প্রতারনা ও জালিয়াতির মাধ্যমে মসজিদের জমি ব্যক্তির নামে নামজারি করে দেয়ায় মসজিদের পক্ষ থেকে সোনারগাঁ ভুমি অফিসের কাননগো ও সার্ভেয়ারসহ ৭ জনের নামে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সানজিদা সারোয়ারের আদালতে মসজিদের পক্ষে পিটিশন মামলা দায়ের করেছেন মো. আবুল কালাম।
গত ৭ ডিসেম্বর তিনি এ মামলাটি দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডি নারায়ণগঞ্জ ব্রাঞ্চকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিররন থেকে জানা যায়, ১৯৭৮ সালে মাইজউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের দড়িকান্দি জামে মসজিদের নামে ১১ শতাংশ জমি দান করেন। এর পর থেকে ওই জমি মসজিদ কর্তৃপক্ষ ভোগ দখল করে আসছিল। পরে সোনাবান নামে জনৈক এক নারী এ জমির মালিক দাবি করে ২০১১ সালে জমিটি নিজের নামে নামজারি করে নেন। এ নামজারিতে ভূয়া তথ্য ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মামলার বাদি আবুল কালাম।
পরবর্তীতে এ নামজারির বিরুদ্ধে মিস কেইস করলে মিস কেইস চলমান থাকা অবস্থায় সোনাবান ওই জমি আ.খলিল নামে অপর ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। মিস কেইস চলমান থাকা অবস্থায়ই খলিল ঘুষের বিনিময়ে কিছুদিন আগে ওই জমি নিজের নামে নামজারি করে নেন।
এ ঘটনায় মসজিদের পক্ষে আবুল কালাম সোনারগাঁ ভূমি অফিস, নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার ঢাকায় প্রতিকার চেয়েও পাননি।
পরে তিনি জমির মালিকানা দাবিদার সোনারবান, মো. আউয়াল হোসেন ও আ. খলিলের নামে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আরো আসামী করা হয় সোনারগাঁ উপজেলা ভূমি অফিসের কাননগো ফারুক আলম, সাবেক সার্ভেয়ার নূরে আলম, ওমেদার ইমরান মিয়া ও সনমান্দি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্রকে।
এ জমির মিস কেইস এর মামলাটির প্রতিবেদন দাখিলের জন্যও সার্ভেয়ার নূরে আলম বাদি আবুল কালামের কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বিবরনীতে বলা হয় ভুমি অফিসের উক্ত কর্মকর্তারা ঘুষের বিনিময়ে অবৈধ প্রক্রিয়ায় সহয়োগিতা করে জাল দলিল সৃজন করে জালিয়াতির মাধ্যমে মসজিদের জমি ব্যক্তি নামে নামজারি করে দিয়েছেন।
জাল দলিলের বিষয়টি সন্দেহ হলে দলিলের নাম্বার অনুয়ায়ি তল্লাশী করে আবুল কালাম জালিয়াতির বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হন। এতে দেখা যায় এ দলিল নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা উপজেলার মাসদাইর মৌজার উল্লেখিত জমির নয়।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী আবুল কালাম বলেন, মসজিদের নামে দানকৃত জমিটি ভূয়া কাগজপত্র দিয়ে ব্যক্তি নামে নামজারি করে নিয়ে গেছেন সোনাবান নামে জনৈক এক নারী। এতে ভূমি অফিসের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী জড়িত তাই তাদের বিরুদ্ধে আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা ভুমি অফিসের কানগো জানান, মামলার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না আর নামজারি তার কাজ নয়। তথ্য যাচাইয়ের বিষয়ে তিনি জানান, কাগজপত্র চেক করা তার কাজ কিন্তু এটা কিভাবে হয়েছে তিনি জানেন না।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ সহকারী কমিশনার (ভুমি) জানান, মিস কেস চালাকালীর সময়ে কোন নামজারি হয়ে থাকলে ভুক্তভোগী আইননত ভাবে আপিল করতে পারে এবং বাদীর আপিল নিতে ভুমি অফিস বাধ্য।
Discussion about this post