স্বাধীনতার ৫১ বছর পূর্তির আয়োজন চলছে সারাদশে । আর এই সময়েও নারায়ণগঞ্জের রাজাকারদের বংশধরদের আস্ফালন দেখতে হচ্ছে । আর এই রাজাকার ও রাজাকারপুত্র ও তাদের বংশধরদের শাসক দলের কোন কোন নেতারা আস্কারা দিচ্ছে তার এই নগরীর সকলেই জানা থাকলেও কেউ মুখ খুলতে সাহস করে না।
সত্তুর (৭০) রাকাত তাহাজ্জুত নামাজ আদায়কারী ভন্ড প্রতারকের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই নানাভাবে খড়গ নেমে আসে । এমন খড়কের ভয়ে কেউ, কোন অবস্থাতেই মুখ খোলেন না।
নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে চাউর আছে, ওই ভয়ংকর ভন্ড প্রতারকের পরিবারের ঘনিষ্ঠজন রাজাকার হিসেবে পরিচিত থাকলেও আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে সেই রাজাকারদের নাম মুখে তুলতে সাহস করে নাই নগরীর কেউ। কাজল নামের আরেক রাজাকারের বাচ্চা নগরীতে কি করে করে বড়োচ্ছে তার হিসাবও কারো অজানা নয়।
নারায়ণগঞ্জের অনেক আওয়ামীলীগ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নারায়ণগঞ্জের রাজাকারের বাচ্চারা কার কার শেল্টারে অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে তা সকলেই জানেন। রাজাকারদের সন্তান ও পরিবারের সদস্যরা অসংখ্য অপরাধ কর্মকান্ড বারবার ঘটিয়ে বিতর্ক সৃস্টি করলেও ক্ষমতাধর চিহ্নিত ভন্ডদের কারণে কোন গণমাধ্যমেও তার প্রকাশ করতে সাহস করে না । অতি সম্প্রতি সামান্য তথ্য তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশ হলেও হামলা মামলার খবর বর্তমানে সকলের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে । আর এমন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাসহ নানা মামলার কারণে হাজারো অপকর্মের পরও নগরীর অধিকাংশরাই প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলছে ।
এমন ভয়ংকর পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এবার রাজাকারের পুত্র চেয়ারম্যান হিসেবে অধিষ্ঠিত হয়ে তার উত্তরসূরীরা পুলিশের উপর হামলা করার সাহস করে । আরো অনেক ভংকর অপকর্ম দেখতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন বন্দর উপজেলার অনেকেই ।অনেকেই আরো বলেছেন, এটি হলো, বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করেছে রাজাকারের নাতি। অর্থাৎ মদ খেয়ে পুলিশ পিটিয়ে রাজাকারের নাতির বুদ্ধিজীবী দিবস পালন !
জানা যায়, একদিকে সারা দেশবাসী ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করে পরম শ্রদ্ধার সাথে আর নারায়ণগঞ্জের বন্দরে মদ খেয়ে পুলিশের ওপর হামলা করেছে একাত্তরের চিহ্নিত রাজাকার রফিক চেয়ারম্যানের নাতি মাহমুদুল হাসান শুভ ।
মদ খেয়ে মাতাল হয়ে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে শাসক দলের ভন্ডদের শেল্টারে থাকা মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনের ছেলে শুভ কে।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে লাঙ্গলবন্দ বাসস্ট্যান্ডে টহল ডিউটিতে থাকা কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের ওপর এ হামলা চালায় চেয়ারম্যানপুত্র ও তার সহযোগীরা।
এ ঘটনায় পুলিশের এএসআই শফিউল্লাহ বাদী হয়ে বন্দর থানায় মামলা করেন।
পরে বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) গভীর রাতে কুড়িপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাহমুদুল হাসান শুভ কে (৩২) গ্রেফতার করে পুলিশ। শুভ একাত্তরের চিহ্নিত রাজাকার রফিক চেয়ারম্যানের নাতি।
জানা গেছে, বুধবার রাত ১২ টার দিকে লাঙ্গলবন্দ বাসস্ট্যান্ডে কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই শফিউল্লাহর নেতৃত্বে দায়িত্ব পালন করছিল পুলিশ। এ সময় তারা রেজিষ্ট্রেশন বিহীন এক মোটর সাইকেল আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে নিজেকে চেয়ারম্যান পুত্র শুভ`র লোক বলে পরিচয় দেয় এবং বিয়ে বাড়িতে যাচ্ছে বললে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পর মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনের ছেলে মাহমুদুল হাসান শুভ`র নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি দল পুলিশের ওপর উপর্যুপরি হামলা চালায়।
এসময় পুলিশের গাড়ি চালকসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। হামলার সময় শুভ ও তার সহযোগীরা মাতাল ছিল বলে জানা গেছে।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর ছিদ্দিক জানান, পুলিশের দায়িত্ব পালনে বাধা এবং পুলিশকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদের ছেলে মাহমুদুল হাসান শুভকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত শুভ`র বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলাসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে ।
এলাকর অনেকেই বলেন এই মাহমুদুল হাসান শুভ ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে পেপার মিলের ভিতরে টর্চার সেল, মাদকের আস্তানা, চুরি ছিনতাইসহ সকল ধরের অপরাধের অভিযোগ রয়েছে । তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস করে না। এমন অভিযোগ ছাড়াও গত ৯ মার্চ দুপুরে কামতাল এলাকায় অবস্থিত এস, এইচ, কে লেভেল ফ্যাক্টরীতে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটায় মাকসুদ হোসেন মাকসুদের পুত্র ও রাজাকারের নাতি শুভ ও তার বাহিনী ।
তৎকালীন সময় এস,এইচ,কে লেভেল ফ্যাক্টরীর ব্যবস্থাপক মো. জাকারিয়া জানান, উপজেলা মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন মাকসুদের শুভ’র নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল মেইনগেইটে নিরাপত্তা কর্মীদের জিম্মি করে একটি কভার্ডভ্যান নিয়ে ফ্যাক্টরীতে প্রবেশ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে গোডাউন থেকে দুই লক্ষাধীক টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এসময় টোটাল ফ্যাশন গার্মেন্টের ব্যবস্থাপক কবিরুল ইসলাম লুণ্ঠিত মালামালসহ কভার্ডভ্যান আটক রাখার চেষ্টা করলেও প্রাণ রক্ষার্থে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তবে লুটপাটের ঘটনার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। তবে এ ঘটনার চিত্র সিসিটিভি ফুটেজ রক্ষিত থাকলেও ওই প্রভাবশালী ভন্ডদের কারণে এমন ঘটনায় কোন মামলা করতে সাহস করে নাই ব্যবসায়ী এই প্রতিষ্ঠান ।
Discussion about this post