সোমবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলাটি করেছেন দুরন্ত বিপ্লবের ছোট বোন শাশ্বতী বিপ্লব।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কৃষি খামারি দুরন্ত বিপ্লবের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে।
সোমবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলাটি করেছেন বিপ্লবের ছোট বোন শাশ্বতী বিপ্লব।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান গণমাধ্যম কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মামলাটি তদন্ত করবে নৌ-পুলিশ। তাদের কাছে মামলা হস্তান্তর করা হয়েছে।’
দুরন্ত বিপ্লব কয়েক বছর ধরে কেরানীগঞ্জে ‘সোনামাটি অ্যাগ্রো’ নামে একটি কৃষি খামার পরিচালনা করছিলেন। ৭ নভেম্বর বেলা ৩টার দিকে মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি জানান, ঢাকার মোহাম্মদপুরের মায়ের বাসায় তিনি আসছেন।
তবে মায়ের বাসায় আসেননি দুরন্ত বিপ্লব। তার কোনো সন্ধান না পেয়ে ৯ নভেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পরিবার।
এরপর শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসমান অবস্থায় একটি মরদেহ পায় পুলিশ। রাতে মরদেহটি বিপ্লবের বলে নিশ্চিত করেন তার পরিবারের সদস্যরা। রোববার দুপুরে ময়নাতদন্ত হয়।
বিপ্লবের মরদেহের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক নারায়ণগঞ্জগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘বিপ্লবের মাথায় ও বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মাথার পেছনে দিকে বেশি আঘাত। বুকের দুই পাশে আঘাতের দাগ আছে। সাধারণ সমান্তরাল কোনো বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়ে থাকতে পারে। মরদেহে যেসব আঘাত রয়েছে তাতে বোঝা যায়, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এটি ধারণা করছি।’
অন্যদিকে পুলিশ কর্মকর্তারা রোববার জানান, দুরন্ত বিপ্লব যে সময় থেকে নিখোঁজ সেই সন্ধ্যায় বুড়িগঙ্গা নদীর সোয়ারিঘাট এলাকায় নৌকাডুবির একটি ঘটনা ঘটে। এ সময় নদীতে ডুবে যাওয়া ব্যক্তি দুরন্ত বিপ্লব হতে পারেন, তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে আরও সময় লাগবে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান বলেন, ‘সোয়ারিঘাটের দিকে নৌকা থেকে একজনের পড়ে যাওয়ার কথা আমরা শুনেছি। জিঞ্জিরার বিপরীতে নদীতে ঘটনাটি ঘটে। ওনার (বিপ্লব) মোবাইল কললিস্ট ও নেটওয়ার্ক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেখানে ঘটনাটি ঘটে, সেখানেই ওনার অবস্থান ছিল।
‘বুড়িগঙ্গার এই অংশটায় নৌকা দিয়েই পারাপার হতে হয়। সোয়ারিঘাট, পানঘাট, আরও অনেকগুলো ঘাট রয়েছে ওখানে। তবে উনি নৌকা থেকে পড়েই মারা গেছেন, এমনটা আমরা এখনই বলছি না। আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে নিশ্চিতভাবে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে।’
তবে দুরন্ত বিপ্লবের স্বজনরা এ তথ্য নাকচ করে বলছেন, নৌকা থেকে পড়ে বিপ্লবের মৃত্যু হলে দেহে আঘাতের চিহ্ন থাকার কথা নয়।
বিপ্লবের বোনের স্বামী ইমরুল খান বলেন, ‘তার মাথা ও শরীরে আঘাতের যে চিহ্ন তা নৌকাডুবির কারণে হতে পারে না।’
Discussion about this post