করছেন। আর ম্যানেজার মামুন প্রতি মাসে সাড়ে ৭ লাখ আদায় করছে বস্তির মানুষের কাছে।
তার মোবাইল নম্বরে মন্ত্রী থেকে শুরু করে আইনজীবীদের সাথে যোগাযোগ করছেন। পাশাপাশি চাঁদাবাজি আর অবৈধ ব্যবসা বাণিজ্যও সামলাচ্ছেন।
Discussion about this post