নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর চাষাড়া, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচার ও মাদানীনগরে (চার টি স্পটে) বিএনপি’র চেয়ারপারর্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সকল মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মশাল মিছিল করে ককটেল বিস্ফোরণসহ ঘটিয়েছে বিএনপি নেতা কর্মীরা। ওই সময় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে তারা।
তরে এমন ঘটনায় বিএনপির কোন দায় নেই বলে দাবী করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, ‘এই কাজ আওয়ামী লীগ করেছে। তারা এই কাজ করে আমাদের উপর দোষ চাপিয়েছে। ১০ ডিসেম্বর আমাদের সমাবেশকে বানচাল করার জন্য তারা এসব করে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। আমরা এ পর্যন্ত ৮ টি সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে করেছি। এবার ঢাকায় করবো। সমাবেশের আগে আমরা এইসব কাজ করতে যাবো কেনো ? পরিবেশ নষ্ট করার জন্য আওয়ামী লীগ এই কাজগুলো করছে। তারা রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবেলা না করতে পেরে এইসব দূরভিসন্ধি ষড়যন্ত্রমূলক কাজ করে যাচ্ছে। তারা রাজনীতি করতে ব্যর্থ। কারণ তারা রাজনীতির জায়গায় নেই এখন।’
বুধবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক, মাদানী নগর, ফতুল্লার কমর আলী স্কুলের সামনে এবং চাষাড়া এলাকায় এমন ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীরা অর্ধশতাধিক টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে বলে জানায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশ।
আকস্মিক এই মশাল মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আশেপাশের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঢাকামুখী প্রবেশ পথে যান চলাচল কিছুটা সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মহাসড়ক থেকে টায়ার সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয়রা জানান, বিএনপি নেতা নাসিক ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এ মশাল মিছিল বের করে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, সন্ধ্যা ৬টার পর ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক এলাকায়। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে।
এ দিকে ফতুল্লার কমর আলী স্কুলের সামনে বিএনপি সমর্থকেরা ককটেল হামলা ও অগ্নি সংযোগ করেছে বলে জানান ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রিজাউল হক দিপু।
বি বি রোড এলাকার হক প্লাজা ও পপুলারের গলির মাথায় বিএনপি সমর্থকরা ককটেল হামলা ও অগ্নি সংযোগ করেছে বলে জানান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিচুর রহমান।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, বিএনপি নেতাদের বিক্ষিপ্তভাবে এই মশার মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা জানার পর তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি এবং পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি ঘটনাটি কারা ঘটিয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
পুলিশের এমন দাবীর পরও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন বলেছেন, ‘আমাদের কোনো নেতাকর্মী কোনো মশাল মিছিলতো দূরের কথা কোনো রকম মিছিলই করেনি। ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। সরকার দলীয় লোকজন এসব করে আমাদের উপর দায় চাপাতে চাচ্ছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ঢাকার সমাবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। মানুষের কাছে এগুলো এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে। তারা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। এসব মামলা, মিথ্যা বানোয়াট, কাল্পনিক অভিযোগই এর প্রমাণ।’
Discussion about this post