নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
স্বাধীনতার পর আবার নারায়ণগঞ্জ থেকে নৌপথে কলকাতার যাত্রী চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে । ৫০ বছরের অধিক সময়ের পর এবার‘এমভি মধুমতি’ কলকাতার উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে যাবে।
অপরদিকে একই দিন একই সময় ভারতের ক্রুজ শিপ ‘মেসার্স আরভি. বেঙ্গল গঙ্গা’ কলকাতা থেকে নারায়ণগঞ্জের মেরি এন্ডারসনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে। এরমধ্য দিয়ে এতদিন মানুষ উড়োজাহাজ, ট্রেনে বা বাসে চড়ে কলকাতায় যাতায়াত করলেও এবারই প্রথমবারের মতো নৌপথে ভ্রমণ পিপাসুরা কলকাতায় যাত্রা করতে পারবেন।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাত ৯ টায় পাগলা ভিআইপি ঘাট মেরিএন্ডারসন থেকে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) এই ক্রুজ শিপ যাত্রা করবে।
বাংলাদেশের ‘এমভি মধুমতি’ এবং কলকাতার ‘মেসার্স আরভি. বেঙ্গল গঙ্গা’ জাহাজ দুটি বরিশাল, বাগেরহাটের মংলা, সুন্দরবন, খুলনার আন্টিহারা- ভারতের হলদিয়া রুট হয়ে কলকাতায় যাবে এবং নারায়ণগঞ্জে আসবে।
এদিকে ক্রুজ শিপ যাত্রার ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে শুক্রবার বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জের পাগলাস্থ ভিআইপি ঘাটে (মেরিএন্ডারসন) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রধান অতিথি এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বিশেষ অতিথি থাকবেন।
বিআইডব্লিউটিসি জানিয়েছে, বাংলাদেশ-ভারত নৌপ্রটোকল চুক্তির আওতায় পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে এ সেবা চালু হচ্ছে। পরীক্ষামূলকভাবে সফল হলে ঢাকা থেকে কলকাতায় নিয়মিতভাবে নৌযান চলবে। রুটটির পরিধি বাড়িয়ে উত্তর ভারতের আসামের গুয়াহাটি নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। এ জন্য পরীক্ষামূলকভাবে সুন্দরবন, বরিশাল, চাঁদপুরের মতো আকর্ষণীয় এলাকার ওপর দিয়ে নৌযানগুলো ঘুরে যাবে।
ঢাকা থেকে ২৯ মার্চ রাত ৯টায় রওনা দিয়ে চাঁদপুর হয়ে ৩০ মার্চ ভোরবেলা বরিশালে যাত্রা বিরতি করবে এমভি মধুমতি। সেখান থেকে বাগেরহাটের মংলায় কিছু সময় থামবে জাহাজটি। বাগেরহাট থেকে সুন্দরবনে ভেতরে যাবে এটি। সুন্দরবন ঘুরে মধুমতি জাহাজটি খুলনার কয়রার আন্টিহারার দিকে যাবে। সেখানে যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হবে। আন্টিহারা হয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় যাবে। হলদিয়া থেকে সরাসরি কলকাতা যাবে মধুমতি। সবশেষ গন্তব্য কলকাতা নৌবন্দরে পৌঁছাবে ৩১ মার্চ রোববার দুপুর ১২টার দিকে। রোববার কলকাতায় থেকে পরদিন ১ এপ্রিল ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবে এমভি মধুমতি।
বিআইডব্লিউটিসি তথ্য মতে, এমভি মধুমতিতে যাত্রী ধারণক্ষমতা প্রায় ছয়শ। এর মধ্যে কেবিনগুলোতে ১৩০ জন যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন।
বিআইডব্লিউটিসি জানিয়েছে, কেবিন ভাড়া ফ্যামিলি স্যুট (দুজন) ১৫০০০ টাকা, প্রথম শ্রেণি (যাত্রীপ্রতি) পাঁচ হাজার টাকা, ডিলাক্স শ্রেণি (দুজন) ১০ হাজার টাকা, ইকোনমি চেয়ার প্রতিটি দুই হাজার টাকা এবং সুলভ ও ডিলাক্স শ্রেণির যাত্রীপ্রতি ভাড়া রাখা হবে দেড় হাজার টাকা। জাহাজে প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, বিকেলের নাশতা, রাতের খাবারের ব্যবস্থা থাকবে। তবে এসব খাবার যাত্রীদের কিনে খেতে হবে। এ ছাড়া ভিসাও যাত্রীদের নিজেদের উদ্যোগে নিতে হবে। ভিসায় কোন পথে যাত্রীরা যাবেন এবং কলকাতা হয়ে ফেরত আসবেন সে বিষয় উল্লেখ ঘোষণা থাকতে হবে।
নৌপথে এমন আনন্দঘন পরিবেশে বাংলাদেশ ও ভারতের শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়েছে ।
Discussion about this post