এক সময়ের নারায়ণগঞ্জের শান্তির জনপথ হিসেবে পরিচিত রূপগঞ্জের কাঞ্চন এলাকায় বর্তমানে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। জমির মূল্য বৃদ্ধিসহ রাজধানীর অতি সন্নিকটে হওয়ায় রূপগঞ্জের ব্যবসা ও আবাসন শিল্প মারাত্মক বিকাশ ঘটায় রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে বড় বড় আমলা ও ব্যবসায়ীদের দৃষ্টি এই রূপগঞ্জের উপরে পরেছে ।
যার কারণে ভুমহীন সামান্য কেরানীর পরিবার যাদের নূন আনতে পান্তা ফুরাতো সেই পরিবারের সদস্যরা রাতারাতি আঙ্গুল ফলে কলাগাছ বনে যাওয়ার পর ধরাকে সরাজ্ঞান করে যা খুশি তা করে বেড়াচ্ছে। আর এই কাঁচা টাকার জোড়ে রূপগঞ্জের সাম্রাজ্য যেন ওই ভুমিহীন কেরানী পরিবারের হাতে।
এমন সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সকল ধরণের অপরাধ করেই যাচ্ছে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা। এই চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার, গোলাগুলিসহ ক্রসফায়রের ঘটনারও ঘটে । এমন অপরাদী কর্মকান্ডের বেড়াজাল মুক্তি চায় পুরো রূপগঞ্জবাসী ।
অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রূপগঞ্জে যুবলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে । শুক্রবার রাত ৯টার দিকে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ চলে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী । এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। তাদের কয়েকজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কেন্দুয়া হাট সংলগ্ন এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে যানজট তৈরি হয়।
সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে দুরকম বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। কেউ বলছেন দুই পক্ষই মারামারিতে জড়িয়েছে, আবার কেউ বলছেন এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর হামলা করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবলীগ কর্মী গণমাধ্যমকে বলেছেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কাঞ্চন পৌর যুবলীগের নেতা সফিকুল ইসলাম সফিক ও তারিকুল ইসলাম মোঘলের সঙ্গে কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলি ও তার লোকজনের বিরোধ চলে আসছিল।
শুক্রবার রাতে কেন্দুয়া হাটের কাছে হাসমত আলী নামে একজনের বাড়িতে পিঠার দাওয়াত খেতে যান গোলাম রসুল কলি ও তার অনুসারীরা। পথে তাদের ওপর রামদা, চাপাতি, হকিস্টিকসহ অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন সফিকুল ইসলাম ও তার অনুসারীরা। হামলায় অন্তত ৮০ জন অংশ নেন।
সংঘর্ষে আহত হওয়া কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- মধ্য চরপাড়া এলাকার যুবলীগ নেতা আফজাল হোসেন, ফজলুল হক, মহিলা লীগ নেত্রী সামসুন্নাহার বেগমের ছেলে বাছির উদ্দিন, মোমেন ও আলী বান্দা। তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে আফজাল, বাছির উদ্দিন ও ফজলুল হকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, সংঘর্ষের সময় অন্তত ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করা হয়। এসময় প্রাইভেটকারসহ অন্তত ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে একটি পক্ষ। সংঘর্ষের সময় এশিয়ান হাইওয়েতে আটকে পড়া পরিবহনের শ্রমিক ও যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম সায়েদের সাথে কয়েক দফা ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই ।
কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলি অভিযোগ করে বলেন, রাতের আঁধারে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমার নেতাকর্মীদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা। তারা আমার গাড়িও ভাঙচুর করেছে।
হামলার অভিযোগের বিষয়ে যুবলীগ নেতা সফিকুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এমন ঘটনায় আফজাল নামের এক ব্যক্তি মৃত্যুর খবর চাউর হচ্ছে কাঞ্চন এলাকায়।
তবে আফজাল মৃত্যুর বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়ে এ ঘটনায় সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গ অঞ্চল) আবির হোসেন নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপেডট কে বলেন, দুই গ্রুপে হামরায় গাড়ী ভাংচুর, মটর সাইকেল ভাংচুরসহ ৪/৫ জন আহত হওয়ার খবর ছিলো। আমি ঘটনা স্থলে থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। তবে কেউ মারা যাবার মতো আহত ছিলো না। আমি খবর নিয়ে দেখছি ।
Discussion about this post