গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষনা দিয়েছেন যে আওয়ামী লীগসহ এ দলের অন্যান্য অঙ্গ সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের রাজনীতিতে কোনো রাজাকার কিংবা রাজাকারের বংশধর, উত্তরসরীরাও জায়গা পাবেনা। এবিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।তবুও একজন রাজাকার “বাদশা রাজাকার’র” সন্তান মতিউর রহমান মতি কীভাবে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে রয়েছে তা রহস্যময়।
স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বিডি মেম্বর নামে পরিচিত রাজাকার বাদশা মেম্বর। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাজাকার বাদশা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় আত্মগোপন করে থাকে। মাস কয়েক পর পরিস্থিতি শান্ত হলে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা রেহান’র এক বন্ধুর সহযোগীতায় পুনরায় সিদ্ধিরগঞ্জ শিমুলপাড়া আইলপাড়ায় অবস্থান নেয়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা খবর পেয়ে বাদশা রাজাকারকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। যেই ভাবনা সেই কাজ। মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাদশা রাজাকারকে বাচিঁয়ে দেয় বীর মুক্তিযোদ্ধা রেহান। সহজ সরল, ক্ষমাশীল ও উদার মনের অধিকারী মুক্তিযোদ্ধা রেহান নিজের জিম্মায় নিয়ে ভালো হওয়ার আশ্বাস দিয়ে সেদিন রাজাকার বাদশাকে নতুন জীবন দান করেন। এরপর থেকে বাদশা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রেহান’র মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ধীরে ধীরে রাজাকার বাদশা মেম্বর স্থান করে সিদ্ধিরগঞ্জের আইলপাড়া এলাকায়। এদিকে রাজাকার বাদশার বড় সন্তান জজ মিয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা রেহান’র সাথে আদমজী জুট মিলের নির্বাচনসহ রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়। ফলে রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে। এভাবেই ছেলের রাজনীতির শক্তির চাদরে ঢাঁকা পরে রাজাকার বাদশার নাম। কেটে যায় তার নাম থেকে রাজাকারের চিহ্ন। জনগনের সম্মুকে ফিরে বাদশা মেম্বর নামে। আলোরধারা টোয়েন্টিফোর ডটকমের বিশেষ অনুসন্ধানে স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধার সাথে আলাপ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। রাজাকার বাদশার আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য অডিও রেকর্ডিং ও ভিডিও আকারে সংরক্ষিত আছে।
অপর দিকে বাদশা রাজাকারের ছোট ছেলে মতিউর রহমান মতি তার বড় ভাইয়ের রাজনৈতিক ক্ষমতার বলে সিদ্ধিরগঞ্জ জুড়ে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের হুমকি দামকি, লুটপট ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করতো। পরবর্তীতে জাতীয় পার্টির শফর আলী ভূইয়ার হাত ধরে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে পাঁ রাখে সন্ত্রাসী মতি। জাতীয় পার্টির ক্ষমতা হারানোর পর সিদ্ধিরগঞ্জ সোনামিয়া মার্কেটের বরিশাইল্লা জাফরের সাথে যোগদান করে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে আসে মতি। পরে জাফর ও মতি দুজনে মিলিত হয়ে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে। এলাকাবাসীর উপর চালাতে থাকে নির্যাতন। বাড়তে থাকে অপকর্মের মাত্রা। হঠাৎ র্যাবের ক্রসফায়ারে জাফর নিহত হওয়ার পর সন্ত্রাসী মতি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে গিয়ে আত্মগোপন করে। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর আরো শক্তিশালী রুপে দেশে ফিরে সে। শুরু করে এক নায়কত্ব সন্ত্রাসী রাজত্ব বেড়ে যায় তার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও হিংস্রতা। এতে করে থানায় সন্ত্রাসী মতির বিরুদ্ধে ২৭ টি মামলা করা হয়। যার মধ্যে কয়েকটি মামলায় জামিন প্রাপ্ত আর বাকিগুলো চলমান। এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য সম্প্রতি বাংলাদেশে রাজাকারের নাম বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। আর সেই প্রকাশিত রাজাকারের লিস্টে মতির বাবা রাজাকার বাদশা মেম্বরের নামও রয়েছে। ফলে একজন রাজাকারের সন্তান ও সন্ত্রাসী মতি কীভাবে জনপ্রতিনিধি হিসেবে স্থান পায় সেই প্রশ্ন জনমনে রয়েই যায়।
(dailynarayanganj24.com)
Discussion about this post