ভিটামিন এ এর অভাবজনিত অপুষ্টি ও শিশুমৃত্যুর হার কমানোর লক্ষ্যে কোভিড ১৯ মহামারীর প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উক্ত ক্যাম্পেইন সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ১২ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ৪ দিন ব্যাপী জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলায়ও পালন করা হবে।
উক্ত দিবসে ৬-১১ মাস বয়সী প্রতিটি শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১লক্ষ আই,ইউ) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী প্রতিটি শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২লক্ষ আই,ইউ) খাওয়ানো হবে। শিশুকে জন্মের ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বুকের দুধ পান করাতে হইবে এবং শিশুর বয়স ৬মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরী সুষম খাবার খাওয়ানো বিষয়ে পুষ্টি বার্তা প্রচার করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা সাংবাদিক অরিয়েন্টেশনে সভাপতির বক্তব্যে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আবুল ফজল মুহাম্মদ মুশিউর রহমান জানান, জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন ১২ জুন থেকে ১৫জুন পর্যন্ত ৪ দিন ব্যাপী নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলায় (নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ব্যতিত) ৬-১১ মাসের ৩৯,৪৯১ জন শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল( ১,০০,০০০ আই ইউ) এবং ১২-৫৯ মাস বয়সের ২,৯৯,৮৬০ জন শিশুকে ১টি লাল রংঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২,০০,০০০ আই ইউ) খাওয়ানো হবে।
অত্র জেলায় (সিটি করপোরেশন ব্যতিত) স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র ১,০৫৬টি, (প্রতি কেন্দ্রে ২ জন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মী) শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন কার্যক্রম বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন, নারায়ণগঞ্জ এর সভাপতিত্বে বিগত ২৯ মে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সন্মেলন কক্ষে জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন এর জেলা এ্যাডভোকেসি ও প্ল্যানিং সভা সম্পন্ন করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে উপজেলায় কর্মরত সকল বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এডভোকেসী সভা এবং উপজেলায় ও এডভোকেসী সভা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগীয় কর্মীদের সমন্বয়ে ওরিয়েন্টশন এবং প্লানিং সভা সম্পন্ন করা হয়েছে। ওয়ার্ড পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবদের ওরিয়েন্টশন সম্পন্ন করা হয়েছে।
দিবসটি পালনের জন্য সর্বস্তরের জনগোষ্ঠিকে অবহিত করার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মাধ্যমে সর্বত্র মাইকে প্রচারনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিবসটি সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করিয়াছেন। জেলা তথ্য বিভাগ, নারায়ণগঞ্জ এর মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য ও মাইকিং এর মাধ্যমে জনগনের মাঝে সচেতনতা মূলক প্রচারনা অব্যাহত আছে।
টিকা কেন্দ্রে সরকারী/বেসরকারী সংস্থার কর্মীদের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য অফিস প্রধানদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। জেলার সকল মসজিদের ইমামদের জুম্মার নামাজের খুতবা পাঠের আগে ও অন্যান্য সময় মসজিদে আগত মুসল্লীদের জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন এর বিষয়ে অবহিত করার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মহোদয় ইতিমদ্যেই পত্র দ্বারা অবহিত করেছেন। এ ছাড়া জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল এবং প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালে বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল নিরাপদ। এতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার তেমন কোন ঝুঁকি নেই। তাই এই কার্যক্রমে সফল বাস্তবায়নের জন্য সন্মানিত সাংবাদিক বৃন্দের সহযোগীতা কামনা করি এবং পূর্বের মতো এবারও সকলের সার্বিক সহযোগীতার মাধ্যমে অত্র জেলায় “জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন” ১২ জুন থেকে ১৫ জুন সুষ্ঠু ও সফল বাস্তবায়ন সম্ভব।
সাংবাদিক অরিয়েন্টেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএইচএফপিও সদর ডা. অনিক বিশ্বাস। সঞ্চালনায় ছিলেন সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার মো: আমিনুল হক, জেলা ইপিআই সুপারিনডেন্ট মো: লুৎফর রহমান।
প্রেজেন্টেশনে ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডা. মোরশেদুল ইসলাম খান। আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বাস্থ্য তত্বাবধায়ক স্বপন কুমার দেবনাথ, সিসিটি মো: আনোয়ার হোসেন, এএসকে শওকত জামান প্রমুখ।
Discussion about this post