“আমাদের হয় আন্দোলন করতে হবে, না হয় মরতে হবে। আমাদের বিকল্প কিছু নেই। আপনারা দেখেছেন পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে আমাদের নেতাকর্মীদের সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।”
এভাবেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. আহমদ আযম খান রবিবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের তাজমহল চাইনিজ রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ঘোষিত যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফা দাবি ও রাষ্ট্র কাঠামোর মেরামতের রূপরেখা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ।
অ্যাড. আহমদ আযম খান বলেছেন, আমাদের নেত্রী কখনো আপোষ করেননি যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়েছেন তাদের সঙ্গে। শুধু নেত্রীই মুক্ত হবে না যদি আমরা নির্দলীয় নির্বাচন করতে না পারি আমাদের নেতা তারেক রহমান নির্বাসনে থাকতে হবে। এবং গণতন্ত্র থাকবে না দেশে। এ জন্য আওয়ামীকে হটাতে হবে। আমরা যদি দেশ এবং দেশের মানুষের জন্য আন্দোলন না করি তাহলে বাঁচানো সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পেছনে এখন অত্যাচারী সরকার আর সামনে কারাগার। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি করতে হলে দেশকে মুক্ত করতে হবে। যদি আমরা আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে না পারি তাহলে আমাদের নেত্রী মুক্ত হবেনা। দেশনেত্রী সারা বাংলাদেশ গণতন্ত্রের প্রতীক। তিনি গৃহ কর্ম থেকে বেড়িয়ে রাজনীতিতে তার স্বামী জিয়াউর রহমানের আদর্শ, গণতন্ত্র সমৃদ্ধ বাস্তবায়নে সারাটা জীবন চেষ্টা করে গেছেন।
তিনি বলেছিলেন, আমরা ১০ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারলেই ২৭ দফা কর্মসূচিতে যেতে পারব। ২৭ দফা আমাদের দেশটাকে মেরামতের জন্য। আমাদের ক্ষমতায় যেতে হবে আর তার জন্য ১০ দফা প্রয়োজন। আজকের ১০ দফার লিফলেট জনগণের কাছে পৌঁছানোর জন্য নারায়ণগঞ্জের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানাচ্ছি। যদি আমরা মানুষের কাছে পৌছাতে পারি তাহলে আমি বিশ্বাস করি আগামী নির্বাচনে আমরা তারেক রহমানের হাতে ক্ষমতা যাবো।
তিনি আরও বলেন, গতকাল ও গত পরশুদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও তথ্য মন্ত্রী হাসান মাহমুদ বিএনপিকে ডাক দিয়েছে নির্বাচনে যাবার জন্য। হাসি পায় তাদের কথা শুনে। আমি ওবায়দুল কাদের ও হাসান মাহমুদকে বলতে চাই আমার তো নির্বাচনে যাবার জন্য গত ১৪টি বছর যাবত লড়াই করে যাচ্ছি। অবশ্যই নির্বাচনে যাবার জন্যে ভোট লুটের জন্য না। যারা ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকে পাঁচ পাঁচটি বছর তাদের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য না। আপনারা আসুন একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।
আহমদ আযম খান বলেছেন, সেদিন সরকার প্রধান বলেছেন যদি জনগণ ভোট না দেয় জনগণের কাছে চলে যাবো। আপনারা জনগণ কে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিন। দেখেন কি হয়। দীর্ঘদিন যাবত অপেক্ষায় রয়েছি। আপনারা জনগণের ভোট তাদের দিতে দিন। তারপর দেখুন কি হয় রেজাল্ট। দিনের ভোট রাতে নয়।
আহমদ আযম খান আরও বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ও তার স্ত্রীর বৈধ সম্পদকে অবৈধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে । এর চেয়ে নির্লজ্জ নির্যাতন ফ্যাসিবাদী আর কি হতে পারে। আমরা এটার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। এ ধরনের ফর্মাইসি আদেশ নির্দেশের। আদালত মানুষের ভরসা স্তর সেই আদালত সরকারের বনে গেছেন। যে দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতিবাজেদর আতঙ্কের জায়গা হওয়া উচিত। সেই দুর্নীতি দমন কমিশন সরকারের পকেটে চলে গিয়ে সরকারের নির্দেশে বিএনপি দমনের কমিশনে রূপান্তরিত হয়েছে।
আযম খান বলেন, ২০১৪ সালে সরকার প্রতারণা করে ক্ষমতায় এসেছে। সেটা কি আমরা দেখিনি? শুধু ১৪ সালই নয় ২০১৮ সালের সরকার সংবিধানের কথা বলে দিনের ভোট রাতে করে দেশে রাজত্ব করে আসছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য-৪ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দরা।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক লুৎফর রহমান খোকা প্রমূখ ।
Discussion about this post