নারায়ণগঞ্জে দুই কনটেইনার বিদেশী মদ উদ্ধাদের ঘটনায় মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম ও তার ছেলে মিজানুর রহমান আশিককে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তাদের আগাম জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ ৪ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।
মদ জব্দের ঘটনার ঘটনারপর ছেলে আশিক সহ দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন আজিজুল। এদিকে আদালতের নির্দেশনার পর বৃহস্পতিবার বিকালে গাড়ি বহর নিয়ে আজিজুল ইসলাম ষোলেঘর এলাকায় আসে।
চেয়ারম্যান জামিন পেয়েছেন বলে বিভ্রান্তকর তথ্য ছড়িয়ে দেন নেতাকর্মীরা। বিকালে মোটরসাইকেল বহর আজিজুল এলাকায় তাকে ফুলেল মালা পরিয়ে ও এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছে কর্মীরা।
যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তারা। এতে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা হতে পারে বলে মনে করছে স্থানীয়রা।
ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম জামিনের ব্যপারে বলেন, আমি ও আমার ছেলে উচ্চতর আদালত থেকে জামিন পেয়েছে। আমি জামিন পাই নাই আপনাকে কে বলল। আপনি কাগজ দেখান আমি জামিন পায় নাই। সকাল থেকে ১০০০ জন সাংবাদিকের লগে কথা কইলাম কেউ কইলো না জামিন পায় নাই, আপনি কৈ পাইলেন ৪ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আজিজুল ইসলাম গাড়ি বহর নিয়ে এসেছে বলে খবর পেয়েছি। তখন তার কর্মীরা বাড়িতে জড়ো হয়। তবে কোন রকমের বিশৃঙ্খল কোন ঘটনার খবর পাইনি।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় এলাকা থেকে কনটেইনার ভর্তি আমদানি করা প্রায় ৩৭কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৩৭ হাজার বোতল বিদেশি মদ জব্দ করে র্যাব-১১। যার মূলহোতা ছিলো আজিজুল। সিন্ডিকেটের হোতা চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলামের ছেলে আব্দুল আহাদকে পরদিন রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে দেশত্যাগের সময় গ্রেপ্তার করে র্যাব। তবে এরমধ্যেই বড় ছেলে আশিক সহ দুবাই পালিয়ে যায় আজিজুল।
এ ঘটনায় র্যাব-১১–এর উপপরিচালক শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজুল ইসলাম ও তাঁর দুই ছেলে আশিক- আহাদ সহ ১১ জনকে আসামি করে সোনারগাঁও থানা মামলা কর।
র্যাব জানায়, এ চক্রটি দেশে টিভি ও গাড়ির পার্টস ব্যবসার আড়ালে অবৈধ মাদকদ্রব্য বিপণন নেটওয়ার্ক তৈরি করে। অবৈধ মাদক বিদেশ থেকে আনার পরে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর, রাজধানীর বংশাল ও ওয়ারীতে ওয়্যার হাউসে রাখতেন। পরে সুবিধাজনক সময়ে এসব অবৈধ মাদক বিপণন করতেন। ক্ষেত্রবিশেষে ট্রাক ও কনটেইনার থেকে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করা হতো।মামলায় উল্লেখ করা হয়, দুটি কনটেইনারে ৩৬ হাজার ৮১৬ বোতল বিদেশি মদ ছিল। যার আনুমানিক মূল্য ৪৬ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম ও তার ছেলে মিজানুর রহমান আশিক এলাকায় ফিরে এসে গাড়ি বহর নিয়ে নানাভাবে ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টায় ঘটনায় শ্রীনগরের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাধ করে বলেন এতো বড় মদের চালানের ঘটনায় চেয়ারম্যান ও তার পুত্র দেশ থেকে পালালো এবং আবার ফিরে আসলো কি করে ? এতে করেই প্রতীয়মান হয় ঝিমিয়ে পরেছে চাঞ্চল্যকর বিশাল এই মদের মামলা । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে দেশ ও দলের সুণাম রক্ষায় দিনরাত পরিশ্রম করছেন সেখানে আজিজুল ইসলামের মতো অপরাধীরা দল ও দেশের বারোটা বাজিয়ে আবার লম্ফঝম্পও করছেন ।
কুখ্যাত এই মদের ব্যবসায়ীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্তা করে দলের সুণাম রক্ষা করার দাবি করেছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ।
Discussion about this post