এনএনইউ রিপোর্ট :
গাজীপুরের ধূর্ত সন্ত্রাসী মুচি জসিমের তান্ডবের লোমহর্ষক বর্ণনা করতে গিয়ে এখনো এলাকাবাসী আতঁকে উঠে । মুচি জসিম ক্রসফায়ারে মারা যাওয়ার পর সকলেই যেন স্বস্তি ফিরে পায় আর তার লাশ কোন ভাবেই গাজিপুরে দাফন করতে পারে নাই সকল শ্রেণীর মানুষের প্রতিরোধের মুখে । ঠিক তেমনি নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার ভাড়াটিয়া দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী একাধিক হত্যা, ডাকাতি ও মাদক মামলার পলাতক আসামী হাসান ক্রসফায়ারে গত শনিবার ভোর রাতে মৃত্যু হলে আনন্দের মিছিল করে দেওভোগবাসী ।
কোন ভাবেই এলাকার মাটিতে দাফন করতে দিবে না মর্মে প্রতিরোধ গড়ে তোলে হাসানের লাশের বিরুদ্ধে। দেওভোগ মাদ্রাসার কবরস্থানে পাহাড়া বসিয়ে সন্ত্রাসী হাসানের লাশ দাফনে বাধা দিলে এলাকাবাসীর ক্ষোভের মুখে লাশ ফেলে পালিয়ে যায় নিহত হাসানের মা, ভাই, বোন ও বোনের জামাইসহ স্বজনরা। শেষ পর্যন্ত মাদ্রাসা এলাকার দুলালের ভাই নিমাইয়ের কুটকৌশলে সোমবার ভোর রাতে গোপনে দাফন করে হাসানের লাশ । এই ঘটনায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে শহরের দেওভোগ এলাকায়। সকলেই হাসানের লাশ গ্রামের বাড়ী মুন্সীগঞ্জে ফিরিয়ে নিতে জোড় দাবী তুলে এবং মুচি জসিমের উদহারণ তুলে ধরেন ।
ক্রসফায়ারে নিহত হাসানের ভাই মাসুদ জানায়, ঘটনার সম্পর্কে আমরা কিছুই জানতাম না । সকালে ঘুম থেকে উঠে টিভিতে দেখি হাসান ক্রসফায়ারে মারা গেছে। পরে খোজ নিয়ে জানতে পারি আমার মা ও হাসানের বউ রোখসানাকে আদমজী নিয়ে গেছে। হাসানের এমন জীবন যাপনের কারণে আমরা পরিবারের লোকজন নানাভাবে আতংকের মধ্যে থাকতাম। হাসানের লাশ নিয়েও আমরা বিপাকে আছি।
র্যাব ১১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক আলেপ উদ্দিন ঘটনার পর জানিয়েছিলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের শহীদ নগরস্থ আলামিন নগরের একটি বাড়ীতে অভিযান চালালে আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলিবর্ষন শুরু করে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের গুলি বর্ষনে র্যাবের দুই সদস্য আলম ও আল আমিন আহত হলে র্যাব ও পাল্টা গুলিবর্ষন করার এক পর্যায়ে অভিযান চালিয়ে আহত অবস্থায় হাসানসহ র্যাবের আহত সদস্যদের জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) নিয়ে আনার পর চিকিৎসক হাসানকে মৃত ঘোষনা করেন। এই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অভিযানে হাসানের ব্যবহৃত অস্ত্র, গুলি ও ২ হাজার ৫শ পিছ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়েছে । নিহত হাসানের বিরুদ্ধে বাবু, শিপলু হত্যাসহ আরো কয়েকটি হত্যা, ডাকাতি এবং প্রায় ২০টি মামলা রয়েছে। প্রতিটি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী ছিলো নিহত হাসান।
দেওভোগ এলাকার অনেকেই জানান, দূর্ধর্ষ মেজর ও পারভেজ মারা যাবার পর তাদের রেখে যাওয়া প্রায় ২০/২২টি অস্ত্র ছিলো হাসানের কাছে। হাসান নিজে অস্ত্রভান্ডার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি হাসানের ঘনিস্ট সহযোগি তুহিন ও ডেবিড এই অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে আসছে ্ সর্বশেষ গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের আগে হাসান, ডেবিড, তুহিন সহ আরো কয়েকজন দেওভোগ এলাকার সঞ্জয় নামের এক যুবককে গুরুতর আহত করে । যা এলাকার সকলেই দেখেছে । আর সঞ্জয় পুলিশের সোর্স ছিলো বলে চাউর রয়েছে।
হাসানের অবর্তমানে হাসানের স্ত্রী দেওভোগ পশ্চিম নগরের মুছার বোন রোখসানা নিজেই মাদকের সাম্রাজ্য পরিচালনা করে। মাদক ব্যবসা করে হাসান দুইটি বাড়ীসহ অনেক সম্পদের অধিকারী বলে জানায় অনেকেই। একই সাথে দূর্ধর্ষ হাসানের বিশাল বাহিনী ছাড়াও পুলিশের একটি অসাধু চক্র হাসানকে নানাভাবে সহায়তা করতো বলে চউর রয়েছে পুরো এলাকায়।
Discussion about this post