স্বরণকালে অসংখ্য বার ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার শিমরাইল এলাকায় একদিকে উচ্ছেদ অপরদিকে দখল নাটক মঞ্চায়নের দৃশ্য দেখেছেন নাগরবাসী । বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উচ্ছেদ উচ্ছেদ হাজারো নাটকের পর এবার সড়ক ও জনপদ বিভাগের এমন উচ্ছেদ কার্যক্রম কতদিন সঠিক পথে পরিচালিত হয় তা দেখতে আশাবাদ ব্যক্ত করে অনেকেই বলেছেন, “আবারো কি মাসোহারা বৃদ্ধি করতে এমন নাটক হচ্ছে না তো !”
সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশে সরকারী জায়গা দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে সড়ক ও জনপথ।
রোববার (২০ ডিসেম্বর) সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী নূরে আলমের নেতৃতে বেলা ১১’টা থেকে দুপুর পর্যন্ত মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা সরাতে নামকাওয়াস্তে লোক দেখানো এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু মহাসড়কের উত্তর পাশের ফুটপাত হকারমুক্ত করা হয়নি।
সওজের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ফুটপাত, মার্কেটের সামনে সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধভাবে প্রায় ৮ শতাধিক কাঁচা-পাকা দোকান গড়ে তোলা হয়েছে। দখলকারীরা এসব দোকান গড়ে তুলে পরিবহন ও পথচারীদের চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছিল। তাই অবৈধভাবে গড়ে তোলা এসব দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। অবৈধ দোকান উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে বলে জানান সওজের কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে সকাল থেকে দেখা যায়, সওজের পূর্বের নোটিশের ভিত্তিতে ফুটপাতে হকার ও ব্যবসায়ীরা নিজেদের দোকান সরিয়ে নিতে থাকে। এটা ছিলো সড়কের উপরের চিত্র। পরে সওজের বুলডেজার মেশিনের সাহায্যে দুই তিনটি ভাসমান দোকান ভেঙ্গে দেওয়া হয়। অভিযানের শেষে দুপুর ১টার পর দেখা যায়, সড়ক থেকে পাশের মার্কেটের নিচে নামতে ঢালুতে অবস্থিত অবৈধ স্থাপনা না ভাঙার কারণে পূর্বের ন্যায় ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায়ীক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, প্রতিবারই সওজের উচ্ছেদের দুই-একদিন পর পুণরায় হকাররা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা শুরু করে। কোন কোন সময় সকালে উচ্ছেদ করলে বিকেলে আগের রূপে ফিরে আসে ফুটপাত। তবে এর পেছনে রয়েছে চাঁদাবাজ চক্র। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের নামে ফুটপাতে হকার বসিয়ে দৈনিক ভিত্তিতে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা তোলে এ চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত রিপন ওরফে ‘মুরগী রিপন’ নামে এক চাঁদাবাজ তার নিয়োজিত লোক (জামাল, শাকিল, নাসির ও রুহুল আমিন)’কে দিয়ে পুলিশের নামে চাঁদা উত্তোলন করে আসছে। তাদের পাশাপাশি এ ফুটপাতে এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধির সহযোগী ও স্থানীয় চাঁদাবাজরা এসব দোকানপাট থেকে দৈনিক ২শ টাকা থেকে ৫’শ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। তাছাড়া দোকান প্রতি ১ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নিতো সংঘবদ্ধ এ চাঁদাবাজ চক্র।
ব্যবসায়ীরা জানায়, মুরগী রিপন ও তার সহযোগীরা প্রতিদিন এ টাকা উত্তোলন করতো পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক বিভাগের নাম করে। মুরগী রিপনকে চাঁদা না দিলে সে ও তারা বাহিনীর সদস্যরা ব্যবসায়ীদেরকে শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি উচ্ছেদের হুমকিসহ পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দিতো। ফলে বাধ্য হয়ে তাকে ও তার নিয়োজিত ব্যক্তিকে প্রতিদিন চাঁদা দিতে হয়।
Discussion about this post