নগরীর চাষাড়া বাগে জান্নাত মসজিদ সংলগ্ন আঙ্গুরা প্লাজায় ‘সুলতান ভাই কাচ্চি রেস্টুরেন্টে’ প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী স্টাইলে গুলি করে তান্ডব চালিয়ে নারীসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ করে আহত করার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর আসামী আঙ্গুরা প্লাজার মালিক আজহার তালুকদারকে (৬৫) ও তার পুত্র আরিফ তালুকদার মোহান (২৫) কে আদালতে পাঠানো হয় ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে ।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারী) সদর থানা পুলিশের রিমান্ডের আবেদনের পর আগামীকাল মঙ্গলবার শুনানীর দিন ধার্য্য করে আসামী আজহার তালুকদারকে (৬৫) ও তার পুত্র আরিফ তালুকদার মোহান (২৫) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত । এমনটি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় বাগে জান্নাত মসজিদ সংলগ্ন আঙ্গুরা ভিলার নিচতলায় ওই রেস্টুরেন্টে এরাপাতারি গুলি করে পাঁচ জনকে আহত করে আঙ্গুরা প্লাজার মালিক মুক্তিযোদ্ধা আজহার তালুকদার ।
আহতরা হলেন- রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার সফিকুর রহমান কাজল (৫০), কর্মচারী ইউনুস, (৩৫) আউয়াল (৩০) ও জনি (১৬) ও আজাহার তালুকদারের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে আখি (১৭)। এর মধ্যে কাজলের অবস্থা গুরুতর।
তাকে ঢামেক হাসপাতালে সোমবার দুপুরে তলপেটে গুলিবিদ্ধ হওয়ায় দীর্ঘ সময় পর্যবেক্ষণ করে অপারেশনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে ।
মামলায় ‘সুলতান ভাই কাচ্চি রেস্টুরেন্টের মালিক শুক্কুর মিয়া তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, দশ লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় না দেয়ায় মার্কেট মালিক তার ছেলেকে সাথে নিয়ে এসে রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার শফিউর রহমান কাজল ও কর্মচারি জনিকে গুলি করেন।
জানা গেছে, বিদ্যুৎ বিল ও পানির সংযোগকে কেন্দ্র করে রবিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ায় আঙ্গুরা শপিং কমপ্লেক্স ভবনের মালিক আজাহার তালুকদারের অস্ত্রের গুলিতে গুরুতর আহত হন ভাড়াটে রেস্টুরেন্ট ‘সুলতান ভাই কাচ্চি’র ম্যানেজার শফিউর রহমান কাজল ও কর্মচারি জনি। এ সময় এলাপাথরি গুলিতে আরো আহত হন আউয়াল (৩০), আঁখি (১৭) ও কর্মচারী ইউনুস, (৩৫) ।
পরে গুলিবিদ্ধদের গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মার্কেট মালিক আজাহার তালুকদার ও তার ছেলেকে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক করে।
‘সুলতান ভাই কাচ্চি’র মালিক শুক্কুর রাতে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ভবন মালিক আজহার তালুকদার এসে বলেন, পানির বিল বাবদ আপনাকে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। আমরা ১০ লাখ টাকা ঋণ হয়ে গেছি। আমি বললাম ১০ টাকা কেনো দিবো ? আমি তো আপনার কাছ থেকে দোকান নেই নাই ।
আমার বাড়িওয়ালা আপনার ভাই আজিজুল হক। তার কাছ থেকে আমি দোকান ভাড়া নিয়েছি। আর আমি তো পানির বিল প্রতিমাসে দিয়েই যাই। পানিসহ আমার ৮০ হাজার টাকা ভাড়া। পানির জন্য ৫ হাজার, আর ভাড়া ৭৫ হাজার।
এসব নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে আজাহার আমাকে খারাপ ভাষায় গালমন্দ করে। পরে আমিও গালি দেই। এরপর সে বলে দাড়া আসতাছি। একথা বলে সে চলে যায়। পরক্ষনে এসে সে গুলি করে। এতে আমার ম্যানেজারসহ ২জন আহত হয়েছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগহ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, একটি পিস্তল ও একটি শর্টগান জব্দ করা হয়েছে। এগুলোর লাইসেন্স রয়েছে কিনা যাচাই বাছাই চলছে। অধিকতর তদন্তের জন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ৩ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর পর আজহার তালুকদার ও তার ভাই আজিজুল হককে আটক করা হলে সোমবার দুপুরে প্রায় ১৫ ঘন্টা আটক থাকাবস্থা থেকে মুক্তি করে দেয়া হয় আজিজুল হককে । এ ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃস্টি হয়েছে। থানায় কোন কোন চিহ্নিত দালালদের আনাগোনা ও তদ্বির করতে দেখা গেছে। তাদের সন্দেহজনক আচরণ ছিলো দৃস্টি আকর্ষন করার মতো। কোন কোন পুলিশও মন্তব্য করেছেন, “তদ্বিরের যন্ত্রণা ছিলো মারাত্মক।“
Discussion about this post