একজন মাদক কারবারী নিজের অপরাধ সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখতে কত যে কৌশল অবলম্বন করে তার জ্বলন্ত উদহারণ নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন বিটু । যার বাবার নাম প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আবিদ উদ্দিন চৌধুরী হাবলু। যিনি মারা যান ২০২০ সারের ২৮ মে।
এই মুক্তিযোদ্ধা জীবদ্দশায় যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করলেও তার সন্তান সালাউদ্দি;ন বিটু কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পুরো নগরীতে পরিচিতি লাভ করলেও সেই দূর্ণাম যেন মাথায় নিয়েই পরলোকে যেতে হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। আর তার নাম ব্যবহার করেই যত অপরাধে সুযোগ নিচ্ছে এই কুখ্যাত মাদক কারবারী বিটু।
বিটু তার এই মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতে অসাধু পুলিশকে নিয়মিত মাসোয়ার প্রদান করতো প্রায় এক যুগেরও বেশী সময় যাবৎ। পুলিশ ম্যানেজ ছাড়াও নারায়ণগঞ্জের শাসক দলের নেতার ঘনিষ্ট আত্মীয়ের সহায়তায় পুলিশ পিটিয়ে মাদকসহ এই ব্যবসায়ী বীরদর্পে এখনো চষে বেড়াচ্ছে পুরো নগরী। আর মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতে পুরো নগরীতে কমপক্ষে শতাধিক সেলসম্যান নিয়েগে দিয়ে ফেনসিডিল, ইয়াবা, মদ বিয়ারসহ সকল ধরণের মাদক প্রকাশ্যেই চালিয়ে যাচ্ছে সালাউদ্দিন বিটু ।
কুখ্যাত এই মাদক ব্যবসাযী সংসদ সদস্য ও তার পরিবারের নাম ব্যবহার করে পাইকারী মাদকের রমরমা কারবার চালিয়ে যাচ্ছে পুরোদমে।
কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন বিটু শাসক দলের নেতাদের নাম ব্যবহার ছাড়াও বিএনপির এক নেতা এবং তার জন প্রতিনিধির স্ত্রীর সাথে সখ্যতা রেখে তাদের নাম ব্যবহার করে নানা অপরাধ করেই যাচ্ছে নগরীতে। একই সাথে সম্প্রতি জাতীয় জাতীয় পার্টির নেতা হিসেবে নিজেকে দাবী করে যাচ্ছে । জাতীয় পার্টির নেতার হিসেবে মাদক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন বিটু সাবেক ও বর্তমান স্থানীয় কাউন্সিলরের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নেমে প্রচার চালায়।
কাউন্সিলর মুন্নার সাথে গলায় ফুলের মালা পরে এলাকায় মহড়া দেয়ায় পুরো এলাকাবাসী ছাড়াও কাউন্সিলরের পরিবারেও এই কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী বিটুকে নিয়ে ব্যাপক দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়েছে বলে বিশ্বস্থ সূত্র নিশ্চিত করেছে ।
তারপরেও বহাল তবিয়্যতে রয়েছে এই বহুরপী মাদক ব্যবসায়ী বিটু ।
এবার এই কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী বিটু নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত রাজাকার পুত্রের সুস্থতা কামনায় মিলাদের আয়োজন করলে এলাকার অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, “একই অঙ্গে কত রূপ বিটুর। মুক্তিযোদ্ধার পোলায় মিলাদ পড়ায় রাজাকারের পোলার সুস্থতার জন্য ! আশ্চর্য । এতো নেতাদের শেল্টারের পর নারায়ণগঞ্জের বিশাল ক্ষমতাধর রাজাকার পুত্রের আশির্বাদ পেলে এই বিটুকে আর ঠেকাবে কে ? তাই এই মিলাদের আয়োজন । নগরীতে চাউর আছে অসুস্থ এই রাজাকারের পোলা নাকি তিন জন এমপির উপদেষ্টা । তাই মুক্তিযোদ্ধার এই পোলা কু্খ্যাত মাদক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন বিটু এবার ওই রাজাকার পুত্র নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলের সুস্থতা কামনায় ১৮ নং ওয়ার্ড এরাকায় মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করে ।
সোমবার (২৩ জানুয়ারী) দুপুরে নলুয়া মাদ্রাসায় মহানগর জাতীয় পার্টির নেতা দাবী করে সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটুর উদ্যোগে এ দোয়া অনুষ্ঠিত হয় বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় এই তথ্য ।
এতে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ফয়েজ উদ্দিন লাভলু, ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, মহানগর জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান বাদল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন ভাওয়াল, মতিউর রহমান মুক্তি, মো. আনোয়ার হোসেন কাজল, গোগনগর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড মেম্বার ইকবাল প্রধান বাপ্পী, মহানগর জাতীয় পার্টির দপ্তর সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রোমান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাহার, স্থানীয় জুয়েল নুর, জসু, নুর নবী, জনি, মিঠু, তুহিন, তানভীর আহম্মেদ অমি, সানি, তাপস, সোহাগ, সাজিদ, সাঈদ প্রমুখ।
এসময় কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না বলেন, কাজল ভাই এমন একজন মানুষ যাকে আমি কখনো কারো সাথে রাগ করতে দেখি নাই। সবার সাথেই তিনি হাশিমুখে কথা বলেন। আমরা সকলেই তার আশুরোগ মুক্তি কামনা করছি। তিনি যেন অতি সত্ত্বর সুস্থ হয়ে আবার আমাদের সকলের মাঝে ফিরে আসে এই কামনা করি।
পরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য একেএম নাসিম ওসমানের রূহের মাগফেরাত, একেএম সেলিম ওসমান, শামীম ওসমান ও খালেদা হায়দার খান কাজলের সুস্থতা কামনা করে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করা হয়। দোয়া শেষে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে তবারক বিতরণ করা হয়।
এমন ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা করে কয়েকজন মুঠোফোনে নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, “আমরা কি মগের মুল্লকে বসবাস করছি ? কোথায় আছি আমরা ? কি হচ্ছে এই নগরীতে ? এই নগরীর এতো নৈরাজ্য ঠেকাবে কে / কারা ?“
Discussion about this post