‘এক সাথেই চলে গেলেন তিন গৃহবধু । যারা ছিলেন তিন বোনের মতো । যেন তিন বান্ধবী । যারা জীবদ্দশায় ছিলেন এক অপরের পর সঙ্গি । আর এই সঙ্গিরা এক সঙ্গেই চিতার আগুণে জ্বলছেন । এই কষ্ট কই রাখমু ?
এ কেমন বৃষ্টি আইলো, তিন তিন জনরে একসাথে নিয়া গেল। আমার বিমলা ঘরের মেঝে পরিষ্কার করছিল। বাড়ির কেচিগেটে বিদ্যুতের তার লেগে বিদ্যুতের সংস্পর্শে আসে বিমলা। তার কাঁপুনি দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েছে ভেবে আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী বাসন্তী তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে বাসন্তী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। একইভাবে মনিও বিদ্যুতের সংস্পর্শে এসে তিনজনই মারা যায়। মনির ছোট ছোট বাচ্চাদের কী হবে ?’
স্ত্রী বিমলা ঘোষসহ তিনজনের দাহ শেষে আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন স্বামী রঞ্জিত ঘোষ। এ সময় মৃতদের স্বজনদের আহাজারিতে শ্মশানের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। উপস্থিত সকলের চোখেই চিরো অশ্রু। এমন মৃত্যুতে হতবাক পুরো নগরবাসী ।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় পৌর শ্মশানের পুরোহিত শান্তি রঞ্জন ঘোষাল সকল ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে একসঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করা তিন গৃহবধূর দাহ কার্য সম্পন্ন করেন। মৃতদের স্বজনরা মুখাগ্নির মাধ্যমে দাহ কার্যক্রম শুরু করেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের শ্মশানের সুপারভাইজার রাকেশ লাল বেগী এসব তথ্য জানান।
জানা যায়, দুপুর ১টার দিকে নগরীর দেওভোগ এলাকার মৃত বৃন্দাবন ঘোষের বাড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠে তার তিন পুত্রবধূর মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- রঞ্জিত ঘোষের স্ত্রী বিমলা রাণী ঘোষ (৫৩), নিখিল ঘোষের স্ত্রী বাসন্তী রাণী ঘোষ (৪২) ও দীপক ঘোষের স্ত্রী মনি রাণী ঘোষ (৩৮)। তারা সকলেই সম্পর্কে জা হন।
Discussion about this post