শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিভাগীয় সমাবেশে নবগঠিত নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক জিকুর নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সমাবেশে মিছিল সহকারে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যাওয়ার সাথে সাথেই পদবঞ্চিত জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ ও মাসুদুর রহমান মাসুদের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা করে । দাড়ালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করাসহ ব্যাপক লাঠিপেটা শুরু করে পদবঞ্চিতরা। পল্টনের বিএনপিনপার্টি অফিসের সামনে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। পদবঞ্চিতদের অতর্কিত হামলা ও লাঠিপেটায় ১৫ জন নেতাকর্মী গুরুতর জখম হয়।
এ ঘটনায় কোন মামলা বা গণমাধ্যমে কোন সংবাদও প্রচার হয় নাই অজ্ঞাত কারণে । যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে ।
ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের পদধারীসহ তাদের সমর্থকদের ওপর পদবঞ্চিতদের একের পর এক হামলা চালাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেলেও রক্তক্ষয়ী এমন ঘটনা ছিলো অনেকের অজানা ।
এখনো পর্যন্ত এই বিষয়টি গোপন রেখেছে বর্তমান জেলা কমিটির সভাপতি নাহিদ হাসান ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের রহমান জিকু।
অপরিদিকে ঢাকায় হামলায় বিষয়টি গোপন রাখলেও বর্তমানে আর হামলাকারী কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা এবং তাদের প্রতিরোধ ও পাল্টা জবাব দেয়ার প্রস্ততি নিচ্ছে বলে নবগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দদের কাছ থেকে জানা যায়। হামলাকারীদের উপর ফের প্রতি করতে নানাভাবে পদধারী ও তাদের সমর্থকরা ভয়ংকর পন্থায় অগ্রসর হচ্ছে বলে ওাবিযোগ উঠেছে ।
ওই সময়ে নেতাকর্মীদের রেখেই দৌড়ে পালিয়ে যায় সভাপতি নাহিদ হাসান ও সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের রহমান জিকুসহ অন্যান্য। পরে গুরুতর আহত তারাবো পৌর ছাত্রদলের আহবায়ক রাজিবসহ নেতাকর্মীদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
পরে নয়াপল্টনে ঘটনাস্থল আহতের দেখতে ছুটে আসেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু। তিনি আহত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং তাদের শান্তনা দিতে দেখা যায়। এবং তিনি বলেন বিষয়টি আমি দেখছি।
এদিকে গত ১ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ছাত্রদলের পদধারীসহ তাদের সমর্থকদের ওপর পদবঞ্চিতরা হামলা চালায়। সেই হামলায় অন্তত আটজন আহত হয়েছিলেন। ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ঘটে এ ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মাসের ২৬ জানুয়ারি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু সমর্থিত ছাত্রদল নেতা নাহিদ হাসান ভূঁইয়াকে সভাপতি ও জুবায়ের রহমান জিকুকে সাধারণ সম্পাদক করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের ৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়।
এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান মনির সমর্থিত ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমান মাসুদ এবং সুলতান মাহমুদ ও তাদের অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হন। দুর্নীতি করে কমিটি দেওয়ার প্রতিবাদে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদল নেতা সুলতান মাহমুদ ও মাসুদুর রহমান মাসুদের নেতৃত্বে পদবঞ্চিতরা বিক্ষোভও করেছেন।
তথ্যসূত্র আরও জানা যায়, গত ১ ফেব্রুয়ারি বুধবার নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় ছাত্রদলের নতুন কমিটির নেতাদের পরিচিতি সভা হওয়ার কথা। সেই লক্ষ্যে রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বাসে উঠতে শুরু করেন পদধারীদের অনুসারীরা।
বেলা ১১টার দিকে পদবঞ্চিত মাসুদুর রহমান মাসুদের নেতৃত্বে পদবঞ্চিত নেতাকর্মী ও তাদের অনুসারীরা লাঠিসোটা নিয়ে পদধারী ও তাদের অনুসারীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় আশপাশের মার্কেট ও হাটবাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
হামলায় আবু হোসেন, নিরা দাস, মোহাম্মদ শুভ, ইমরান হোসেনসহ অন্তত আটজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি পদবঞ্চিত নেতা মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, বিএনপির দুঃসময়ে আমরা হাল ধরেছি। রাজপথে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা অব্যাহত রেখেছি। বিভিন্ন সময়ে আমরা মামলা হামলার শিকার হয়েছি। পুরো মাস মিথ্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে দাঁড়াতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চলছে যারা তাদের পদে আনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যারা আওয়ামী লীগের হাতে নির্যাতিত হয়েছে তাদের পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমাকে তো ছাড় দেয়নি, আমার পুরো পরিবারের সদস্যরা হামলা মামলার শিকার হয়েছে।
সম্পূর্ণ দুর্নীতি করে নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি দেওয়া হয়েছে। এ কমিটি বাতিল করে নতুন করে ত্যাগী ও নির্যাতিতদের দেওয়ার দাবি জানন তিনি। তাহলে যেখানেই তাদেরকে পাওয়া যাবে সেখানেই লাঠিপেটা করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের নতুন সভাপতি নাহিদ হাসান ভূঁইয়া বলেন, বিএনপির একটি বৃহত্তর দল। এই দলে প্রতিযোগিতা থাকবেই স্বাভাবিক। গত ৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে আমাদের মিছিলে হঠাৎ করে পিছন থেকে নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় সুলতান ও মাসুদের নেতৃত্বে।
তাদের হামলায় আমাদের প্রায় ১৫জন ছাত্রদলের নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আমরা বিষয়টি মৌখিকভাবে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকে জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, তারা এর আগেও গত ১ ফেব্রুয়ারি ভুলতা গাউছিয়াতে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। আমরা আর তাদেরকে ছাড় দিবো না। এরপর থেকে তাদেরকে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে ।
Discussion about this post