সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতাল ৫ শ শয্যায় উন্নীত সহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল হওয়ার কথা থাকলেও পারি নাই। আশা করছি এ দূরাবস্থা শেষ হলে এ কাজটি হবে। এত দ্রুত সময়ের একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন হয়েছে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছার কারণে। এছাড়া মন্ত্রী, সচিব ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরাও কাজ করেছেন।
বুধবার (৬ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জে করোনা হাসপাতালে (খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতাল) কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য স্থাপিত ল্যাব উদ্বোধনী অনুষ্টানে সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন। একই সঙ্গে এখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত সবাই নিষ্ঠার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) জসিম উদ্দিন, জেলা সিভিল সার্জন (সিএস) ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. গৌতম রায়, স্থানীয় ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু, জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির প্রতিনিধি ডা. জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
তিনি বলেন, ল্যাব স্থাপনের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ এবং তার জন্য দোয়া চাই। একইসঙ্গে আমি মন্ত্রী জাহিদ মালিক, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব আসাদুল ইসলাম, ডিজি, নারায়ণগঞ্জের ডিসি, খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক সহ সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিছ সবাই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমাদের ডাক্তারদের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই, আল্লাহ যেন তাদের হায়াত দান করেন তারা যেন আমাদের সেবা করতে পারেন।
সেলিম ওসমান বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের ডাক্তাররা অতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করায় নিজেরাই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মাস্ক ছিল না, পিপিই ছিল না। কিন্তু তার পরেও ডাক্তাররা কাজ করে দিয়েছে। পরে আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া ডাক্তারদের নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে এবং ১০০জন নার্স ও বাদ্রারদের নারায়ণগঞ্জ বার একাডেমী স্কুলে অস্থায়ী আবাসন সহ খাওয়া যাওয়া যাতায়াত সকল কিছুর ব্যবস্থা করে দিয়েছি। রোগীদের জরুরি সেবা দিতে ৮টি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু হয়তো কিছু দিনের মধ্যে স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হবে। তখন আমাদের ডাক্তারদের থাকা খাওয়ার যাতে কোন সমস্যা না হয় সে জন্য আমি জেলা প্রশাসকের কাছে নারায়ণগঞ্জ শহরে নির্মিত ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট ভবনটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। ইতোমধ্যে আমার আহবানে সাড়া দিয়ে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী এগিয়ে এসেছেন। আমি এবং আমার ব্যবসায়ী সহকর্মীরা সকলে মিলে ডাক্তারদের নিরাপত্তায় সকল ব্যবস্থা গ্রহন করবো। কেননা আগে ডাক্তারদের সুস্থ্য রাখতে হবে। ডাক্তাররা সুস্থ্য থাকলেই উনারা নারায়ণগঞ্জের মানুষকে চিকিৎসা দিতে পারবে।
করোনা পরীক্ষার ছবি রাশিদ চৌধুরীর সৌজন্যে
তিনি নমুনা পরীক্ষা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আপাতত এখানে ৯০টি টেস্ট সম্ভব। লোকবল বাড়লে সেটা ১৮০ করা যাবে। কিন্তু এখন সর্দি কাশি হলেই যেন হাসপাতালে না আসে। অহেতুক টেস্ট করাতে হাসপাতালে ভীড় করবেন না। আগে বাইরের ডাক্তারদের কাছে যান তাদের পরামর্শ দেন। ওইসব ডাক্তাররা যদি বলেন যে টেস্ট করানো প্রয়োজন তাহলে সেই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নিয়ে হাসপাতালে আসবেন। তাহলে টেস্ট হবে। একটি টেস্ট করাতে খরচ পড়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা যা সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। কিন্তু যদি অহেতুক মনে করেন আমার টেস্ট করানো প্রয়োজন একটু টেস্ট করি সেই মনোভাব পরিহার করুন। তখন তদবির করলে একটা বিরোধের সৃষ্টি হবে। যদি ডাক্তার বলেন টেস্ট প্রয়োজন তাহলে অবশ্যই হবে নতুবা আমাকে জানাবেন। আর হাসপাতালে যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমি পুলিশ প্রশাসনকে উক্ত হাসপাতালের নিরাপত্তা বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। প্রয়োজনে আমরা সেখানে স্বেচ্ছাসেবীর ব্যবস্থা করে দিবো।
সেলিম ওসমান বলেন, এখন কোথাও করোনা রোগী শনাক্ত হলেই নারায়ণগঞ্জের নাম বলা হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছে। নারায়ণগঞ্জ শুধু এ জেলা নয় পুরো বাংলাদেশের রোজগারের ব্যবস্থা করেছে। নারায়ণগঞ্জে মঙ্গা এলাকার প্রায় ১০ লাখ মানুষ এসে কর্মনির্বাহ করে তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা এনেছে। নারায়ণগঞ্জের ৮০ ভাগ লোক বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে এসে রোজগার করে তাদের পরিবার নিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। এতদিন মূল্যায়ন না হলেও এখন এটির মূল্যায়ন হচ্ছে।
এমপি বলেন, এখন রাজনীতির সময় না এখন সবাই মিলে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। এর মধ্যে কোনো রাজনৈতিক চাল চালানো যাবে না।
গুঞ্জন ও অপপ্রচার রোধে মিডিয়াকে সক্রিয় থাকতে অনুরোধ করেন তিনি।
Discussion about this post